সাঁতরাগাছি স্টেশনে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামলাতে আরও দু’টি ফুট ওভারব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা নিল রেল। দিনের ব্যস্ত সময়ে প্রবল অসুবিধা হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে দীর্ঘ দিন ধরেই নিত্যযাত্রীরা নতুন ফুট ব্রিজের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
কিন্তু, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি ফুটব্রিজের উপর পদপিষ্ট হয়ে দু’জনের মৃত্যুর পর শেষ পর্যন্ত হুঁশ ফিরল কর্তৃপক্ষের।দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “দু’টি ফুট ওভারব্রিজ ১২ ফুট চওড়া হচ্ছে। একটি খুব শীঘ্রই চালু হয়ে যাবে।” ১০ দিনের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবে। আলাদা করে তদন্ত শুরু করেছে রেলপুলিশও।
হাওড়া, শিয়ালদহের পরই সাঁতরাগাছি স্টেশন দিয়ে সব থেকে বেশি দূরপাল্লার ট্রেন ছাড়ে। লোকাল ট্রেনের সংখ্যাও আগের থেকে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ ৯ ফুট চওড়া ফুট ওভারব্রিজের উপর দিয়েই যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। মঙ্গলবারের ঘটনার পরেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি একফোঁটাও।
দেখুন ভিডিয়ো
বুধবার তখন সকাল ৮টা ৫ মিনিট।এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢুকল একটি দূরপাল্লার ট্রেন। মিনিট তিনেকের মধ্যে হুড়মুড়িয়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে লাগলেন যাত্রীরা।ঠিক সেই সময়ে তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢুকে পড়ে মেচেদা লোকাল। সিঁড়িতে ঠেলাঠেলি শুরু হয়ে যায়। অনেকে চার এবং পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্মে হাওড়ার ট্রেন ধরার জন্যে ছুটছেন। ইতিমধ্যেই মেচেদা লোকাল স্টেশন ছেড়েছে।
আরও পড়ুন: ‘যে হাতে ইট গাঁথতে শিখিয়েছি, সেই হাতেই ভাইয়ের লাশ ফিরিয়ে নিতে এসেছি’
এর মিনিট পাঁচেকের মধ্যে তিন নম্বরে ঢুকল পাঁশকুড়া লোকাল। এর পরের পরিস্থিতি বলার অপেক্ষা রাখে না। ঠিক একই ভাবে এক থেকে ছয় নম্বর প্ল্যাটফর্মে ডাউন ট্রেন ধরতে যাত্রীদের হিমশিম খেতে হয়।সোমবার সন্ধ্যায় দুর্ঘটনার পর এক থেকে নম্বর প্ল্যাটফর্মে আরপিএফ-এর কড়া নজরদারি ছিল। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গিয়েছে।
গ্রাফিক- তিয়াসা দাস
কিন্তু এই ছবি প্রায়ই দেখা যায় সাঁতরাগাছি স্টেশনে। সকালের দিকে অফিস টাইমে আরও পরিস্থিতি খারাপ হয়। বিকেল থেকে সন্ধ্যের সময়েও একই অবস্থা।রেল সূত্রে খবর, ফুট ওভারব্রিজে চওড়ায় মাত্র ৯ ফুট। সিঁড়িও আয়তনও তাই। দু’টি প্ল্যাটফর্মের জন্যে মাত্র একটি সিঁড়ি রয়েছে। তার মধ্যে দিয়েই ওঠা-নামা করতে হয় যাত্রীদের। স্বাভাবিক ভাবেই ফুটব্রিজে চাপ বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: নিয়ন্ত্রণ হারাল এসকালেটর, হুড়মুড়িয়ে একে অন্যের ওপর পড়লেন যাত্রীরা, দেখুন ভিডিয়ো
ওই ফুট ওভারব্রিজে যাত্রী সামলানোর দায়িত্ব আরপিএফের। রামরাজাতলা থেকে নলপুর স্টেশনের মধ্যে ডিউটি করেন মাত্র ৮০ জন আরপিএফ। ফলে সাঁতরাগাছি স্টেশনে যাত্রীদের ওঠা-নামার নজরদারির জন্যে যে পরিমাণ আরপিএফ কর্মী থাকা দরকার, তা সব সময় থাকে না। অনেক সময় কর্মীর অভাবে ১২ ঘণ্টা করে ডিউটি করতেও হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আরপিএফ কর্মী বলেন, “নিচু তলার অফিসারদের কথা সব সময় শোনা হয় না। যাত্রীদের যেতে কেন সমস্যা হচ্ছে, খোঁজখবর নিলে, এই দিন আর দেখতে হত না। বহু দিন ধরেই এমন অবস্থা হচ্ছে।”
(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলায় খবর জানতে পড়ুন আমাদের রাজ্য বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy