Advertisement
E-Paper

পুকুরে বিশেষ খনিজ, চুরিতে লাগাম প্রশাসনের

খয়রাশোলে পুকুর সংস্কারের সময়েই মিলেছিল কালচে লাল পাথর মিশ্রিত মাটি। সেই পাথর যন্ত্র দিয়ে কেটে নিয়ে বিক্রি করতে শুরু করেছিলেন এলাকারই কিছু বাসিন্দা। এমন খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৪ ০০:৩৫
এখানেই মিলেছে খোঁজ।—নিজস্ব চিত্র।

এখানেই মিলেছে খোঁজ।—নিজস্ব চিত্র।

খয়রাশোলে পুকুর সংস্কারের সময়েই মিলেছিল কালচে লাল পাথর মিশ্রিত মাটি। সেই পাথর যন্ত্র দিয়ে কেটে নিয়ে বিক্রি করতে শুরু করেছিলেন এলাকারই কিছু বাসিন্দা। এমন খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। সম্প্রতি জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক নীলকমল বিশ্বাস বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। মঙ্গলবারই খয়রাশোলের রসাকালী মন্দির সংলগ্ন ওই পুকুরে মাটি খনন এবং তা নিয়ে যাওয়া বন্ধ করেছে ব্লক প্রশাসন। প্রাথমিক ভাবে প্রশাসনের কর্তাদের পর্যবেক্ষণ ওই বিশেষ পাথর আদতে ‘ফায়ার ক্লে’ নামক একটি খনিজ পদার্থ। যা ফার্নেসের বেস তৈরির কাজে লাগে। ফায়ার ক্লে থেকে ফায়ার ব্রিকস্‌ তৈরি হয় যা উচ্চ তাপমাত্রাতেও গলে না।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে খয়রাশোলের হজরতপুর পঞ্চায়েতের রসা কালী মন্দিরে পেছনে থাকা রসাকালী ডোবা সংস্কার করার সময়ে এক ধরনের কালচে লাল রঙের নরম পাথর বেরিয়ে পড়েছিল। জেলার বেশ কিছু জায়গায় ওই পাথর মেলে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে অনেকেই বুঝতে পারেন ওই পাথার আসলে ফায়ার ক্লে। আরও চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে দিন কয়েক আগে। ওই পুকুরেরই অদূরে অন্য একটি পুকুর সংস্কার করা হয়েছিল। প্রখর গ্রীষ্মে জল শুকিয়ে সেখানেও ফায়ার ক্লে বেরিয়ে পড়ে। সেই বিশেষ খনিজ পদার্থটি এ বার রীতিমতো যন্ত্র দিয়ে কেটে তুলে গোপনে বাইরে বিক্রি করতে শুরু করেন এলাকার কয়েক জন। ব্লক প্রশাসনের কানে অবশ্য সে কথা পৌঁছয়নি। অভিযোগ, বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি স্থানীয় পঞ্চায়েত। এমনকী, রসা গ্রামের বাসিন্দারাও ঘটনাটিকে আমল দেননি। তবে, এলাকার পুকুরে যন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার কাজ চলছে, তা নিয়ে একটা গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে সে খবরই পৌঁছে যায়। নীলকমলবাবুর থেকে নির্দেশ পাওয়ার পরেই খয়রাশোলের বিডিও মহম্মদ ইসরার এবং ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক ইফতেকার হোসেন ঘটনাস্থলে যান। প্রাথমিক ভাবে দু’জনেই মনে করছেন, ওই পাথর মাটি আদতে প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ ফায়ার ক্লে-ই। এলাকায় যাতে খোঁড়াখুড়ি না করা হয়, তা নিশ্চিত করেন তাঁরা। ইফতেকার হোসেন নীলকমলবাবুকে এ ব্যাপারে রিপোর্টও পাঠান। এলাকার মানুষ অবশ্য এ নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।

এ দিকে, রাজ্য সরকারের খনিজ উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম সূত্রের খবর, বরাকর এলাকায় এবং রানিগঞ্জ কয়লা খনি এলাকায় ফায়ার ক্লে পাওয়াটা কোনও নতুন বিষয় নয়। সে দিক থেকে দেখতে গেলে খয়রাশোলের মাটির নীচে কয়লা রয়েছে এবং এর কাছাকাছি ফায়ার ক্লে পাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। এই মাটি দিয়েই ফার্নেসের বেস এবং ফায়ার ব্রিকস্‌ তৈরি করা হয়। খয়রাশোলের বিডিও মহম্মদ ইসরার বলেন, “এর ভবিষ্যত্‌ কী জানি না। তবে দু’টি পুকুরের দূরত্ব দেখলে বোঝা যাচ্ছে, যেখানে ওই পাথর মাটি পাওয়া যাচ্ছ তা অনেকটা এলাকা জুড়ে রয়েছে। এলাকায় কেউ যেন খোঁড়াখুড়ি না করে, তার জন্য কাঁকরতলা থানা বলা হয়েছে।” অতিরিক্ত জেলাশাসক তথা জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক নীলকমল বিশ্বাস অবশ্য বলছেন, “খবর পেয়েই ওখান থেকে মাটি তোলার কাছ বন্ধ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে, ওই পাথর-মাটি আদৌ ফায়ার ক্লে কিনা, সেটা পরীক্ষা না করে বলা সম্ভব নয়। যদি সত্যিই তা হয়, সেটা জানার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”

khoirashol minerals in pond theft
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy