সবে পুরভোটে সংরক্ষণের খসড়া তালিকা প্রকাশ হয়েছে। সংরক্ষণের গেরোয় পড়ে শাসকদলের অভ্যন্তরে ইতিমধ্যেই মাথাচাড়া দিয়েছে দ্বন্দ্ব। অমেকেই নিজেদের ওয়ার্ড খুইয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে রঘুনাথপুরে পুরভোটের প্রচারে নেমে পড়ল বিজেপি।
এক বছর আগে লোকসভার ফলাফলের নিরিখে বিজেপি এই মুহূর্তে রঘুনাথপুর শহরে তৃণমূলের মূল বিরোধী হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি রঘুনাথপুর কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে আরএসএস প্রভাবিত ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। এ বার তাই এই পুরসভা দখল করাকে এখন জেলা বিজেপি পাখির চোখ করেছে।
সম্প্রতি পুরনির্বাচনের প্রস্তুতি সভা নাম দিয়ে রঘুনাথপুর শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি একটি সভা করে। ছিলেন দলের জেলা সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুরসভায় দলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্য কমিটির সদস্য গৌতম চক্রবর্তী। সেখানে শহরে দলের সাংগঠিনক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। টানা ১০ বছর রঘুনাথপুর পুরসভায় রয়েছে তৃণমূল। ফলে একদিকে যেমন প্রতিষ্ঠান বিরোধী মনোভাব তৈরি হয়েছে ভোটারদের একাংশে মধ্যে, তেমনই পুরসভা পরিচালনা নিয়ে দলের মধ্যে দ্বন্দ্বও ক্রমশ প্রকট হয়েছে। এই অবস্থায় সংগঠন ঢেলে সাজাতে শহরে ৬২ জনের শহর মণ্ডল কমিটি এবং ১৩টি ওয়ার্ড কমিটি গড়েছে বিজেপি।
বিজেপি সূত্রের খবর, রঘুনাথপুরের মোট ভোটারদের ৪০-৫০ শতাংশকে প্রাথমিক সদস্যপদ দিয়ে পুরনির্বাচনে যেতে চাইছে বিজেপি। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, রঘুনাথপুরে ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার। গত চার বছরে ১০ শতাংশ ভোটার বেড়েছে ধরে নেওয়া হলে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা কমবেশি ২০ হাজার। রঘুনাথপুর শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর কর বলেন, “রঘুনাথপুরে দলের প্রাথমিক সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে অন্তত আট থেকে দশ হাজার করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।” দলের নেতাদের ব্যাখ্যা, প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহের বিশেষ অভিযানে ইতিমধ্যেই রঘুনাথপুরে প্রাথমিক সদস্য হয়েছেন প্রায় ৩০০০ জন। শুভঙ্করবাবুর কথায়, “দলের কড়া নির্দেশ পদাধিকারীদের পদে থাকতে গেলে ন্যূনতন ১০০ জন সদস্য করাতে হবে। না হলে পদ যাবে। ৩৯ জন পদাধিকারী নিজেদের তাগিদেই ন্যূনতম প্রায় ৪০০০ সদস্য নিয়ে আসবেন। অন্যরাও মাঠে নামলে আরও কয়েক হাজার সদস্য চলে আসবে।” এ ভাবে মোট ভোটারের ৪০ শতাংশকে পেয়ে পুরসভা দখলের আশা করছেন বিজেপি নেতারা।
তবে একই সঙ্গে প্রচারে তৃণমূলের পুরসভা পরিচালনার নেতিবাচক দিকগুলি তুলে ধরাতেও জোর দেওয়া হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে প্রচার কমিটি ও মিডিয়া সেল। পুরসভার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভোটারদের কাছে তারা নিরন্তর ও ধারাবাহিক প্রচার চালাবে। দলের জেলা সভাপতি অভিযোগ তুলেছেন, “দশ বছরে তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী পুরসভায় ঠিকাদাররাজ তৈরি করে দলেরই একাংশকে বঞ্চিত করছে। যারা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে দলটাকে ক্ষমতায় এনেছিল, তারাই এখন দলে ব্রাত্য।”
যদিও বিকাশবাবুদের দাবি উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের অন্যতম জেলা নেতা নবেন্দু মাহালি দাবি করেছেন, “লোকসভার কয়েকটি ওয়ার্ডে এগিয়ে দিবাস্বপ্ন দেখছে বিজেপি। কেন্দ্রে সরকার গঠনের ভোটের সাথে স্থানীয় স্তরের নির্বাচন পুরোপুরি আলাদা। রঘুনাথপুরের ভোটাররা জানেন রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। কাজেই পুরশহরের উন্নয়ন একমাত্র তৃণমূলের পক্ষেই করা সম্ভব। ওদের মিথ্যা অভিযোগ মানুষ মানবেনও না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy