Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

কুড়ুলের কোপ স্ত্রী-র গলায়, স্বামীর যাবজ্জীবন

খুনের ১০ মাসের মধ্যেই খুনির সাজা ঘোষণা করল আদালত। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার অতিরিক্ত দায়রা বিচারক (১) নবনীতা রায় (মুখোপাধ্যায়) স্ত্রী খুনের দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিলেন। একই সঙ্গে খালাস বলে জানিয়ে মুক্তি দিলেন ওই ঘটনায় অভিযুক্ত পরিবারের চার সদস্যকে। সরকার পক্ষের আইনজীবী অরুন চট্টোপাধ্যায় জানান, কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রী রিনা মণ্ডলের (২০) গলা আলাদা করে দিয়েছিল সারেঙ্গা থানার আঙারিয়ার বাসিন্দা বিকাশ মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৪ ০০:৩৬
Share: Save:

খুনের ১০ মাসের মধ্যেই খুনির সাজা ঘোষণা করল আদালত। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার অতিরিক্ত দায়রা বিচারক (১) নবনীতা রায় (মুখোপাধ্যায়) স্ত্রী খুনের দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিলেন। একই সঙ্গে খালাস বলে জানিয়ে মুক্তি দিলেন ওই ঘটনায় অভিযুক্ত পরিবারের চার সদস্যকে।

সরকার পক্ষের আইনজীবী অরুন চট্টোপাধ্যায় জানান, কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রী রিনা মণ্ডলের (২০) গলা আলাদা করে দিয়েছিল সারেঙ্গা থানার আঙারিয়ার বাসিন্দা বিকাশ মণ্ডল। তারপর সপরিবারে অভিযুক্তেরা চম্পট দেয়। পরের দিন সকালে গ্রামবাসীই বিকাশের বাড়ির ভিতর ঢুকে রিনার ছিন্ন ভিন্ন দেহ দেখতে পান। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটে ২০১৩ সালের ২৬ জুলাই।

পরদিন ২৭ জুলাই রিনার দাদা সুশান্ত ঘোষ সারেঙ্গা থানায় বিকাশের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। সেই সঙ্গে বিকাশ-সহ তার বাবা, মা, দাদা ও বৌদির বিরুদ্ধেও বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন। সে দিনই সিমলাপাল থেকে বিকাশকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার হন বাকি অভিযুক্তেরা। বিকাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ কুড়ুলটি উদ্ধার করে। তাতে লেগে থাকা রক্ত ও ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী ওই কুড়ুল দিয়েই রিনার মুণ্ডু কেটে ধড় থেকে আলাদা করা হয়েছিল বলে নিশ্চিত হয় আদালত।

রিনার বাপেরবাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের বিনপুর থানার বাতাবনি গ্রামে। ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিকাশের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। রিনার পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই বাপেরবাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার জন্য রিনাকে চাপ দিত তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ নিয়ে তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারও চালানো হত। রিনা ও বিকাশের এক বছরের একটি মেয়েও রয়েছে।

গত বছর ডিসেম্বর থেকে এই মামলার শুনানি চলছিল বাঁকুড়া জেলা আদালতে। অভিযুক্তরা সকলেই বিচারাধীন বন্দি হিসেবে ছিলেন। বিকাশের পরিবারের সঙ্গে জেলে ছিলেন তাঁর মেয়েও। বিকাশের বৌদিই জেলে তার দেখাশোনা করছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ এই ঘটনার চার্জশিট জমা দেয় নভেম্বর মাসে। মোট ২৫ জনের সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিচারক বিকাশকে দোষী সাব্যস্ত করেন।

অরুনবাবু বলেন, “বধূ হত্যার দায়ে বিকাশকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১০ মাস জেলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। অন্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, এই রায়ে তাঁরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। আরও কড়া সাজা চেয়ে তাঁরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nabanita roy murder bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE