Advertisement
E-Paper

বিরোধীদের তাড়াতেই কি অবাধ সন্ত্রাস

বিরোধী-শূন্য করে দেওয়ার ‘তাড়না’তেই কি রবিবার পূজালিকে সন্ত্রাস-ত্রস্ত করেছিল শাসক দল? ভোট হয়ে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরেও সোমবার দিনভর সেই গুঞ্জনই ঘুরে বেড়ালো পূজালি পুর-এলাকার অলি-গলিতে।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৭ ০৩:৩৮
বেপরোয়া: মুখে কাপড় বেঁধে মোটরবাইকে। রবিবার পূজালির ভোটে দিনভর এ ভাবেই দাপাতে দেখা গিয়েছিল দুষ্কৃতীদের। ছবি: রণজিৎ নন্দী

বেপরোয়া: মুখে কাপড় বেঁধে মোটরবাইকে। রবিবার পূজালির ভোটে দিনভর এ ভাবেই দাপাতে দেখা গিয়েছিল দুষ্কৃতীদের। ছবি: রণজিৎ নন্দী

বিরোধী-শূন্য করে দেওয়ার ‘তাড়না’তেই কি রবিবার পূজালিকে সন্ত্রাস-ত্রস্ত করেছিল শাসক দল? ভোট হয়ে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরেও সোমবার দিনভর সেই গুঞ্জনই ঘুরে বেড়ালো পূজালি পুর-এলাকার অলি-গলিতে।

এর আগে কোনও দিন ভোটে কোনও গোলমাল দেখেনি পূজালি। বোমা তো দূর অস্ত্, এই পুর-এলাকার কোনও ওয়ার্ডে একটি ইটের টুকরোও পড়েনি বলে স্থানীয়দের দাবি। মোটরবাইকে চেপে বহিরাগতদের তাণ্ডব তো নয়ই, বুথের ধারেকাছে থাকত না কোনও জটলাও।
বরাবরই শান্তিপূর্ণ ভাবেই ভোট দিতেন স্থানীয় ভোটাররা।

অথচ রবিবার ভোট দিতে গিয়ে বোমা, মুখে কাপড় বাঁধা মোটরবাইক আরোহীদের হম্বিতম্বি দেখে রীতিমতো ক্ষুব্ধ পূজালির ভোটাররা। সেই ক্ষোভ উগড়েই এ দিন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের এক মহিলা ভোটার বলছিলেন, ‘‘কয়েক বার তো আমরা ভোটের দিন পিকনিকও করেছি। এ বার করলে যে কী হত! খাওয়া যেত নাকি! সকাল থেকেই তো গুলি আর বোমার হাত থেকে নিজেদের প্রাণ বাঁচিয়ে কোনওমতে ভোটটা দিয়েছি।’’ ইভিএম ভাঙচুর হওয়ায় এই ৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি এবং ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দু’টি বুথে পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

কিন্তু যে ভাবে আতঙ্ক আর সন্ত্রাসের আবহে পূজালির ভোট হল, তাতে তৃণমূলের দিকেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে। বিরোধীরাও অভিযোগ তুলছেন, পূজালিতে কোনও বিরোধী প্রার্থী যাতে ভোট না পান, সে জন্য সুন্দরবন থেকে এক তৃণমূল বিধায়ক শনিবার রাত থেকেই বজবজের চড়িয়ালের কাছে একটি অফিসে এসে ঘাঁটি গেড়েছিলেন। কংগ্রেসের এক স্থানীয় নেতার অভিযোগ, ‘‘দক্ষিণ ২৪ পরগনার নানা এলাকা থেকে শ’দেড়েক দুষ্কৃতী এনে ওই বিধায়ক একটি বুথ দখলে ব্যবহার করেছিলেন। সকাল ন’টা থেকে ওই দুষ্কৃতীরাই সব বুথে হামলা চালিয়েছে।’’

বজবজের স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বিজেপি তিনটি ওয়ার্ডে ইভিএম ভেঙে দিল। পুনর্নির্বাচন হলে হয়তো ওই সব ওয়ার্ডে বিরোধীরা জিতবে। তা হলে আর বিরোধী-শূন্য পুরসভা হবে কী করে! কিন্তু যাঁরা সাধারণ ভাবে ভোটে জিতে আসবেন, তাঁরা কি ছাপ্পা ভোটে জিতেছেন বলে মানুষ বলবে?’’ যদিও সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ী বলেন, ‘‘বিজেপির মাধ্যমে ভোট ভাগ করার চেষ্টা করেছিল তৃণমূল। কিন্তু নিশ্চিত হতে পারেনি। সে জন্যই গুন্ডামির পথে গিয়েছে তৃণমূল।’’

অন্যদিকে, বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি (পশ্চিম মণ্ডল) অভিজিৎ দাস বলেন, ‘‘বিজেপির ভয়ে তৃণমূল দিশেহারা হয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই ভোট লুঠ হয়েছে।’’ এর জবাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক গৌতম দাশগুপ্ত অবশ্য বলেন, ‘‘মানুষ পরিস্থিতির উপর খেয়াল রাখছে। তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।’’

Opponents BJP Congress CPIM Violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy