কানপুর, উজ্জয়িনীর পর কল্যাণী।
গত ২১-২২ জানুয়ারি শিয়ালদহ-কৃষ্ণনগর শাখায় কল্যাণী থেকে বাহাদুরপুর পর্যন্ত রেল লাইনের ১০৫টি ক্লিপ খোলা অবস্থায় পাওয়া যায়। রুটিন রক্ষণাবেক্ষণের কাজে নেমে পূর্ব রেলের লাইনম্যানেরা প্রথম এটা লক্ষ করেন। দ্রুত খবর যায় আরপিএফ এবং জিআরপি-র কাছে। রেল পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও এখনও কোনও সূত্র পায়নি। তবে এর মধ্যে নাশকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা।
রেল সূত্রের খবর, এক বছর আগে বহরমপুরেও একই ঘটনা ঘটেছিল। এ বার কলকাতার এত কাছে এই ঘটনায় দুশ্চিন্তায় রেল কর্তারা।
রেল পুলিশের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারাও ঘটনার পৃথক তদন্ত শুরু করেছেন। এক গোয়েন্দা কর্তার কথায়, ‘‘কানপুরে আইএসআই নাশকতা চালিয়ে যে ভাবে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে, তার খুব কাছাকাছি সময়েই কল্যাণীর এই ঘটনা। আমরা সমস্ত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছি।’’ শিয়ালদহের রেল পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমন মিশ্র বলেন, ‘‘কী ভাবে এতগুলি ক্লিপ খোলা থাকল, তা বোঝা যাচ্ছে না।’’
রেল পুলিশের এক কর্তা জানান, গত ২০ নভেম্বর ইনদওর-পটনা এক্সপ্রেসের চালক হঠাৎ লাইনে ‘অস্বাভাবিকতা’ খেয়াল করেন। তিনি চলন্ত ট্রেন ব্রেক কষে থামানোর চেষ্টা করেন। তাতে ১১টি কোচ লাইনচ্যুত হয়। মারা যান ১৫০ যাত্রী। ওই ঘটনায় এনআইএ তদন্তে নেমে সামসুল হুদা নামে নেপালে সক্রিয় এক আইএসআই এজেন্টকে গ্রেফতার করে। জানা যায়, ১ অক্টোবর বিহারের পূর্ব চম্পারণ জেলার ঘোরাসাহান এবং ২ ডিসেম্বর নাকারদেইতে ট্রেনে নাশকতার চেষ্টা হয়েছিল। ৬ ফ্রেব্রুয়ারি ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা হয় বক্সারে। বিহার পুলিশের দাবি, প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রেসারকুকার বোমা বা আইইডি ফাটানোর চেষ্টা হয়েছিল। তবে কোনও ক্ষেত্রেই সফল হয়নি তারা। বিহারের ঘটনায় মোতিলাল পাসোয়ান-সহ বেশ কয়েক জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। সেই সূত্রেই সামসুল হুদা-র খোঁজ মেলে। হুদা করাচির সফি শেখ নামে এক আইএসআই কর্তার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতে নাশকতার ছক কষেছিল।
কানপুর, বক্সা ও পূর্ব চম্পারণের পর যে ভাবে কল্যাণী-বাহাদুরপুর রেল লাইনে ১০৫টি ক্লিপ খোলার ঘটনা সামনে এসেছে, তাতে রেল প্রশাসন আশঙ্কায়। চিন্তায় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলিও। এক কর্তার কথায়, ‘‘দীর্ঘদিন লাইন মেরামত না হলে দু’চারটে ক্লিপ খুলে যেতেই পারে। কিন্তু একশো ক্লিপ কেউ না কেউ খুলেছে। বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে, সেটাই রক্ষে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy