বোলপুর এসডিও অফিসে চলছে বৈঠক। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
অজয় নদের উপরে আরও একটি সেতু বানানোর পরিকল্পনা নিল প্রশাসন। সংস্কার করা হবে পুরনো সেতুরও। রবিবার বোলপুরে রাজ্যের পূর্ত মন্ত্রী শঙ্করলাল চক্রবর্তীর সঙ্গে বৈঠকের পরে এ কথা জানালেন বীরভূমের জেলা সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী। বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিকাশবাবু বলেন, “অজয়ে পুরনোর সেতুর পাশেই নতুনটি বানানো হবে। এ ব্যাপারে মন্ত্রীর সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা হয়েছে। পাশাপাশি দাশকলগ্রাম পর্যন্ত জাতীয় সড়ক টুবি সম্প্রসারণেও উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, পূর্ত দফতরের আওতায় থাকা এ জেলার বেহাল রাস্তাগুলির হালহকিকত যাচাই করতেই এ দিন বোলপুরের মহকুমাশাসকের দফতরের সভাকক্ষে পূর্তমন্ত্রীর সঙ্গে জেলার প্রশাসনিক কর্তা, ইঞ্জিনিয়ার ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক ছিল। বৈঠকেই পরবর্তী পরিকল্পনা স্থির করার কথা ছিল। এমনিতেই এই জেলার উপর দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়কগুলির বিভিন্ন অংশের অবস্থা বেশ খারাপ। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে খানাখন্দে ভরা রাজ্য সড়কগুলির যন্ত্রণাও। ফলে বিভিন্ন এলাকায় নিত্যদিন দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। এ নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিরোধীরা বারবার দুষেছে। তবে, জেলা প্রশাসনের দাবি, ইতিমধ্যেই জেলার বহু রাস্তা সংস্কারের কাজ শেষ। বাকি থাকা রাস্তাগুলি সংস্কারের কাজেও হাত দেওয়া হয়েছে। গত জুলাইয়ে মুখ্যমন্ত্রী সফরের পরে এ দিনের বৈঠক বেশ তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে শঙ্করবাবু বলেন, “জেলার রাস্তাগুলি কী অবস্থায় আছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু রাস্তা ও সেতু সংস্কার হয়েছে। বাকি রাস্তা ও সেতুগুলি বর্ষার পরে দ্রুত সংস্কার করা হবে।”
জানা গিয়েছে, জেলায় বেশ কয়েকটি রাস্তা ও সেতু সংস্কার এবং নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সংস্কার করা হবে লাভপুর থেকে গুনুটিয়া, রামনগর, কোটাসুর, বোলপুর-পালিতপুর, নলহাটি, রাজগ্রাম, মুরারই এবং সিউড়ির পুরন্দরপুর থেকে সাঁইথিয়া রাস্তা সংস্কার করা হবে। এ ছাড়াও সংস্কার করা হবে মল্লারপুর হয়ে রামপুরহাট, নলহাটি যাওয়ার রাজ্য সড়কও। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, গুসকরা থেকে শ্রীনিকেতন পর্যন্ত এনএইচ-টুবি রাস্তাটি সম্প্রসারণ করে সিউড়ির পুরন্দরপুর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান রামপুরহাট, মল্লারপুর, নলহাটি যাওয়ার বাইপাস তৈরি হবে।
এ দিনের বৈঠক নিয়ে অবশ্য অন্য বিতর্কও তৈরি হয়েছে। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে শাসক দলের সাংসদ ও বিধায়কেরা আমন্ত্রণ পেলেও জেলার বিরোধী কোনও বিধায়ককে কাউকে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ। সাঁইথিয়ার বাম বিধায়ক ধীরেন বাগদির বলেন, ‘‘আমার এলাকার বহু রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। মন্ত্রীকে সে সব জানানোর সুযোগই পেলাম না। কারণ, আমাকে প্রশাসন ওই বৈঠকে আমন্ত্রণই জানায়নি।” তাঁর ক্ষোভ, “এলাকার কোনও সরকারি অনুষ্ঠানেই বিরোধী বিধায়কদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। কিছুদিন আগে আমারই বিধানসভা এলাকায় প্রশাসন হুল উত্সব করেছিল। সেখানেও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এ নিয়ে বিধানসভায় বারবার প্রশ্ন তুলেছি। কোনও সন্তোষজনক উত্তর পাইনি।”
এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেন, “বিষয়টি পূর্ত দফতরের। যা বলার ওরাই বলবে।” অন্য দিকে, পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র দেবাশিস সরকার বলেন, “আমি কিছু জানি না। নবান্ন থেকেই সব ঠিক হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy