Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
নর্দমায় পলিথিন থেকে বস্তা, তাতেই বিপত্তি

টানা বৃষ্টিতে ভাসল পথঘাট

নর্দমা উপচে জলমগ্ন হয়েছে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ চত্বর সহ শহরের সাতটি ওয়ার্ড। তাতে নাকাল হলেন রামপুরহাটবাসী। বুধবার দুপুর একটা নাগাদ মুষলধারে বৃষ্টি নামে শান্তিনিকেতনে। তার জেরে শান্তিনিকেতন পোস্ট অফিস মোড় থেকে শুরু করে শ্রীনিকেতন রোডে গিয়ে মেশে যে রাস্তাটি সেটির একাধিক জায়গায় জল জমে যায়।

জলমগ্ন: বৃষ্টিতে ডুবেছে রামপুরহাটের রাস্তা। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।

জলমগ্ন: বৃষ্টিতে ডুবেছে রামপুরহাটের রাস্তা। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট ও বোলপুর শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:১৪
Share: Save:

ভোর থেকেই আকাশ ছিল মেঘলা। সকালে শুরু হয় ঝিরঝিরে বৃষ্টি। বেলা বাড়তেই মুষলধারে। এমনি তার জোর যে, একটু দূরের জিনিসও তখন ঝাপসা! ভরা ফাগুনে পশ্চিমি ঝঞ্ঝার দৌলতে জেলার বোলপুর থেকে রামপুরহাট, নানা প্রান্তে দাঁড়িয়ে গেল জলও। পুরসভার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নিকাশির কী হাল, এই বৃষ্টি দেখিয়ে দিল তাও।

নর্দমা উপচে জলমগ্ন হয়েছে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ চত্বর সহ শহরের সাতটি ওয়ার্ড। তাতে নাকাল হলেন রামপুরহাটবাসী। বুধবার দুপুর একটা নাগাদ মুষলধারে বৃষ্টি নামে শান্তিনিকেতনে। তার জেরে শান্তিনিকেতন পোস্ট অফিস মোড় থেকে শুরু করে শ্রীনিকেতন রোডে গিয়ে মেশে যে রাস্তাটি সেটির একাধিক জায়গায় জল জমে যায়। শ্রীপল্লি ছাত্রাবাস (নন্দ সদন)-এর সামনে অনেকটা জায়গা জুড়ে জল জমে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা এবং পড়ুয়াদের দাবি, সামান্য বৃষ্টিতেই এই অংশে জল জমে। ফলে যাতায়াতে সমস্যা হয়। বর্ষাকালে তো পুরো সময়টাতেই জল জমে থাকে বলে জানান তাঁরা। হাঁটু-ছোঁয়া জল দেখা গেল বোলপুর-শ্রীনিকেতন থেকে সিউড়ি যাওয়ার রাস্তাতেও। এ সবের জন্য নিকাশি ব্যবস্থাকেই দায়ী করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

রামপুরহাটে যেমন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাশি নালা দিয়ে ৬ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ধুলোডাঙা এলাকায় রাস্তায় জমে যায়। তাতে চলাফেরায় সমস্যায় পড়তে হয়। কেন জল জমল এই রাস্তায়? উপপুরপ্রধান সুকান্ত সরকার জানান, চার ও ছয় নম্বর ওয়ার্ডে নর্দমায় পলিথিন, বস্তা, থার্মোকল জমে থাকার ফলে জল উপচে রাস্তায় চলে আসে। রামপুরহাট শহরে পুরানো হাসপাতাল পাড়া, অধুনা সিএমওএইচ অফিসের সামনে বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়। রামপুরহাটের নয় নম্বর ওয়ার্ডের লোটাশ প্রেস গলিতেও জল দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। একই অবস্থা হয় শ্রীফলা রাস্তায় এক নম্বর ওয়ার্ডে। রামপুরহাটের মানুষ জন এ জন্য দুষছেন পুরসভাকে। কেন নর্দমা ঠিক মতো পরিষ্কার করা হয় না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা।

ভোগান্তি হয়েছে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ চত্বরেও। বর্ষাকালের বৃষ্টি হোক কিংবা নর্দমা উপচে জল, মাঝে মাঝে জল জমে যায় এখানে। নোংরা, আর্বজনা ভেসে বেড়ায়। রোগীর পরিজন, হাসপাতালের কর্মীদের তার উপর দিয়েই হাসপাতালে ঢুকতে হয়। সিপিএম কাউন্সিলার সঞ্জীব মল্লিক এর জন্য পরিকল্পনাহীন উন্নয়নকেই দায়ী করেছেন। পুরপ্রধান অশ্বিনী তেওয়ারি শুধু বলেন, ‘‘ডাক্তার পাড়া এলাকার রাস্তায় দীর্ঘ দিন ধরেই জল জমে। জল কমানোর জন্য পাম্প বসানো হয়েছে। অল্প জল ছিল তাই তা চালানো হয়নি।’’

ক্ষোভ তৈরি হয়েছে শ্রীনিকেতনেও। শ্রীনিকেতন-সিউড়ি যাওয়ার রাস্তায় জল পারাপারের জন্য একটি পাইপ রয়েছে। অভিযোগ, সেই পাইপ দিয়ে ঠিক মতো জল পারাপার হয় না। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই জল রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। স্থানীয় ব্যবসায়ী রবিশঙ্কর ভাণ্ডারি বলেন, ‘‘এটি দীর্ঘ দিনের সমস্যা। এক দিন বৃষ্টি হলেই সেই জল তিন-চার দিন ধরে জমা হয়ে পড়ে থাকে।’’ বেশি বৃষ্টি হলে সুরুল নিম্ন বুনিয়াদী প্রাথমিক স্কুল চত্বরও জলে ডুবে যায়। প্রশাসনকে জানিয়েও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। রূপপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রণেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘‘রাস্তাটি নিয়ে বারবার পিডব্লিউডিকে জানিয়েছি। কালভার্ট করে দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছি। এখনও কিছু হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Weather Rain Water Clog Palstic Drain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE