Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বাংলায় দল সামলাতে বার্তা সনিয়া গাঁধীর

পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের ভাঙনে উদ্বিগ্ন সনিয়া গাঁধী চাইছেন, জড়তা ঝেড়ে ফেলে আন্দোলনের পথেই থাকুক দল। বিহার, কর্নাটক, পঞ্জাবের মতো রাজ্যে বিধানসভা উপনির্বাচনের ফল যে দিন স্বস্তির বার্তা বয়ে নিয়ে এসেছে ১০ জনপথে, সে দিনই বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন কংগ্রেস সভানেত্রী সবিস্তার মতামত নিলেন বর্ষীয়ান নেতা সোমেন মিত্রের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৪ ০২:৫২
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের ভাঙনে উদ্বিগ্ন সনিয়া গাঁধী চাইছেন, জড়তা ঝেড়ে ফেলে আন্দোলনের পথেই থাকুক দল। বিহার, কর্নাটক, পঞ্জাবের মতো রাজ্যে বিধানসভা উপনির্বাচনের ফল যে দিন স্বস্তির বার্তা বয়ে নিয়ে এসেছে ১০ জনপথে, সে দিনই বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন কংগ্রেস সভানেত্রী সবিস্তার মতামত নিলেন বর্ষীয়ান নেতা সোমেন মিত্রের।

তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা থেকে রাজ্যের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করারই চেষ্টা চালিয়েছেন সোমেনবাবু। তাঁর মতে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রদেশ কংগ্রেসের মধ্যে সমন্বয় বাড়িয়ে আরও কর্মসূচি নিতে হবে এবং শাসক দলের সন্ত্রাসের অভিযোগ এলে আক্রান্ত এলাকায় নেতাদের যেতে হবে। যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে তাঁর জায়গায় নতুন কাউকে আনার প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত সম্পন্ন হয়, সেই আর্জিও সনিয়ার কাছে জানিয়ে এসেছেন সোমেনবাবু। সভানেত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে সোমবার সোমেনবাবু বলেছেন, “উনি চিন্তিত ছিলেন। পরিস্থিতির কথা তাঁর কাছে ব্যাখ্যা করেছি। বেশ কিছু ব্যাপারে তিনি সহমত পোষণ করেছেন।”

ঘটনাচক্রে, এ দিনই কলকাতায় এসে যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় পর্যবেক্ষকেরা পরিস্থিতির সরেজমিন খতিয়ান নিয়েছেন। যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি তথা প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ মান্নান হোসেনের পুত্র সৌমিক হোসেন কয়েক দিন আগেই সদলবল যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। যুব কংগ্রেসের মতো গুরুত্বপূর্ণ শাখা সংগঠনের শীর্ষ পদ যাতে বেশি দিন ফাঁকা না থাকে, তার জন্যই নতুন মুখের খোঁজ শুরু হয়েছে।

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী অবশ্য এ দিনও ফের বুঝিয়ে দিয়েছেন, যুব কংগ্রেস বা সার্বিক ভাবে দল থেকে নেতা-বিধায়কদের ছেড়ে যাওয়ার ঘটনায় তিনি বিশেষ বিচলিত নন। গোটা যুব কংগ্রেসটাই তাঁদের দলে মিশে গিয়েছে বলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় যে দাবি করেছিলেন, তাকে একেবারেই নস্যাৎ করে দিয়েছেন প্রদেশ সভাপতি। পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন মুকুলবাবুর অতীত নিয়েও। দুর্গাপুরে দলের এক কর্মিসভায় এ দিন প্রদেশ সভাপতি এ-ও জানিয়েছেন, রাজ্যের ৩৬টি লোকসভা কেন্দ্রের যুব সভাপতি এসএমএসের মাধ্যমে তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন, তাঁরা কংগ্রেসেই আছেন।

কর্মিসভায় এ দিন অধীর দলের সৈনিকদের বার্তা দিয়েছেন, “কংগ্রেসটা শেষ হয়ে যায়নি! আগেও অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে দল গিয়েছে। সুতরাং, ভেঙে পড়ার কিছু নেই।” সভার শুরুতে এ দিন প্রশ্নোত্তর-পর্বের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে কংগ্রেসের কর্মীরা সরাসরি প্রদেশ সভাপতিকে কিছু প্রশ্ন করেন। এক প্রশ্নকর্তা জানতে চান, যে সব কংগ্রেস কর্মীরা দল ছেড়ে গিয়েছেন, তাঁদের আর কখনও দলে নেওয়া হবে কি না? অধীর জানান, তিনি সভাপতি থাকতে সেই রকম কাউকে দলে নেওয়া হবে না!

সোমেনবাবুর পাশাপাশি দলের হাইকম্যান্ডের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানস ভুঁইয়াও। পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক সি পি জোশীর সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় দফার আলোচনা হয়েছে এ দিন। এক বার করে জোট আবার একা চলা, এই রকম করতে গিয়ে ধীরে ধীরে কী ভাবে কংগ্রেসকে দিশাহীনতা গ্রাস করেছে, তার সবিস্তার তথ্য পেশ করেছেন মানসবাবু। তাঁর অনুপস্থিতিতেই আজ, মঙ্গলবার বিধানসভায় দলের বিধায়কদের নিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বসছেন অধীর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sonia gandhi pradesh congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE