ফ্রন্টের জোট ভাঙল এক বছরেই! ফরওয়ার্ড ব্লক তৃণমূলের সঙ্গে যোগ দেওয়ায় অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটিতে আড়শার পুয়াড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল হারাল বামফ্রন্ট। বুধবার এই পঞ্চায়েতে অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটি হয়। পঞ্চায়েতের মোট ১২ জন সদস্যের মধ্যে ৭ জন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। প্রস্তাবের বিপক্ষে ৫ জন ভোট দিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
গত পঞ্চায়েত নিবার্চনে এই পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় আসে বামফ্রন্ট। ১২টি আসনের মধ্যে সিপিএম ৫, ফরওয়ার্ড ব্লক ২, তৃণমূল ৩ এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ২টি আসন পায়। ৭টি আসন পেয়ে বোর্ড গড়ে বামফ্রন্ট (সিপিএম-ফব)। প্রধান হন সিপিএমের চম্পা মাহাতো। উপপ্রধান ফরওয়ার্ড ব্লকের রাসমণি মাঝি। এ বছর ৯ অক্টোবর সিপিএমের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে প্রশাসনকে চিঠি দেন পঞ্চায়েতের ৭ জন সদস্য। চিঠিতেই সই ছিল তৃণমূলের ৩, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার ২ এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের ২ সদস্যের। গত সোমবার এই পঞ্চায়েত এলাকারই জুড়ি গ্রামে মাওবাদী নামাঙ্কিত কয়েকটি পোস্টার মেলে। এই গ্রামেরই বাসিন্দা উপপ্রধান রাসমণি মাঝি। পোস্টারে লেখা ছিল, অনাস্থা প্রস্তাব যাঁরা সমর্থন করবেন, তাঁদের শাস্তি দেওয়া হবে। পুলিশ অবশ্য পোস্টারের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চায়নি।
এই পঞ্চায়েত অবস্থানও অযোধ্যা পাহাড়ের খুব কাছেই। বুধবার পঞ্চায়েতে আস্থাভোট ঘিরে এলাকায় তাই কড়া পুলিশি বন্দোবস্ত ছিল। আড়শার বিডিও মাধব বিসাই জানিয়েছেন, অনাস্থার চিঠিতে সাত জন সদস্য স্বাক্ষর করেছিলেন। এ দিন সেই সাত জনই অনাস্থার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। ধ্বনি ভোটেই এই প্রস্তাব পাশ হয়েছে। এলাকার তৃণমূল নেতা চিত্ত মাহাতো বলেন, “সিপিএমের প্রধান অনাস্থায় অপসারিত হয়েছেন। ফরওয়ার্ড ব্লকের দু’জন আমাদের সমর্থন করেছেন।” পুয়াড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য শ্যামল কুমার মাঝি বলেন, “ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার দুই সদস্য আগেই আমাদের সমর্থন করেছেন। এ দিন ফব-র দুই সদস্যও অনাস্থার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।” ভোটাভুটির আগে সিপিএমের প্রধান চম্পাদেবী জানিয়েছিলেন, তিনি জানেন না কেন বাম শরিক হওয়া সত্ত্বেও ফব সদস্যেরা অনাস্থার চিঠিতে সই করেছেন। এ দিন অবশ্য প্রধানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সিপিএমের আড়শা জোনাল কমিটির সম্পাদক গোবিন্দ মাঝি বলেন, “ফব কেন অনাস্থার পক্ষে ভোট দিল, আমাদের বোধগম্য নয়। প্রশাসনের কাছে অনাস্থার চিঠি জমা পড়ার পরেই আমরা ফব নেতৃত্বকে বিষয়টি জানাই। তাঁরা তাঁদের সদস্যদের বোঝাতে পারেননি।” এ ব্যাপারে ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা নেতৃত্বের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। আড়শারই বাসিন্দা, দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মিহির মাঝির মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy