Advertisement
E-Paper

নীল তিমি থেকে মশা, সব উপদ্রব রুখতেই স্কুলে কমিটি

এত সব হাঁ-মুখ বিপদ থেকে থেকে ছোটদের বাঁচাবে কে? সুরক্ষার পথ খুঁজতে স্কুলে স্কুলে কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর। শুধু শিক্ষক বা অভিভাবকই নয়, কমিটিতে পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিদেরও রাখতে বলা হয়েছে সেই কমিটিতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:৩৩
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অনলাইন গেমের ছুতোয় ছুটে আসছে বিপজ্জনক ‘ব্লু হোয়েল’ বা নীল তিমি। স্কুলের শৌচাগারে ওত পাতছে স্কুলেরই কর্মী বা বাসকর্মীর যৌনবিকৃতি। আবার ক্লাসঘর থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের আশেপাশে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার বিপদ বহন করে বংশ বিস্তার করে চলেছে মশা।

এত সব হাঁ-মুখ বিপদ থেকে থেকে ছোটদের বাঁচাবে কে? সুরক্ষার পথ খুঁজতে স্কুলে স্কুলে কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর।

শুধু শিক্ষক বা অভিভাবকই নয়, কমিটিতে পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিদেরও রাখতে বলা হয়েছে সেই কমিটিতে। সম্প্রতি স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে সব জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে এই মর্মে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, স্কুলে পডুয়াদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে পৃথক কমিটি গড়তে হবে। প্রাথমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষককে কমিটির চেয়ারম্যান করে দু’জন অভিভাবক-প্রতিনিধি, এক জন শিক্ষিকা (স্কুলে যদি কোনও শিক্ষিকা না-থাকেন তবেই শিক্ষককে নেওয়া যাবে) এবং পুলিশ বা স্বাস্থ্য দফতর কিংবা দমকলের প্রতিনিধিদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের ‘সেফটি সিকিওরিটি মনিটরিং কমিটি’ গড়তে হবে। উচ্চ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কমিটিতে রাখতে হবে স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতিকেও।

স্কুল ক্যাম্পাসকে শিশুদের শরীর ও মনের পক্ষে পুরোপুরি নিরাপদ করে তুলতে বলা হয়েছে সরকারি নির্দেশিকায়। বলা হয়েছে, স্কুলে পানীয় জল থেকে শুরু করে ‘মিড-ডে মিল’-এর সুষ্ঠু পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। ছোটদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষিত করার উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।

শিক্ষা শিবিরের অভিমত, স্কুল-কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব এখন বহুমুখী। মিড-ডে মিলের খাবার রান্না থেকে পরিবেশন স্বাস্থ্যকর প্রক্রিয়ায় হচ্ছে কি না, তা যেমন খতিয়ে দেখতে হবে। সমতুল দায়িত্ব নিয়ে স্কুলের পানীয় জলের নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কোনও পরীক্ষাগারে। সেই সঙ্গে স্কুল-চত্বরে সিসিটিভি-র ক্যামেরা বসানো, ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য পৃথক শৌচালয় গড়ে তোলার কথাও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়। একই ভাবে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্কুলবাসের চালক, কন্ডাক্টর, চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত শিক্ষাকর্মীদের নাম-পরিচয় স্থানীয় থানার মাধ্যমে ‘যাচাই’ করতে হবে বলে জানান বিকাশ ভবনের এক কর্তা।

সম্প্রতি গুরুগ্রামে স্কুল-চত্বরেই দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার নিয়ে গোটা দেশে তোলপাড় চলে দীর্ঘদিন। তার পর থেকেই খুদে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে আরও সক্রিয়া হয় রাজ্য সরকার। কয়েক মাস আগেই নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করে, সিসিটিভি-র ক্যামেরা বসিয়ে স্কুলে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা পুলিশ।

এ বার একই ধরনের সরকারি নির্দেশ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে স্কুল প্রশাসন। এক জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই) বলেন, ‘‘সব ডিআই-কে এই নির্দেশ দিয়েছেন দফতরের সচিব। সংশ্লিষ্ট সব নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে কি না, তা জানিয়ে রিপোর্ট দিতে হবে। ফলে অবিলম্বে কমিটি গড়ার বিষয়টি আবশ্যিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’

তবে নির্দেশ নিছক নির্দেশেই থেকে যাবে কি না, সেই প্রশ্ন তুলছে শিক্ষা মহলের একাংশ। তাদের বক্তব্য, অধিকাংশ স্কুল তো চলছে বৈধ পরিচালন সমিতি ছাড়াই। তার উপরে নতুন এই কমিটি সর্বত্র গড়া হবে কি না, গড়া হলেও সেই সব কমিটি কতটা সক্রিয় হবে, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই। ‘‘উদ্যোগটি ভাল। কিন্তু এই ধরনের নির্দেশ পালন করার মতো পরিকাঠামো আমাদের রাজ্যের অনেক স্কুলেই নেই,’’ বলেন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল।

Education Blue Whale Dengue Student Security স্কুলশিক্ষা দফতর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy