Advertisement
E-Paper

প্রতিবাদই পথ, বলছে কুখুডিহি

কারও পরিবারের সদস্য নেশার কবলে পড়েছেন। কারও আত্মীয়। কারওবা পড়শি নেশা আসক্ত! অশান্তি আর অর্থের অপচয়ে তাতে শেষ হতে বসেছে গোটা পরিবারটি।

দয়াল সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৭ ০২:৪৩
টহল: মঙ্গলবার সকালে বোমাবাজির পরে সিউড়ির কুখুডিহি গ্রামে পুলিশের টহল। —নিজস্ব চিত্র।

টহল: মঙ্গলবার সকালে বোমাবাজির পরে সিউড়ির কুখুডিহি গ্রামে পুলিশের টহল। —নিজস্ব চিত্র।

কারও পরিবারের সদস্য নেশার কবলে পড়েছেন। কারও আত্মীয়। কারওবা পড়শি নেশা আসক্ত! অশান্তি আর অর্থের অপচয়ে তাতে শেষ হতে বসেছে গোটা পরিবারটি।

গ্রামের তরুণ প্রজন্মকে বাঁচাতেই মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন ওঁরা। কিছুটা প্রতিরোধও গড়ে উঠেছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে সিউড়ির কুখুডিহি গ্রামে মাদক কারবারিদের থেকে পাল্টা আক্রমণের পরও কী আন্দোলন চলবে? গ্রামের ইসমতারা বিবি, সাথী খাতুন, চাঁদনি বিবিদের সাফ জবাব, ‘‘আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।’’

সিউড়ি শহরের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা গ্রাম কুখুডিহিতে গত কয়েক বছর ধরে চলছে রমরমিয়ে মাদক কারবার। অভিযোগ গাঁজা ও ব্রাউন সুগারের এই কারবারে জড়িয়ে গ্রামের বেশ কয়েক’টি পরিবার। এলাকায় দুষ্কৃতী হিসাবে পরিচিত ওই কারবারিদের সৌজন্যে সহজে নেশার বস্তু হাতের নাগালে পাওয়ায় তরুণ প্রজন্ম নেশার কবলে পড়ছিল। গ্রামের বাসিন্দাদের কথায়, গত কয়েক বছেরে তিল তিল করে শেষ হচ্ছে এলাকার যুব সম্প্রদায়। শুধু তাই নয়, নেশাসক্তদের নেশার বস্তু যোগাতে অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল হয়ে যাচ্ছিল পরিবারগুলি।

গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এই মুহূর্তে অন্তত ৫০ জন ব্রাউন-সুগারের নেশায় আসক্ত। ১২ জন রিহ্যাবিলিটেশন ক্যাম্পে চিকিৎসাধীন। এই পরিস্থিতিতে রুখে দাঁড়ানোই একমাত্র রাস্তা বলে মনে করেছিলেন গ্রামের কিছু মানুষ। পাশে দাঁড়ায় স্থানীয় ক্লাব ‘আনকমন’ ও পুলিশ। মাদক বিরোধী মিছিলে দিন কয়েক আগেই পা মিলিয়েছিলেন ওঁরা। সকলের একটাই চাওয়া দুষ্কৃতীদের ধরুক পুলিশ। বন্ধ হোক মাদক কারবার। বাধা পেতেই পাল্টা আঘাত হানে দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, মাদক কারবারে মূল পাণ্ডা শেখ মিলন, সঙ্গী শেখ মূর্তেজ, শেখ কারেনের মতো বেশ কিছু দুষ্কৃতী এলাকায় বোমাবাজি, মারধর করে। আক্রমণের লক্ষ্যে প্রতিবাদে সামিল ক্লাব ও মহিলারা। কিন্তু হামলার ভয়ে পিছিয়ে যাওয়া নয়, প্রতিবাদ চলতে থাকবে বলে জানাচ্ছেন ইসমতারা বিবি, চাঁদনি বিবিরা। কারণ, তাঁদের পরিবারের সদস্যরাই যে এখনও রিহ্যাবিলিটেশন ক্যাম্পে চিকিৎসাধীন।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, ‘‘পরিজনদের নিয়ে এত উদ্বেগ সহ্য করছি। যাদের জন্য এমন হাল তাদের শেষ দেখে ছাড়ব।’’ এঁদের পাশে রয়েছেন আনকমনের সম্পাদক মণিরুল ইসলাম। তিনি বলছেন, ‘‘ভয় পেয়ে পিছু হটলে তো ওদের নৌতিক জয় হবে। আমরা তা হতে দেব না। পুলিশ সঙ্গে রয়েছে। আমরা লড়াই চালাব।’’

জেলার পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমার বলছেন, ‘‘জেলার যেখান থেকে মাদক কারবারিদের খবর আমরা পাচ্ছি সেখানেই পুলিশ সক্রিয় হচ্ছে। ওই গ্রামেও সক্রিয় পুলিশ। কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। আমরা সব দিক নজর রাখছি।’’ তবে কে বা কারা মাদক কারবার চালাচ্ছে, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট করে কোনও লিখিত অভিযোগ এখনও পুলিশের কাছে জমা পড়েনি বলে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার।

Protest Women Village
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy