ভাইয়ের পারিবারিক পরিচিতি নিয়ে দরকারি নথি রয়েছে তাঁর সঙ্গে। তবে তাতে বিশ্বাস না-হলে দরকারে ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা নিন সংশ্লিষ্ট কর্তারা। এমনই দাবি, বাগনানের হোমে ‘বন্দি’ রোহিঙ্গা কিশোরের দাদা মহম্মদ এরশাদের। এ রাজ্যে এসে ভাই মহম্মদ জুবেরের সঙ্গে এক ঝলক দেখা করে ফের মেরঠে ফিরে গিয়েছেন তাঁর দাদা। তার পরে দরকারে তাঁর ভাইয়ের পরিচিতি যাচাই করতে দু’জনের দেহ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের আর্জি জানান এরশাদ। এর আগে উত্তরপ্রদেশে কোনও কোনও রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে পরিবারের কাছে ফেরাতে ডিএনএ পরীক্ষা করানোর কথা উঠেছে।মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সরকারি অত্যাচারেই পরিবার থেকে ছিটকে তিন বছর আগে এ দেশে হায়দরাবাদে কয়েক জন পরিচিতের কাছে চলে আসতে বাধ্য হয় এরশাদের ভাই। দু’বছর আগে আবার পরিবারের কাছে ফেরার চেষ্টা করতে গিয়ে হাওড়ায় রেলপুলিশের কাছে ধরা পড়ে সেই নাবালক। তার পর থেকে বাগনানের হোমেই রয়েছে জুবের। কিন্তু এখনও তার জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের উদ্বাস্তু কার্ড করানো যায়নি। কয়েক দিন আগে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমেও হোমে গিয়ে তার কার্ড করানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু সমাজকল্যাণ দফতরের অনুমতি ছাড়া তা করা যাবে না বলে হোম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘‘হোমের রোহিঙ্গা ছেলেমেয়েদের রাষ্ট্রপুঞ্জের উদ্বাস্তু কার্ড করানোর কাজ আগেই শুরু হয়েছিল। কিন্তু দিল্লির নির্দেশেই সব বন্ধ। এই নাবালকদের পরিবারের হাতে তুলে দিতে সমাধান সূত্র খোঁজা হচ্ছে।’’ সাধারণত, প্রয়োজনীয় নথি যাচাই করেই হোমের নাবালকদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া দস্তুর। কিন্তু সেই ছোটরা বিদেশি নাগরিক হলে সমস্যা হয়। জুবেরের দাদা এরশাদ আট মাস ধরে ভাইয়ের খোঁজে এ দেশে। মেরঠে দিনমজুরি করেন। ভাইকে পেতে ডিএনএ পরীক্ষা করাতে তিনিও রাজি।
শশী পাঁজার বক্তব্য, জুবেরের মতো ছোটরা হোমে তা-ও নিরাপদে আছে, এটুকু বলাই যায়। বাগনানের হোমের সম্পাদক কাকলি মণ্ডল বলেন, ‘‘জুবের আমায় মা বলে ডাকে। বলে আমায় দেখে নাকি ওর মাকেই মনে পড়ে। ছেলেটি নিরাপদে তার পরিবারের কাছে থাকতে পারলে তো সব দিক দিয়েই ভাল হয়।’’