যে কাজ করার কথা পরিবহণ দফতরের, পুরসভা নিজেই সে কাজে হাত দিয়ে বিতর্কে জড়াল।
টোটোর নাম নথিভুক্ত করা শুরু করল রামপুরহাট পুরসভা। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুকান্ত সরকার জানান, সমস্ত টোটোর নাম নথিভুক্ত হয়ে যাওয়ার পর পুরসভা নম্বর দেবে। বিরোধীদের দাবি, উচ্চ আদালতের নির্দেশকে আমান্য করে পুরসভা টোটোর নাম নথিভুক্ত করছে। পরিবহণ দফতরের জেলা সহ আধিকারিক মানস হালদার বলেন, ‘‘এ কাজ শুধুমাত্র পরিবহণ দফতরের এক্তিয়ারের মধ্যেই পড়ে।’’
টোটোর নাম নথিভুক্ত করার জন্য সোমবার সকালে পুরসভা থেকে রামপুরহাট শহরে মাইকে ঘোষণা করা হয়। সেই মতো পুরসভায় টোটো চালকেরা ফর্ম তুলেতে শুরু করেন। ১০০ টাকা দিয়ে টোটো চালকের ফর্ম তুলে অনেকে জমাও দিয়ে দেন। পুরসভা সূত্রে খবর, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ২০০-অধিক ফর্ম জমা পড়েছে এ দিন। প্রশ্ন উঠছে, হঠাৎ করে পুরসভা এমন উদ্যোগ নিল কেন? পুরসভার চেয়ারম্যান অশ্বিনী তিওয়ারী বলেন, ‘‘শহরে কতগুলো টোটো চলছে সেটা দেখা হচ্ছে। আর নতুন করে কেউ যেন টোটো শহরে নামাতে না পারে সেটা নিয়ে ভাবনা চিন্তা চলছে। নাম নথিভুক্ত হয়ে গেলে আমরা পরিবহণ দফতরে পাঠিয়ে দেব।’’
পুরসভা সূত্রে খবর, টোটোর নাম নথিভুক্ত করার ব্যাপারে মহকুমাশাসকের দফতর থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছিল। কেন না, দিন দিন শহরে অবৈধ টোটোর সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন রাস্তা দিনের বেশিরভাগ সময় যানজটে জেরবার থাকে। সেই কারণেই পুরসভা মাইকে ঘোষণা করে নাম নথিভুক্ত করার কাজ শুরু করেছে। মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাশ বলেন, ‘‘আমিই পুরসভাকে দায়িত্ব দিয়েছি শহরে কতগুলো টোটো চলছে, তা জানার জন্য। সেটা দেখে ট্রাফিক সিস্টেম ঠিক করে দুটো সিফটে টোটো চালাবো।’’
ঠিক কত সংখ্যক অবৈধ টোটো চলছে রামপুরহাট শহরে?
রামপুরহাট পরিবহণ দফতরের সহ আধিকারিক মানস হালদারের কথায়, ‘‘একমাত্র পরিবহণ দফতর বৈধ টোটোর কাগজ পত্র দেখে লাইসেন্স দেয়। সেক্ষেত্র রামপুরহাট শহরে যে সব টোটো চলছে সেগুলো কোনটাই বৈধ নয়।’’ তাহলে পরিবহণ দফতর এতদিন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি কেন? উত্তরে মানসবাবুর ব্যাখ্যা, বন্ধ করে দিলে অনেক চালক বেকার হয়ে যাবে। তবে একটা রাশ টানতে চাই। গলায় একই সুর রামপুরহাট পুরসভার চেয়ারম্যানেরও।
তবে, দুটো সিফটে টোটো চালাতে চায় না টোটো চালকেরা। ইউনিয়নের দাবি, সিফট করলে আমরা আন্দোলন করব। টোটো ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনুপ দাস জানান, তাঁদের ইউনিয়নে ৫৮০টি টোটো আছে। কিন্তু শহরের রাস্তায় প্রায় ৭০০ টোটো চলে। সিফট চায় ট্রাফিক পুলিশও। শহরের ট্রাফিক ওসি রঞ্জিত বাউরি বলেন, ‘‘যানজট কমানোর জন্য সিফট দরকার।’’ কিন্তু নাম নথিভুক্ত করার বিষয়টি আইন মেনে হচ্ছে না জেনে কী বলছেন টোটো চালকেরা?
টোটো চালক মিলন দাস ও চয়ন সেখরা বলছেন, ‘‘প্রশাসন দুটো সিফট না করে আমাদের টোটো স্ট্যাণ্ড করে দিলে শহরে একসঙ্গে সব টোটো চলবে না। কিন্তু সবার আগে অবৈধ টোটো বন্ধ করতে হবে। সেটা হবে জেনেই ফর্ম তুলেছি।’’ ফর্ম তুলেও কেউ কেউ দুষছেন পুরসভাকেই। তাঁদেরই একাংশের দাবি, ফর্ম তো তুলেছি। এখন আবার এমন শুনছি, পরিবহণ দফতর বলেছে পুরসভার কোনও এক্তিয়ার নেই নাম নথিভুক্ত করার। জানি না কী হবে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy