Advertisement
০৭ মে ২০২৪

শাহের দাওয়াই ফলাবে কে, প্রশ্ন

বাংলায় এসে শাহ বা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা যেমনই হুঙ্কার দিয়ে যান না কেন, তা বাস্তবায়িত করার মতো ক্ষেত্র রাজনৈতিক বা সাংগঠনিক ভাবে বিজেপি তৈরি করতে পেরেছি কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে নানা মহলেই।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

রোশনী মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৮ ০৪:২৪
Share: Save:

পুরুলিয়ায় দাঁড়িয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ডাক দিয়ে গিয়েছেন, বাংলা থেকে তৃণমূলকে উচ্ছেদ করতে হবে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই পুরুলিয়াতেই দলের দু’টি কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধেই! একজোট হয়ে মানুষের কাছে দলকে অনেক বেশি ‘গ্রহণযোগ্য’ করে তুলতে রাজ্য নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন শাহ। কিন্তু তিনি চলে যেতেই দ্বন্দ্ব ফুটে উঠল তালা ঝোলানোর ঘটনায়।

শুধু এই একটি ঘটনাই নয়। বাংলায় এসে শাহ বা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা যেমনই হুঙ্কার দিয়ে যান না কেন, তা বাস্তবায়িত করার মতো ক্ষেত্র রাজনৈতিক বা সাংগঠনিক ভাবে বিজেপি তৈরি করতে পেরেছি কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে নানা মহলেই। আগামী বছর ২২টা লোকসভা আসন চিহ্নিত করে ঝাঁপানোর লক্ষ্য স্থির করেছেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু দলের অন্দরে অনেক নেতাই মানছেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার মতো দলের সাংগঠনিক ক্ষমতা এখনও নেই। রাজ্যের ৩৫% বুথ কমিটি তৈরিই হয়নি এখনও। তৈরি হয়নি ‘পান্নাপ্রমুখ’ (ভোটার তালিকার পাতা পিছু এক জনকে জনসংযোগের দায়িত্ব)। কারও কারও ক্ষোভ, পুরনো কর্মীদের নিষ্ক্রিয় করে রাখা হচ্ছে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য মনে করছেন, সাংগঠনিক খামতির জন্য তাঁদের নির্বাচনী সাফল্য আটকে যাবে না। দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘ভোটে জিততে সব সময় বুথ কমিটি, পান্নাপ্রমুখ লাগে না। পঞ্চায়েত ভোটে তো তৃণমূলের সন্ত্রাসে আমরা প্রার্থীই দিতে পারিনি। তা সত্ত্বেও আমরা দ্বিতীয় শক্তি এখন। আসলে জনগণের চাওয়াটাই মুখ্য।’’ বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক রাহুল সিংহেরও যুক্তি, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে দলের সংগঠন এখনও ভোটে জেতার অবস্থায় নেই, তর্কের খাতিরে এটা ধরে নিলেও বলতে হবে ত্রিপুরায় বিজেপির সংগঠন আরও খারাপ ছিল। সেখানে কিন্তু জিতে দেখিয়েছি আমরা!’’ তাঁদের দাবি, কংগ্রেস, এবং বামেরা ক্ষয়িষ্ণু শক্তি হওয়ায় তৃণমূল-বিরোধী ভোট তাঁদের ঝুলিতেই আসবে।

বিজেপি নেতৃত্ব এমন আশা করলেও এ রাজ্যে জনসংযোগে এখনও সে ভাবে ‘নজর’ দেওয়া হয়নি বলে দলেরই একাংশের মত। এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বেঁধে দেওয়া কর্মসূচি আনুষ্ঠানিক ভাবে পালন করা হচ্ছে শুধু। ওই কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষের কাছে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে পৌঁছনোর কোনও চেষ্টা নেই।’’ তবে বিজেপি নেতৃত্বের আশা, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট হলে তৃণমূলকে বেকায়দায় পড়তে হবে। দিলীপবাবু বক্তব্য, ‘‘অমিতজি’র বাংলার জন্য আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে। বারবার উনি নিজে এবং ওঁর বাহিনী এ রাজ্যে আসছে। সবাই মিলে সাফল্য পাব, এটাই বিশ্বাস।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE