Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Schools

Schools Reopening: সময়ে সংস্কার করা নিয়ে কারও ধন্দ, প্রত্যয়ী কেউ

বিশেষজ্ঞ ডাক্তারেরা মনে করিয়েছেন, ফের স্কুল চালু হওয়ার গোড়া থেকেই নজর দিতে হবে স্বাস্থ্যবিধি মানায়।

ক্যানিংয়ে নিউ ইন্টিগ্রেটেড গভর্নমেন্ট স্কুলের দেওয়ালে আগাছা। উত্তর ২৪ পরগনার দুলদুলি মঠবাড়ি ডি এন হাইস্কুলের ভবনে খসে পড়েছে প্লাস্টার।

ক্যানিংয়ে নিউ ইন্টিগ্রেটেড গভর্নমেন্ট স্কুলের দেওয়ালে আগাছা। উত্তর ২৪ পরগনার দুলদুলি মঠবাড়ি ডি এন হাইস্কুলের ভবনে খসে পড়েছে প্লাস্টার। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা ও নবেন্দু ঘোষ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৪৩
Share: Save:

আগাছার রমরমা, চেয়ার-বেঞ্চ বেহাল, দেওয়াল-ছাদের পলেস্তারা খসে পড়া তো বটেই, করোনা-কালে সাপের বাসা, বাদুড়ের আস্তানাও হয়েছে রাজ্যের কোনও কোনও স্কুলে। সংস্কার করে, স্কুলকে ১৬ নভেম্বরের আগে নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়াদের পড়াশোনা চালানোর মতো অবস্থায় কতটা আনা যাবে তা নিয়ে ধন্দে অনেকে। তবে আত্মবিশ্বাসীরও অভাব নেই। পড়ুয়া এবং অভিভাবকেরা সিদ্ধান্তটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারেরা মনে করিয়েছেন, ফের স্কুল চালু হওয়ার গোড়া থেকেই নজর দিতে হবে স্বাস্থ্যবিধি মানায়।

উত্তরবঙ্গের সব জেলায় স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নের টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকায়, সময়ে তা শেষ করা নিয়ে সংশয়ে একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। শিলিগুড়ির একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “এ দিনই ব্লক প্রশাসন টেন্ডার-প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সময়ে কাজ শেষ হবে কি না, কে জানে!’’

উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূল লাগোয়া এলাকার অনেক স্কুলে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’-এর জেরে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। প্রশাসন স্কুলগুলির কাছে সংস্কারের জন্য কত টাকা প্রয়োজন জানতে চায়। সে হিসেব দিলেও, অনেক স্কুলের হাতে টাকা না আসায় সংস্কার থমকে রয়েছে বলে দাবি। বীরভূমের রামপুরহাটের একটি স্কুলের প্রধানশিক্ষকের আবার দাবি, অধিকাংশ কম্পিউটার ধুলো জমে অচল। ইলেকট্রিকের সুইচবোর্ডও ভেঙেছে। বরাদ্দ যা এসেছে, তাতে সব কাজ সময়ে মেটানো সম্ভব নয়।

পুজোর আগে পূর্ব বর্ধমানের ৩৬০টি স্কুলের জন্য প্রায় সাত কোটি ৮২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে শিক্ষা দফতর। সমস্ত বিডিও এবং পুরসভার নির্বাহী আধিকারিকদের চলতি মাসের মধ্যে সে টাকায় সংস্কারের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছিল। প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের দাবি, এখনও পুরসভা বা ব্লক অনেক স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তবে সর্বশিক্ষা দফতরের জেলা প্রকল্প আধিকারিক মৌলি সান্যাল বলেন, ‘‘অনেক স্কুল পুজোর আগে নথির কাজ এগিয়ে রেখেছে। সমস্যা হবে না।’’

সময়ে স্কুল খোলার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী অনেকেই। নদিয়ার কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন বিশ্বাসের কথায়, “মিড-ডে মিল বা বিভিন্ন ক্লাসের নিয়মিত ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’-এর জন্য অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের স্কুলে আসতেই হচ্ছে। ফলে, স্কুল পোড়োবাড়ি হয়ে আছে, ভাবার কারণ নেই।” স্কুল খোলা নিয়ে তৎপরতা তুঙ্গে হুগলির সাত শতাধিক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে। দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে স্কুলে-স্কুলে জীবাণুনাশের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

মেদিনীপুরের অভিজিৎ দাস, পারমিতা মণ্ডল, উত্তরবঙ্গের কৌশিক ভট্টাচার্য, প্রিয়া দাস চৌধুরীর মতো অভিভাবকেরা বলছেন, ‘‘কিছুটা পড়াশোনা অনলাইনে হয়েছে। তবে বোর্ডের পরীক্ষার আগে, শিক্ষা ব্যবস্থা সচল রাখা জরুরি। স্কুল না খুললে, তা সম্ভব হত না।’’ পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের নবম শ্রেণির ছাত্রী পূজা চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘স্কুল খোলা দরকার ছিল।”

রাজ্য কোভিড মনিটরিং কমিটির পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার কো-অর্ডিনেটর সমরেন্দ্রকুমার বসুর পরামর্শ, ‘‘স্কুল খুললে মাস্ক পরা, হাতশুদ্ধি ব্যবহার করতেই হবে। স্কুলে নিয়মিত জীবাণুনাশক ছড়াতে হবে। এক বেঞ্চে দু’জনকে বসানো গেলে, ভাল। আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য প্রতি স্কুলে অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখলে ভাল হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Schools COVID19 School Reopening
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE