আদালতের নির্দেশের পর অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে ৫ মাস। প্রশাসনের দরজায় দরজায় বিস্তর ঘোরাঘুরি করে সরকারি সাহায্য পাননি লাভপুরের সুবলপুরের সাজাপ্রাপ্তের পরিবার।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে সুবলপুরে মোড়লের নির্দেশে এক আদিবাসী তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। মোড়ল-সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। ওই বছরই ২০ সেপ্টেম্বর ১৩ জনকেই দোষী সাব্যস্তের পর সকলকে ২০ বছর জেল ও ৫০০০ টাকা করে জরিমানা ধার্য করেন বোলপুর আদালতের অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক। কিন্তু একই রায়ে সাজাপ্রাপ্তের পরিবারের প্রতি দায়বদ্ধতা পালনের নির্দেশ প্রশাসন আজও কার্যকর করেনি বলে অভিযোগ। সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী দিলীপ ঘোষ বলেন, “সাজাপ্রাপ্তদের অধিকাংশেরই শিশু সন্তান এবং বৃদ্ধ বাবা-মা রয়েছে। সাজাপ্রাপ্তরা নিজেদের পরিবারের একমাত্র রুটি-রুজি উর্পাজনকারী। এই কথা শুনে বিচারক ৪৭ পাতার ওই রায়ের শেষাংশে উল্লেখ করেছেন, যদি এই দাবি সত্যি হয় তা হলে, তাঁদের বিষয়টি দেখা মানবাধিকারের মধ্যেই পড়ে। বিচারক আরও বলেছেন, জেলাশাসক জেলাপ্রশাসনের সর্বময় কর্তা। তাই সাজাপ্রাপ্তদের অবর্তমানে তাঁদের পরিবারের একজনও যাতে দুর্ভোগে না পড়েন, তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি দায়বদ্ধ আশা করা যায়। কিন্তু রায় ঘোষণার পর ৫ মাস কেটে গিয়েছে। এখনও সাহায্য পাননি সাজাপ্রাপ্তদের কোনও পরিবার।”
এমনকী বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাও হয়েছিল বলে অভিযোগ। সম্প্রতি এক সেচ্ছাসেবী সংস্থার গুঁতোয় টনক নড়ে। ওই সংস্থার পক্ষে অমৃতা ঘোষ তথ্য জানার আইনে জেলা তথ্য আধিকারিকের কাছে জানতে চান, জেলাশাসক সাজাপ্রাপ্তদের কী সাহায্য করেছেন? কিন্তু নির্ধারিত ৩০ দিনের মধ্যে কোনও জবাব না পাওয়ায় ফের তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাচ্ছে আবেদন করেন। এর পরই নড়ে চড়ে বসে প্রশাসন। তাঁর দাবি, “চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি তড়িঘড়ি চিঠি দিয়ে জানানো হয়, ওই রায়ের প্রতিলিপি গত ২ জানুয়ারি পাওয়া গিয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের রায়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ওই একই দিনে বোলপুর মহকুমাশাসককেও রায় অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয় জেলাশাসকের দফতর থেকে।” জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী বলেন, “এ বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy