Advertisement
E-Paper

লাইব্রেরি এখন যেন ‘হানাবাড়ি’

কয়েক দশকের প্রাচীন হলেও লাইব্রেরিটি চেনেন না শহরেরই বহু মানুষ। ভাঙাচোরা ভবন।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৯ ০৮:১৫
শুধু বোর্ডে লেখা আছে নাম। না হলে চেনাই দায়। নিজস্ব চিত্র

শুধু বোর্ডে লেখা আছে নাম। না হলে চেনাই দায়। নিজস্ব চিত্র

ঝালদার টাউন লাইব্রেরি কোথায় বলতে পারেন? প্রশ্ন শুনে মাথা চুলকে পাস কাটালেন একজন। অদূরের চায়ের দোকানের জটলার মধ্যে থেকে এল উত্তর। মুচকি হেসে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে এক যুবক বললেন, ‘‘আপনি বোধহয় ঝালদায় নতুন। এগিয়ে দেখুন বাম দিকে একটা হানা বাড়ি আছে। ওটাই টাউন লাইব্রেরি।’’

কয়েক দশকের প্রাচীন হলেও লাইব্রেরিটি চেনেন না শহরেরই বহু মানুষ। ভাঙাচোরা ভবন। চারদিকে আবর্জনার স্তূপ। সংস্কারের অভাবে খসে পড়ছে দেওয়ালের চাঙড়। ভবনে ইতিউতি ঘাস গজিয়েছে। দুই বছর ধরে নেই সেখানে কোনো স্থায়ী লাইব্রেরিয়ান নেই। কোনওরকমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে শতাব্দীপ্রাচীন এই ‘জ্ঞান ভাণ্ডার’। এলাকার প্রবীণদের অনেকেই বলেন, ‘‘আমরা আগে লাইব্রেরিতে যেতাম। এখন যে কোনও সময় ভবনটি ভেঙে পড়তে পারে। তাই আর যাই না। লাইব্রেরিটির ভেতরে আলো বাতাস ঢোকে না। নেই শৌচাগার এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা। এমনকি, পাঠকদের বসার জন্য আলাদা কক্ষও নেই। বিদ্যুৎ থাকলে ভেতরে টিমটিম করে আলো জ্বলে। না থাকলে জমাট আঁধারে ঢুবে থাকে লাইব্রেরি।

লাইব্রেরিটি চালান গ্রন্থাগার দফতরের কর্মী তাপস বন্দোপাধ্যায়। তাঁর দাবি ‘‘একজন অস্থায়ী লাইব্রেরিয়ান সপ্তাহে দু’দিন আসেন। বহুবার সমস্যার কথা উচ্চস্তরে জানিয়েছি। লাভ হয়নি।’’ তিনি জানান লাইব্রেরির পাঠকের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৬০০। কিন্তু সে রকম ভাবে কেউ আর আসতে চাইছেন না।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

অরূপকুমার গোপমণ্ডল, সঞ্জয় মিশ্রের মতো স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন ,‘‘আমরা এখন খুব একটা যাই না লাইব্রেরিতে। ভবনটির যা দূরাবস্থা তাতে যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে।’’ তাঁদের অভিযোগ, ‘‘ প্রশাসনিক উদাসীনতায় ‘জ্ঞান ভান্ডারে’র এখন করুণ অবস্থা।’’ বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, ‘‘ঝালদা ব্লক শহর থেকে মহকুমা শহরে পরিণত হলেও লাইব্রেরির হাল ফেরেনি। কবে ফিরবে কে জানে?’’

ঝালদা পুরসভার পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওই লাইব্রেরিটির বেহাল অবস্থার কথা জানি। ওঁরা আমাদের কাছে এসেছিলেন। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’

ঝালদার বাসিন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, লাইব্রেরিটি কি চারকাল হানা বাড়ি হয়েই থাকবে? জেলার গ্রন্থাগার আধিকারিক মার্শাল টুডুর উত্তর, ‘‘আমি সবেমাত্র জেলায় এসেছি। খোঁজ না নিয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারবো না।’’ ফোন না ধরায় লাইব্রেরির অস্থায়ী লাইব্রেরিয়ান মথুর কুমারের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। মহকুমাশাসক (ঝালদা) সুশান্ত কুমার ভক্ত বলেন, ‘‘ভবনটির যা অবস্থা তাতে সংস্কার করে কিছু হবে না। ওটা নতুন করে গড়ে তুলতে হবে। আমরা একটা জমি চিহ্নিত করেছি। সেখানেই তৈরী করা হবে নতুন ভবন। সেটা যাতে দ্রুত করা যায়। তার ব্যবস্থা হচ্ছে।’’

Jhalda Jhalda Town Library Education
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy