Advertisement
০৩ মে ২০২৪

ফের অনাস্থা আড়শায় পঞ্চায়েত সমিতিতে

ফের অনাস্থা আড়শা পঞ্চায়েত সমিতিতে। জানুয়ারিতে তৃণমূল পরিচালিত এই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে সরতে হয়েছে নিজেদের সদস্যদের আনা অনাস্থার জেরে। তার ঠিক তেরো দিনের মাথায় পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠি জমা পড়ল প্রশাসনের কাছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আড়শা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৩০
Share: Save:

ফের অনাস্থা আড়শা পঞ্চায়েত সমিতিতে। জানুয়ারিতে তৃণমূল পরিচালিত এই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে সরতে হয়েছে নিজেদের সদস্যদের আনা অনাস্থার জেরে। তার ঠিক তেরো দিনের মাথায় পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠি জমা পড়ল প্রশাসনের কাছে। এক পক্ষকালের মধ্যে ফের দলীয় কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠি জমা পড়ায় অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। কারণ, এই ঘটনায় ফের পুরুলিয়ায় শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চেহারাটা সামনে এসে পড়েছে।

আড়শা পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২ ফেব্রুয়ারি এই সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ অশোককুমার মাঝির বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন তৃণমূলেরই তিন সদস্য, শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ করণ সিংহ সর্দার, বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ অধর মাহাতো এবং এক সদস্য সুশীলা গোপ। অনাস্থার চিঠিতে তাঁরা দাবি করেছেন, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করায় তাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনছেন। আড়শা পঞ্চায়েত সমিতিতে অনাস্থা আনার ইতিহাস রয়েছে। বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকাকালীন বাম শরিকদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এই সমিতিতে একাধিকবার অনাস্থা এসেছে। গত পঞ্চায়েত নিবার্চনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতা পেয়েছিল তৃণমূল। মোট ২৩ আসনের মধ্যে তৃণমূল ১৩, সিপিএম 8 এবং কংগ্রেস ও ফওয়ার্ড ব্লক ১টি করে আসন পায়। সভাপতি নির্বাচিত হন তৃণমূলের তুষ্টরানি রাজোয়াড়। কিন্তু, চলতি জানুয়ারিতে সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন দলেরই ছয় সদস্য। সেই চিঠিতে কংগ্রেসের এবং ফব-র দুই সদস্যও স্বাক্ষর করেন।

পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের মতো সভাপতির বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তোলা হয়েছিল অনাস্থার চিঠিতে। ওই ছয় সদস্য দাবি করেন, সভাপতি সমিতির অনেক সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা না করে একতরফা ভাবে একাধিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এমনকী বাইরে থেকে ঠিকাদারদের ঘনিষ্ঠ কিছু লোক পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালনায় হস্তক্ষেপ করছে। গত ২০ জানুয়ারি অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটিতে পদ থেকে অপসারিত হন তুষ্টরানিদেবী। সেদিন অনাস্থার পক্ষে উপস্থিত তৃণমূল সদস্যদের সঙ্গে সভাপতির বিরুদ্ধে ভোট দেন সিপিএমের ৪ জন এবং কংগ্রেস ও ফব-র দুই সদস্য। সেদিন ভোটাভুটিতে তৃণমূলের যে পাঁচ জন সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন, তাঁদের অন্যতম পূর্ত কর্মাধক্ষ্য অশোকবাবু। এ বার তাঁর বিরুদ্ধেও অনাস্থা আনা হল। আড়শা পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সভাপতি কৌশল্যা সহিস এবং অশোকবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থার চিঠিতে স্বাক্ষর করা করণ সিংহ সর্দার মন্তব্য করতে চাননি। অশোকবাবু অবশ্য বলেছেন, “আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। আমি অনাস্থার ভোটাভুটির দিনে অনুপস্থিত ছিলাম, এটা সত্যি। কেননা আমার মনে হয়েছিল, আমাদের নতুন সভাপতিকে সিপিএম বা ফরওয়ার্ড ব্লকের সদস্যরা সমর্থন করছেন। অথচ আমাদের দলের জন্মই তো সিপিএম বিরোধিতা থেকে! যাই হোক আমি আমার পদত্যাগপত্র সভাপতির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। তা ছাড়া দল সবই জানে।”

আড়শার বিডিও মাধর বিসাই জানান, এই অনাস্থার চিঠির ভিত্তিতে বুধবার বৈঠক ডাকা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অনাস্থা সংক্রান্ত নয়া বিধির মধ্যে এই অনাস্থার বিষয়টি পড়বে না। কারণ, এই বিধি গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে প্রধান ও উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতিতে সভাপতি ও সহ-সভাপতি এবং জেলা পরিষদে সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের নেতা নবেন্দু মাহালিও এ ব্যাপারে মন্তব্য করেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

no confidence motion arsha panchayat samity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE