ঝালদার টাউন লাইব্রেরি কোথায় বলতে পারেন? প্রশ্ন শুনে মাথা চুলকে পাস কাটালেন একজন। অদূরের চায়ের দোকানের জটলার মধ্যে থেকে এল উত্তর। মুচকি হেসে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে এক যুবক বললেন, ‘‘আপনি বোধহয় ঝালদায় নতুন। এগিয়ে দেখুন বাম দিকে একটা হানা বাড়ি আছে। ওটাই টাউন লাইব্রেরি।’’
কয়েক দশকের প্রাচীন হলেও লাইব্রেরিটি চেনেন না শহরেরই বহু মানুষ। ভাঙাচোরা ভবন। চারদিকে আবর্জনার স্তূপ। সংস্কারের অভাবে খসে পড়ছে দেওয়ালের চাঙড়। ভবনে ইতিউতি ঘাস গজিয়েছে। দুই বছর ধরে নেই সেখানে কোনো স্থায়ী লাইব্রেরিয়ান নেই। কোনওরকমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে শতাব্দীপ্রাচীন এই ‘জ্ঞান ভাণ্ডার’। এলাকার প্রবীণদের অনেকেই বলেন, ‘‘আমরা আগে লাইব্রেরিতে যেতাম। এখন যে কোনও সময় ভবনটি ভেঙে পড়তে পারে। তাই আর যাই না। লাইব্রেরিটির ভেতরে আলো বাতাস ঢোকে না। নেই শৌচাগার এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা। এমনকি, পাঠকদের বসার জন্য আলাদা কক্ষও নেই। বিদ্যুৎ থাকলে ভেতরে টিমটিম করে আলো জ্বলে। না থাকলে জমাট আঁধারে ঢুবে থাকে লাইব্রেরি।
লাইব্রেরিটি চালান গ্রন্থাগার দফতরের কর্মী তাপস বন্দোপাধ্যায়। তাঁর দাবি ‘‘একজন অস্থায়ী লাইব্রেরিয়ান সপ্তাহে দু’দিন আসেন। বহুবার সমস্যার কথা উচ্চস্তরে জানিয়েছি। লাভ হয়নি।’’ তিনি জানান লাইব্রেরির পাঠকের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৬০০। কিন্তু সে রকম ভাবে কেউ আর আসতে চাইছেন না।