স্কুলের পরিকাঠামো ভালো ভাবে খতিয়ে দেখে সরকারকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রিপোর্ট জমা করতেই হবে। এ বার এই দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করতে নতুন নিয়োগে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক এই পদের নাম ‘এডুকেশন সুপারভাইজার’। নতুন এই নিয়োগের জন্য ইতিমধ্যেই দফতরের অনুমোদন মিলেছে বলে জানিয়েছেন স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা।
বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, সর্বশিক্ষা অভিযানের শেষ রিপোর্ট ও বিভিন্ন অভিযোগ খতিয়ে দেখে রাজ্য সরকার মনে করছে, কোনও প্রকল্প এবং তার বাস্তবায়নের মধ্যে বিস্তর ফারাক থাকছে। সরকার স্কুলশিক্ষার উন্নতিতে যে সব পদক্ষেপ করতে চাইছে, সর্বস্তরে তা পৌঁছচ্ছে না বলে মনে করছে প্রশাসন। তাই মিড-ডে মিল, সর্বশিক্ষা অভিযান এবং রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযানের মতো সরকারি প্রকল্পগুলির সুফল ছাত্রছাত্রীরা আদৌ পাচ্ছে কি না, তা দ্রুত জানতে এই পদক্ষেপ।
স্কুলশিক্ষা দফতরের এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানাচ্ছেন, রাজ্যের সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলি ৭৩১টি সার্কেলের অন্তর্ভুক্ত। প্রতিটি সার্কেলে গড়ে ২০-২৫টি করে স্কুল রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, ওই সার্কেলের স্কুলগুলি পরিদর্শন করার কথা স্কুল ইনস্পেক্টরদের (এসআই)। অভিযোগ, এসআই-এর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম হওয়ায় সেই স্কুল পরিদর্শন ব্যবস্থা শিকেয় উঠেছে। কোনও কোনও জেলায় এক জন এসআই-এর উপরেই দু’তিনটি করে সার্কেলের স্কুল
পরিদর্শনের দায়িত্বও এসে বর্তায়। ফলে সময় মতো পরিদর্শন তো হয়ই না, এমনকি রিপোর্ট পৌঁছতে বছর পেরিয়ে যায়। এই পরিস্থিতির বদল ঘটাতেই নতুন নিয়োগের সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের।
স্কুলশিক্ষা দফতরের ওই কর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে যে, প্রতিটি সার্কেলে এক জন করে এডুকেশন সুপারভাইজার নিয়োগ করা হবে। তাঁরা প্রতি মাসে রিপোর্ট দেবেন ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক (বিডিও) এবং মহকুমা শাসকদের (এসডিও) কাছে। জেলা শাসকের দফতর ঘুরে সেই রিপোর্ট সরাসরি আসবে স্কুলশিক্ষা দফতরে।’’ প্রতি স্কুলে বছরে ছ’বার করে পরিদর্শনে যাবেন এক জন সুপারভাইজার। তাঁদের কাজ হবে মিড-ডে মিল, শ্রেণি কক্ষ, শৌচালয়, পানীয় জল, বিদ্যুৎ, স্কুলভবন, খেলার মাঠ-সহ স্কুলের সামগ্রিক অবস্থার রিপোর্ট তৈরি করা। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরবর্তী কালে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে রাজ্য সরকার।
কিন্তু কাদের এবং কী ভাবে এই পদে নিয়োগ করা হবে? ওই কর্তা জানান, এক বছরের জন্য কোনও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হতে পারে। যদিও এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার সিদ্ধান্ত এখনও পাকা না হওয়ায় এ নিয়ে আরও বিশদে কিছু বলতে রাজি হননি ওই উচ্চপদস্থ কর্তা।
এ দিকে, এই নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পিএসসির মাধ্যমে আরও এসআই নিয়োগ না করে, কেন অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক কর্মী নেওয়া হচ্ছে? মূলত এটাই প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষামহলের একাংশে। এ নিয়ে শিক্ষক নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘এ ধরনের কাজে এঁদের যোগ্যতা এবং পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা রয়েছে কি না, সেটাও জানা খুব জরুরি। তা না হলে এমন নিয়োগ শিক্ষা ব্যবস্থার হিতে বিপরীত করতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy