Advertisement
০৬ মে ২০২৪

পাশে স্কুল, দারুণ ফল দুঃস্থ সুস্মিতার

বাবা অন্যের চাষ জমিতে দিন মজুরি করে টেনেটুনে চার জনের সংসার চালান। এই অবস্থায় জয়রামবাটী রামকৃষ্ণ মিশন সারদা বিদ্যাপীঠের সাহায্যে এ বার মাধ্যমিকে ৬২৬ নম্বর পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সুস্মিতা পাঁজা। ওই স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক নেই।

সুস্মিতা পাঁজা।

সুস্মিতা পাঁজা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জয়রামবাটী শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৪ ০০:২৮
Share: Save:

বাবা অন্যের চাষ জমিতে দিন মজুরি করে টেনেটুনে চার জনের সংসার চালান। এই অবস্থায় জয়রামবাটী রামকৃষ্ণ মিশন সারদা বিদ্যাপীঠের সাহায্যে এ বার মাধ্যমিকে ৬২৬ নম্বর পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সুস্মিতা পাঁজা। ওই স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক নেই। এর পর কী হবে, সেই চিন্তাই এখন ঘিরে ধরেছে স্থানীয় চতুইপাতা গ্রামের মেধাবী ছাত্রীটিকে। মাটির বাড়িতে মা-বাবা ও বোনকে নিয়ে ছোট্ট সংসার। মোরাম রাস্তায় আধ ঘণ্টা সাইকেল চালিয়ে স্কুল। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণি অবধি পড়তে কোনও খরচখরচা লাগেনি। পাঠ্যপুস্তকও জুগিয়েছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। স্কুলের পড়ার বাইরে কোনও টাকা না নিয়েই ইংরেজি পড়িয়েছেন শিক্ষিকা অঞ্জলি বন্দ্যোপাধ্যায়। ভূগোল পড়িয়েছেন মৃদুলা নিয়োগী। পাঁচ বছর এ ভাবেই সুস্মিতার পড়াশোনা চলেছে মিশনের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ছায়ায়। কোনও সমস্যাই অনুভূত হয়নি। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রচেষ্টার মর্যাদাও দিয়েছে এই মেধাবী মেয়েটি। এ বার মাধ্যমিকে সে পেয়েছে বাংলায় ৯২, ইংরেজিতে ৮২, অঙ্কে ৯১, জীবন বিজ্ঞানে ৯৬, ভৌত বিজ্ঞানে ৯১, ইতিহাসে ৭৫ এবং ভূগোলে ৯২ নম্বর। কিন্তু, এখন গোটা পরিবারেরই দুশ্চিন্তা ডাক্তার হতে চাওয়া সুস্মিতার উচ্চশিক্ষা নিয়ে। উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য দূরের স্কুলে ভর্তি হতে হবে। অন্য খরচখচাও আছে। বাবার সামান্য রোজগারে আদপে এ সব সম্ভব নয় ভবিষ্যত কী? কাদা পায়ে সদ্য মাঠ থেকে ফেরা সুস্মিতার বাবা স্বরূপ পাঁজা বলেন, “দিন আনি দিন খাই সংসারে এত দিন মিশনের সাহায্যে পড়ছিল। এর পরে কী হবে জানি না।” এলাকার বাসিন্দা বাসুদেব মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা ওই পরিবারে দারিদ্রের কথা জানি। সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছি কৃতী ছাত্রীটির পাশে দাঁড়ানোর।” মিশনের প্রধান শিক্ষক ব্রহ্মচারী দেবেন্দ্র চৈতন্য বলেন, “সুস্মিতা পড়াশোনার পাশাপাশি স্কুলের নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খেলাধুলোতেও অংশ নিত। ওর মতো মেধাবী ছাত্রীর আর্থিক কারণে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়া উচিত নয়। আমরাও ওর পাশে থাকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

madhyamik result jairambati sushmita panja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE