কৃষকের হাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে তুলে দেওয়া হবে সিঙ্গুরের জমির মালিকানা।
যাঁরা ১০ বছর আগে ক্ষতিপূরণ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, তাঁদের হাতেও সেই চেক তুলে দেওয়া হবে।
এবং দু’টি কাজই শুরু হবে বুধবার থেকে। সোমবার নবান্নে সিঙ্গুর নিয়ে জরুরি বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ কথা ঘোষণা করেছেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, জমি ফেরানোর কাজ যত দিন না শেষ হচ্ছে, তত দিন পর্যন্ত চালু থাকছে কম দামে চাল এবং মাসিক আর্থিক অনুদান প্রকল্পও।
সিঙ্গুরে জমি জরিপ, সমীক্ষা এবং প্লটিং-এর কাজ যে গতিতে এগোচ্ছে, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মমতা। নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ দিন জানান, আগামী কালের মধ্যেই ৬২০ একর জমির কাজ শেষ হয়ে যাবে। পর দিন অর্থাৎ বুধবার থেকেই সেই জমি কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া শুরু হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সিঙ্গুরের জমির মোট ৯১১৭টি প্লটের দলিল এবং পড়চা বুধবার আনুষ্ঠানিক ভাবে কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। যে কৃষক বা জমি মালিকরা ক্ষতিপূরণ নেননি, তাঁদের মধ্যে ৮০০ জনের হাতে ক্ষতিপূরণের চেকও বুধবারই তুলে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ৬০ দিনেও চার্জশিট দিতে ব্যর্থ পুলিশ, তোলাবাজি মামলায় জামিন অনিন্দ্যর
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে আমরা তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলছি। জমির সমীক্ষা এবং জরিপের কাজ ভিডিও রেকর্ডিং করা হচ্ছে।’’ জমি চাষযোগ্য করেই কৃষকদের হাতে দেওয়া হবে বলে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী আবারও জানিয়েছেন। তবে যতটা জমি টাটার কারখানার জন্য ঘেরা হয়েছিল, তার সবটা চাষের অযোগ্য হয়ে যায়নি বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘জমি দীর্ঘ দিন ধরে চাষ না হলে সে জমির উর্বরতা বেড়ে যায়।’’ অর্থাৎ যে জমিতে কংক্রিটের কাঠামো তৈরি করা হয়নি, সেই জমিকে বাদ দিলে, বাকি অংশের জমিকে চাষযোগ্য করে তুলতে খুব একটা সমস্যা হবে না বলেই রাজ্য সরকার মনে করছে।
ক্ষমতায় আসার পর থেকে সিঙ্গুরের জমিহারা কৃষকদের জন্য বিশেষ সহায়তা প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের ২ টাকা কিলো দরে চাল দেওয়া হচ্ছিল। সঙ্গে দু’হাজার টাকা করে ভাতাও দেওয়া হচ্ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার জানিয়েছেন, সহায়তা প্রকল্প এখনই বন্ধ হচ্ছে না। যত দিন না চাষযোগ্য করে জমি কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে, তত দিন পর্যন্ত এই প্রকল্প চলবে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, নভেম্বরের মধ্যেই জমি ফেরানোর কাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। তত দিন পর্যন্ত কৃষকরা ২ টাকা কিলো দরে চাল পাবেন, মাসিক দু’হাজার টাকা ভাতাও পাবেন।