Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

আট মাস পার, সারল না সেতু

গত বছর পুজোর সময় অতিবৃষ্টির জেরে সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ে। তার পর আট মাস পেরিয়ে গিয়েছে। এসে গিয়েছে আরও একটা বর্ষা। কিন্তু সেই ভেঙে পড়া সেতু আজও মেরামত করা হল না। বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের রানিবাঁধ থানার কতরো গ্রামে, রানিবাঁধ-বারিকুল রাস্তায় ভৈরববাঁকি নদীর উপরে সেতুটি ভেঙে পড়ায় যান চলাচল দীর্ঘদিন ধরে ব্যাহত হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। তাঁরা অবিলম্বে ওই সেতু মেরামতির দাবিতে সরব হয়েছেন।

ফের চলে এল বর্ষার মরসুম। এখনও বেহাল পড়ে কতরো সেতু। ছবিটি তুলেছেন দেবব্রত দাস।

ফের চলে এল বর্ষার মরসুম। এখনও বেহাল পড়ে কতরো সেতু। ছবিটি তুলেছেন দেবব্রত দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানিবাঁধ শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৪ ০১:০২
Share: Save:

গত বছর পুজোর সময় অতিবৃষ্টির জেরে সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ে। তার পর আট মাস পেরিয়ে গিয়েছে। এসে গিয়েছে আরও একটা বর্ষা। কিন্তু সেই ভেঙে পড়া সেতু আজও মেরামত করা হল না।

বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের রানিবাঁধ থানার কতরো গ্রামে, রানিবাঁধ-বারিকুল রাস্তায় ভৈরববাঁকি নদীর উপরে সেতুটি ভেঙে পড়ায় যান চলাচল দীর্ঘদিন ধরে ব্যাহত হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। তাঁরা অবিলম্বে ওই সেতু মেরামতির দাবিতে সরব হয়েছেন। রানিবাঁধ-বারিকুল রাস্তার উপরে কতরো গ্রামের কাছে ভৈরববাঁকি নদী। ওই নদীর উপরে প্রায় ৫০ ফুট একটি পাকা সেতু। সেতুটির একাংশ গত বছর পুজোর সময় প্রবল বৃষ্টিতে ধসে পড়ে। সেই ধস এখন বেড়ে গিয়েছে। বর্তমানে সেতুর উপরে প্রায় ১৬ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট চওড়া গর্ত তৈরি হয়েছে। এর ফলে সেতু দিয়ে ছোট গাড়ি চলাচল করলেও বাস চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন রানিবাঁধ ও বারিকুল থানা এলাকার ৫০-৬০টি গ্রামের বাসিন্দারা।

রানিবাঁধ থেকে বারিকুল যাওয়ার সোজা রাস্তা এটাই। কতরো, কলাবনি, ধনকুড়া, চালকীগোড়া, দুবরাজপুর, খেজুরখেন্ন্যা, বারিকুল-সহ আশেপাশের বহু গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন নানা প্রয়োজনে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বৃষ্টির জলের তোড়ে সেতু ভেঙে যায়। কিছুদিন পরে ফের বৃষ্টিতে সেতুর আরও কিছুটা অংশ ধসে পড়ে। প্রথমে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেতুর পাশ দিয়ে অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করে গাড়ি চলাচল শুরু হয়। বাসকর্মীরা জানান, প্রথমদিকে কিছুটা ঝুঁকি নিয়েও ওই রাস্তায় গাড়ি চালানো হচ্ছিল। কিন্তু সেতুর অনেকটা জায়গা জুড়ে ধসের ফলে যে গর্ত হয়েছে তাতে বাস চালানোটা রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। কিন্তু নদীতে জল বেড়ে গেলে সেতুর পাশের অস্থায়ী রাস্তা দিয়ে বাস চলাচলও বন্ধ হয়ে যাবে।

কতরো গ্রামের বাসিন্দা নরেন সর্দার, বারিকুলের রামু সর্দার, ধনকুড়া গ্রামের নয়ন সর্দারের আশঙ্কা, “এ বার বর্ষায় মনে হয় সেতুর বাকি অংশটাও ভেঙে যাবে। তবু সেতু মেরামতের ব্যাপারে কোনও হুঁশ নেই প্রশাসনের।” তাঁদের ক্ষোভ, এতদিন ধরে প্রশাসনকে সেতু সংস্কারের ব্যাপারে জানানো হয়েছে। কিন্তু সেতু মেরামতির ব্যাপারে প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ আজ পর্যন্ত তাঁদের চোখে পড়েনি। বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে রানিবাঁধ থেকে বারিকুল যাতায়াত করা রীতিমতো কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে।

রানিবাঁধ ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুনীল মণ্ডল বলেন, “ওই সেতুটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের জন্য আমরাও প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি। সেতুটি মেরামত করা হলে এলাকার মানুষ ভীষণ ভাবে উপকৃত হবেন।” রানিবাঁধের বিডিও সুমন্ত দেবনাথ অবশ্য বলেন, “ওই সেতুর কিছুটা অংশ ভেঙে পড়ায় যাতায়াতের অসুবিধা হচ্ছে আমি জানি। ভেঙে পড়া সেতুটি মেরামতের জন্য অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় সহায়তা প্রকল্প থেকে এক কোটি ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে ওই কাজের টেন্ডার ডেকেছিল জেলা পরিষদ। কিন্তু প্রথম টেন্ডারে মাত্র একজন অংশ নেওয়ায় নতুন করে টেন্ডার ডাকা হচ্ছে বলে জানি।” তিনি জানান, আপাতত যাতায়াতের জন্য সেতুর পাশে অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “ওই সেতুটি মেরামতের জন্য নির্বাচনের আগেই আমরা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়ায় কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে।” তবে তাঁর আশ্বাস, এলাকার মানুষের অসুবিধা দূর করতে ওই সেতুটি সম্পূর্ণ মেরামতির কাজ খুব শীঘ্রই শুরু করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ranibandh renovation bridge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE