Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

১১ মাস কাজ করেও ভাতা অমিল, অবস্থান

টানা এগারো মাস ভাতা না পেয়ে জেলা শ্রম দফতরের সামনে অবস্থান শুরু করেছেন পুরুলিয়ার শিশুশ্রমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা। নিজেদের মাসিক ভাতা, এই সব বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের যে সুবিধাগুলি পাওয়ার কথা, সেই সমস্ত সুবিধা এবং শিশুশ্রমিক স্কুলগুলির নিজস্ব ভবন গড়ে তোলার দাবিতে অবস্থান শুরু করেছেন জেলার বিভিন্ন ব্লকের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা।

অবস্থান শিশুশ্রমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের। —নিজস্ব চিত্র।

অবস্থান শিশুশ্রমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৪ ০০:২৯
Share: Save:

টানা এগারো মাস ভাতা না পেয়ে জেলা শ্রম দফতরের সামনে অবস্থান শুরু করেছেন পুরুলিয়ার শিশুশ্রমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা। নিজেদের মাসিক ভাতা, এই সব বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের যে সুবিধাগুলি পাওয়ার কথা, সেই সমস্ত সুবিধা এবং শিশুশ্রমিক স্কুলগুলির নিজস্ব ভবন গড়ে তোলার দাবিতে অবস্থান শুরু করেছেন জেলার বিভিন্ন ব্লকের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা শ্রম দফতরই এই বিদ্যালয়গুলি পরিচালনা করে। জেলায় এ ধরনের বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৯০টি। শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী মিলিয়ে কর্মীর সংখ্যা মোট ৪৫০। শিক্ষক-শিক্ষিকারা মাসে চার হাজার টাকা, করণিক তিন হাজার টাকা ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা মাসে দু’হাজার টাকা পারিশ্রমিক পান। তাঁদের সংগঠন ‘স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন অফ ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার ওয়েলফেয়ার স্কুল’-এর সম্পাদক মহম্মদ মুস্তাক বলেন, “প্রায় এক বছর হয়ে গেল আমরা নিয়মিত কাজ করে গেলেও কোনও পারিশ্রমিক পাচ্ছি না। পড়ুয়াদের অবস্থাও তথৈবচ। তারাও তাদের প্রাপ্য ভাতা পাচ্ছে না। পোশাক অমিল। এ সব নিয়ে শ্রম দফতরে বারবার বলেও কাজ হচ্ছে না। অফিসারেরা শুধু বলছেন, আমরা পারিশ্রমিক পেয়ে যাব। কিন্তু কবে পাব?”

অবস্থানকারীদের ক্ষোভ, “আমরা সবাই নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের। কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক না পেলে সংসার চলবে কী ভাবে? এগারো মাস কোনও পারিশ্রমিক না পেয়ে আমরা আজ বাধ্য হয়ে এই অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছি।” কর্মীদের বক্তব্য, এর পরেও যদি তাঁরা প্রাপ্য পারিশ্রমিক না পান, তাহলে অনশনে বসতেও বাধ্য হবেন। মুস্তাকের কথায়, “যে বাল্যবিবাহ রোখার ক্ষেত্রে গোটা দেশে আজ পুরুলিয়া রোল মডেল। যারা সাহসের সঙ্গে এটা করে দেখিয়েছে, তারা প্রায় সকলেই আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্রী।” উল্লেখ্য, পড়তে চেয়ে নিজের বিয়ে রুখে সংবাদ-শিরোনামে আসা জয়পুর গ্রামের সুনীতা মাহাতো মুস্তাকের স্কুলেরই ছাত্রী। মুস্তাক বলেন, “সুনীতা আমাদের বলেছিল, ও পড়তে চায়। আমরা ওর বাড়িতে বুঝিয়ে ওর ইচ্ছেই যাতে প্রাধান্য পায়, সেটা সুনিশ্চিত করেছিলাম। এ জন্য গ্রামে আমাদের কম ঝামেলা পোহাতে হয়নি। অথচ আজ আমাদেরই পারিশ্রমিকের জন্য এখানে ধর্নায় বসতে হচ্ছে!”

এই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুষেণচন্দ্র মাঝিও। তিনি এ দিন তাঁদের অবস্থান মঞ্চে আসেন। সুষেণবাবু বলেন, “আমার কাছে ওঁরা এসেছিলেন। আমি ওঁদের দাবিগুলি সমর্থন করি।” পুরুলিয়া জেলা শ্রম মহাধ্যক্ষ্য (পশ্চিম) প্রসেনজিৎ কুণ্ডু বলেন, “কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের অর্থে এই বিদ্যালয়ের কর্মীদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। সেই বরাদ্দ না মেলায় সমস্যা হয়েছে। চলতি অর্থবর্ষে কোনও বরাদ্দ আসেনি। আমরা বারবার চিঠিও লিখেছি। রাজ্য সরকারকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

purulia child labour school teacher allowance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE