Advertisement
০৫ মে ২০২৪

স্কুলের পথে গর্ত, সংস্কারে নামল পড়ুয়ারা

বহু বার দরবার করেও কাজ হয়নি। রাস্তা সেই খানাখন্দেই ভরেছিল। তাই স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কার করতে এগিয়ে এল স্কুল পড়ুয়ারা। সঙ্গে ছিলেন স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকরা। পাড়া ব্লকের নডিহা-সুরুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সুরুলিয়া গ্রামে শুক্রবার এ ভাবেই রাস্তার গর্তে পড়ল মাটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাড়া শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৪ ০০:২৬
Share: Save:

বহু বার দরবার করেও কাজ হয়নি। রাস্তা সেই খানাখন্দেই ভরেছিল। তাই স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কার করতে এগিয়ে এল স্কুল পড়ুয়ারা। সঙ্গে ছিলেন স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকরা। পাড়া ব্লকের নডিহা-সুরুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সুরুলিয়া গ্রামে শুক্রবার এ ভাবেই রাস্তার গর্তে পড়ল মাটি।

তবে এই ঘটনাটিকে অনৈতিক কাজ বলে দাবি করেছে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি। সমিতির সভাপতি সীমা বাউরি দাবি, “শিশুদের দিয়ে রাস্তা সংস্কারের কাজ করিয়ে অনৈতিক কাজ করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সোমবার এলাকায় গিয়ে কেন এই কাজ করানো হল তা খতিয়ে দেখব।” যদিও ওই রাস্তা প্রশাসন থেকে কেন সংস্কার করা হয়নি তার সদুত্তর সীমাদেবীর কাছে মেলেনি।

সুরুলিয়া গ্রামে সম্প্রতি বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠ নামের একটি বেসরকারি প্রাথমিক স্কুল গড়ে উঠেছে। স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা শতাধিক। কিন্তু স্কুলে যাওয়ার মূল রাস্তাটি বেহাল হয়ে পড়ায় সমস্যায় পড়েছিল পড়ুয়ারা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রঁদাবাড়ি থেকে সুরুলিয়া পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার মোরামের রাস্তার অনেকখানি গর্তে ভরে উঠেছিল। সংস্কার না হওয়ায় রাস্তাটি আরও বেহাল হয়ে পড়ে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য একাধিকবার পঞ্চায়েতের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন তারা। কিন্তু সাড়া মেলেনি পঞ্চায়েতের।

এ দিন সকালে কোদাল, গাঁইতি, বেলচা, ঝুড়ি নিয়ে রাস্তার গর্তগুলি বোজানোর কাজ শুরু করেন অভিভাবক ও শিক্ষকরা। পাথর জোগাড় করে গর্তগুলি বুজিয়ে তার উপরে মাটি ফেলেন তাঁরা। খুদে পড়ুয়ারাও কচি হাতে রাস্তায় মাটি ফেলে। স্কুলের সম্পাদক তথা স্থানীয় বাসিন্দা অশোক মাহাতো বলেন, “রাস্তার খানাখন্দে পড়ুয়াদের স্কুলে আসতে অসুবিধা হচ্ছিল। সামনেই বর্ষা আসছে। ফলে বৃষ্টিতে রাস্তাটি আরও বেহাল পড়বে বলেই আমরা অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে সবাই মিলে রাস্তাটি সংস্কারের কাজ করেছি।”

কিন্তু এই ঘটনাটিকে ভালো চোখে দেখছে না তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি। সমিতির সভাপতির প্রতিক্রিয়া, “পঞ্চায়েত প্রধান আমাকে জানিয়েছেন রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যেই মোরাম ফেলা হয়েছিল। কিন্তু কয়েকটি কারণে সেই কাজ শুরু করা যায়নি। তারই মধ্যে স্কুলের শিশুদের দিয়ে এই গরমে রাস্তা সংস্কারের কাজ করিয়ে ঠিক করেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ।” পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দীপক কুম্ভকারের সংযোজন, “নিয়ম অনুযায়ী শিশুদের দিয়ে এ ভাবে কাজ করানো যায় না। অনৈতিক কাজ করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।”

কিন্তু বেহাল হয়ে পড়া স্বত্ত্বেও কেন মাত্র দেড় কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ করে উঠতে পারেনি পঞ্চায়েত, তার সদুত্তর মেলেনি সভাপতি, সহ-সভাপতির কাছ থেকে। যোগাযোগ করা যায়নি পঞ্চায়েত প্রধান সঙ্গে। ওই স্কুলের সম্পাদক অশোকবাবু বলেন, “পঞ্চায়েতের কাছে বহুবার আর্জি জানানো হয়েছিল রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য। তারা রাস্তা সংস্কার না করায় বাধ্য হয়েই আমরা সবাই মিলে রাস্তা সংস্কার করেছি। অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করেই পড়ুয়াদের নিয়ে কাজ হয়েছে। ওদেরও সুঅভ্যাস গড়ে উঠবে।” অভিভাবকদের একাংশ জানান, পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি নিজেদের দায়িত্ব পালন করলে তাঁদের এ ভাবে রাস্তা সংস্কারে নামতে হত না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

para potholes in road repair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE