Advertisement
E-Paper

অ্যাকাউন্ট হচ্ছে না, ডাকঘরে তালা

১০০ দিন কাজের প্রকল্পে জবকার্ড থাকলেও ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরে কোনও অ্যাকাউন্ট নেই শ্রমিকদের। ফলে, ১০০ দিন প্রকল্পে তাঁরা কাজ পাচ্ছেন না। বারবার স্থানীয় ডাকঘরে অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে চূড়ান্ত হয়রানি হতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের অ্যাকাউন্ট না খোলায় স্থানীয় একটি শাখা অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিলেন শ্রমিকেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৪ ০০:৪৯

১০০ দিন কাজের প্রকল্পে জবকার্ড থাকলেও ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরে কোনও অ্যাকাউন্ট নেই শ্রমিকদের। ফলে, ১০০ দিন প্রকল্পে তাঁরা কাজ পাচ্ছেন না। বারবার স্থানীয় ডাকঘরে অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে চূড়ান্ত হয়রানি হতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের অ্যাকাউন্ট না খোলায় স্থানীয় একটি শাখা অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিলেন শ্রমিকেরা। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের ব্লক রাইপুরের হরিনারায়ণপুর ধর্মপুর শাখা ডাকঘরে শুক্রবারের ঘটনা।

এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে টানা প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ওই শাখা ডাকঘরের ভিতরে পিওন কাম পোস্টমাস্টারকে আটকে রেখে দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যেরা। সাব-পোস্টমাস্টারের কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়ার পরে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ তালা খুলে দেন শ্রমিকেরা। রাইপুরের মেলেড়া পঞ্চায়েতের ধর্মপুর গ্রামে হরিনারায়ণপুর-ধর্মপুর শাখা ডাকঘরের অবস্থান। ওই পঞ্চায়েতের গোজদা, লাগদা ও ধর্মপুর গ্রাম সংসদ এলাকার প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দা এই ডাকঘরের উপরে নির্ভরশীল। ওই তিনটি গ্রাম সংসদ এলাকায় হাজার খানেক শ্রমিকের জবকার্ড রয়েছে। মেলেড়া পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের রাজকুমার সিংহ বলেন, “এলাকার বহু শ্রমিকের জবকার্ড রয়েছে। কিন্তু, ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরে তাঁদের কোনও অ্যাকাউন্ট নেই। অথচ ১০০ দিন কাজের প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিকদের অ্যাকাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক। সেটা না থাকায় স্থানীয় শ্রমিকদের একটা বড় অংশের অসুবিধা হচ্ছে।”

রাজকুমারবাবুর অভিযোগ, শ্রমিকদের অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যাপারে ওই শাখা ডাকঘর গড়মসি করছে। শ্রমিকেরা সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে ওই ডাকঘরে প্রায় দিনই নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে যাচ্ছেন। আর পোস্টমাস্টার তাঁদের খালি হাতে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। বিক্ষোভে সামিল লাগদা গ্রামের বাসিন্দা ভজহরি মহন্ত, গগন হাঁসদা, কার্তিক হাঁসদা, গোপীনাথ হাঁসদাদের ক্ষোভ, “অ্যাকাউন্ট না থাকায় ১০০ দিন কাজের প্রকল্পে কাজ করতে পারছি না আমরা। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। কাজ না পেলে আমরা খাব কী?”

স্থানীয় মেলেড়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য বৈদ্যনাথ হাঁসদা ও কালীপদ হাঁসদা শ্রমিকদের অভিযোগকে সমর্থন করে বলেছেন, “স্থানীয় পোস্টমাস্টারের কাছে আমরা বহুবার শ্রমিকদের নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু, পোস্টমাস্টার উদ্যোগী না হওয়ায় ক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা এ দিন বাধ্য হয়ে ডাকঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। সাতদিনের মধ্যে শ্রমিকদের নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ডাকঘর কর্তৃপক্ষ।”

হরিনারায়ণপুর-ধর্মপুর শাখা ডাকঘরের ভারপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার সুদিন দাস অবশ্য দাবি করেন, নতুন অ্যাকাউন্টের পাসবই-সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সবই পশ্চিম মেদিনীপুরের বিনপুরের দহিজুড়ি সাব পোস্টঅফিস থেকে আসে। বিষয়টি দহিজুড়ির পোস্টমাস্টারকে অনেকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু, সেখান থেকে পাসবই না আসায় এখানকার শ্রমিকদের অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব হয়নি। এর পাশাপাশি অফিসে কর্মী সঙ্কট রয়েছে। দহিজুড়ির পোস্টমাস্টার বিমল প্রতিহার বলেন, “এখানে চার জন কর্মী থাকার কথা। আছেন মাত্র এক জন। আমাদের অধীনে ১৪টি শাখা অফিস। বিপুল কাজের চাপ সামলাতে এমনিতেই হিমশিম খাচ্ছি। তাই নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার ইচ্ছে থাকলেও কর্মীর অভাবে কাজ করতে পারছি না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কর্মী এলেই নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা হবে।”

কর্মী কবে আসবেন, আপাতত সেই অপেক্ষাতেই থাকতে হবে ভুক্তভোগী শ্রমিকদের।

no account of 100 days workers locked the post office raipur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy