Advertisement
E-Paper

অনাস্থা এনেও এলেন না সদস্যরা, বাতিল সভা

অনাস্থা ডেকে তৃণমূল প্রধানকে সরানোর দাবিতে বিরোধী বিজেপির তিন সদস্যর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলেন তৃণমূল সদস্যরাই। অথচ নির্ধারিত দিনে উপস্থিত বিডিও-র প্রতিনিধিদের সামনে হাজির থাকলেন না কোনও সদস্যই। ফলে শুক্রবার প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা পাশের সভাই বাতিল হয়ে গেল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৪ ০১:১৪
চেয়ার ফাঁকা। বসে আছেন প্রশাসনের লোকজন। কড়িধ্যায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

চেয়ার ফাঁকা। বসে আছেন প্রশাসনের লোকজন। কড়িধ্যায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

অনাস্থা ডেকে তৃণমূল প্রধানকে সরানোর দাবিতে বিরোধী বিজেপির তিন সদস্যর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলেন তৃণমূল সদস্যরাই। অথচ নির্ধারিত দিনে উপস্থিত বিডিও-র প্রতিনিধিদের সামনে হাজির থাকলেন না কোনও সদস্যই। ফলে শুক্রবার প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা পাশের সভাই বাতিল হয়ে গেল। সিউড়ি ১ ব্লকের কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের ঘটনা। পঞ্চায়েতের সমীকরণে তাই কোনও বদল হল না। বিডিও মুনমুন ঘোষ বলেন, “১৫ সদস্যের ওই পঞ্চায়েতের ৭ সদস্য প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন। কিন্তু এ দিন আমার প্রতিনিধিদের সামনে কেউ উপস্থিত না থাকায় প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছে। আইন মেনে আগামী এক বছর আর অনাস্থা ডাকতে পারবেন না কোনও সদস্যই।”

এলাকার উন্নয়নমূলক কাজে গাফিলতি ও ত্রুটি রয়েছে পঞ্চায়েত প্রধান উজ্জ্বল সিংহের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলে গত ১৮ অগস্ট আনা অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছিলেন নির্বাচিত তৃণমূল সদস্যদের কয়েকজন। রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে সেই অনাস্থা প্রস্তাবে তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন বিজেপি সদস্যরাও। গত ২১ অগস্ট সেই সব সই খতিয়ে দেখার পর অনাস্থা পাশের সভা ডাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিডিও মুনমুন ঘোষ। এলাকা সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকে গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। অনাস্থা প্রস্তাব পেশ সেই কারণেই হয়েছিল। প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা পাশ হয় কি না সেই নিয়ে জল্পানা ছিল তুঙ্গে। যদিও শুক্রবারের পর জল্পনার অবসান হল।

পঞ্চায়েত ও এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই তৃণমূলের আসন সমঝোতা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তৃণমূল বিধায়ক স্বপন ঘোষ ও দলের সিউড়ি ১ ব্লক সভাপতি স্বর্ণময় সিংহের (যিনি অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত) অনুগামীদের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত আসন রফা শান্তিপূর্ণভাবে মিটলেও গোষ্ঠী বিবাদ থেকেই গিয়েছে ওই পঞ্চায়েতে। রাজনীতির কারবারিদের কথায়, ১৫ আসনের মধ্যে তিনটি করে আসন পায় বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস। একটি আসন পেয়েছিল নির্দল এবং বাকি ৫টি আসন পায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মনোনীত প্রার্থীরা। প্রধান নির্বাচনের আগে তৃণমূলের তরফে স্বর্ণময় সিংহের অনুগামী উজ্জ্বল সিংহের নাম প্রস্তাব করা হয়। যেটা মানতে পারেননি স্বপন ঘোষ ঘনিষ্ঠ প্রবীর ধর (যিনি বর্তমানে বিধায়কের প্রতিনিধি)। কংগ্রেসের তরফে অমিয় বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক নির্বাচিত সদস্যের নাম প্রধান হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। সেই সময় ভোটাভুটিতে উজ্জ্বলবাবুর পক্ষে ৭টি ভোট পড়ে (সমীকরণটা ছিল তৃণমূল ২, বিজেপি ৩ এবং ১টি করে নির্দল ও সিপিএম)। উজ্জ্বল সিংহকে ভোট দেওয়ায় মানিক বাগদি নামে সিপিএম সদস্যকে বহিষ্কার করে সিপিএম। অন্য দিকে অমিয়বাবুর পক্ষে ভোট পড়েছিল ৬টি। বিজেপির তিন সদস্য বর্তমানে ক্ষমতাসীন জোটে থাকলেও পদে নেই। প্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে বিজেপির তিন সদস্য সই করেছিলেন। সঙ্গে তৃণমূলের টিকিটে জেতা প্রবীরবাবু-সহ তিন জন এবং কংগ্রেসের ১ এক সদস্যা (যিনি ইতিমধ্যে প্রবীরবাবুদের শিবিরে যোগ দিয়েছেন) ছিলেন।

উজ্জ্বলবাবুর দাবি, “কয়েকজন সদস্যকে ভুল বুঝিয়ে অনাস্থা আনা হয়েছিল। এর পিছনে বিজেপির এক মহিলা সদস্যকে প্রধান করার টোপ ছিল।” তবে অনাস্থা ডেকে সদস্যরা হঠাৎ পিছিয়ে গেলেন কেন? পঞ্চায়েত সূত্রে খবর মূলত দু’টি বিষয় সামনে আসছে। এক: ভুলবোঝাবুঝি কাটিয়ে কিছু সদস্যকে ফের নিজের শিবিরে টানতে সক্ষম হয়েছেন প্রধান। দুই: পরিস্থিতি বুঝেই বিজেপি রণকৌশল বদলেছে। বিজেপির জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডলের সঙ্গে এদিন যোগযোগ না করা গেলেও দলেরই কড়িধ্যা অঞ্চল সম্পাদকের তপু সিংহের দাবি, “দলের নির্দেশ মেনেই শেষ পর্যন্ত বিজেপি সদস্যরা অনাস্থা পাশের সভায় যোগ দিলেন না। আর সেটা অনুধাবন করেই প্রবীর ধর যিনি অনাস্থা পেশের পুরধা ভাগে ছিলেন তিনিও পিছিয়ে যান।” প্রবীরবাবু অবশ্য এ বিষয়ে এ দিন আর মুখ খুলতে রাজি হননি। তবে তৃণমূল প্রধান উজ্জ্বল সিংহের দাবি, “মানুষকে ভুল বুঝিয়ে প্রবীর ধর আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিলেন। সেটা বুঝে যাওয়ার পরই কোনও সদস্যই ওঁর সঙ্গে ছিলেন না।”

no confidence motion suri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy