বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে তৃণমূলের বিধায়ক-পদ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হল। বিধানসভায় এসে সোমবার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে নিজের ইস্তফার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন শুভেন্দু। স্পিকারও সেই ব্যাখ্যায় ‘সন্তুষ্ট’। পদত্যাগের পর্ব মিটিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার আগে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের ঘরে অনেকটা সময় কাটিয়ে গিয়েছেন শুভেন্দু।
বিধানসভায় নিজে এসেই গত সপ্তাহে বিধায়ক-পদ থেকে ইস্তফার চিঠি সচিবের কাছে জমা দিয়েছিলেন শুভেন্দু। স্পিকার সে দিন বিধানসভায় ছিলেন না। তাঁকে পদত্যাগপত্র পাঠানো হয়েছিল ই-মেলে। দুই চিঠির মধ্যে কিছু অসঙ্গতির কথা উল্লেখ করে নন্দীগ্রামের বিধায়ককে এ দিন দেখা করতে বলেছিলেন স্পিকার। বিধানসভায় সেই আলোচনার পরে এ দিন শুভেন্দু বলেন, ‘‘স্পিকার জানতে চেয়েছিলেন, পদত্যাগের চিঠি আমি নিজে লিখেছি কি না, কেউ আমাকে দিয়ে চাপ দিয়ে লিখিয়েছে কি না। আমি বলেছি, আমি স্বেচ্ছায় নিজের হাতে চিঠি লিখে হস্তাক্ষর করে জমা দিয়েছি। স্পিকার তা মেনে নিয়েছেন।’’ স্পিকার বিমানবাবুও জানিয়েছেন, শুভেন্দুর পদত্যাগ গৃহীত হয়েছে।
স্পিকারের ঘর থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু এ দিন বিরোধী দলনেতা মান্নানের ঘরে গিয়ে বসেন। রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য নির্ধারিত সময় আসার আগে মাঝের সময়টা তিনি ওই ঘরেই কাটিয়েছেন। পরে সেই ঘরে আসেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীও। সকলেই এই মোলাকাতকে ‘সৌজন্যমূলক’ আখ্যা দিলেও বর্তমান ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষিতে এই ঘরোয়া বৈঠক রাজনৈতিক শিবিরের নজর কেড়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা রাজনীতিতে শুভেন্দু ছিলেন তৎকালীন সিপিএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠের প্রবল বিরোধী। বিজেপি ঘুরে সেই লক্ষ্মণবাবু যখন কংগ্রেসে আসেন, তার তীব্র বিরোধিতা করেছেন মান্নান এবং শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও পুরনো। এই সূত্রেই এ দিন বেশ কিছু ক্ষণ আলোচনা চলে বিরোধী নেতার ঘরে। শুভেন্দুর কথায়, ‘‘বহু বছর আগে থেকে আমাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক। এখানে রাজনীতির কথা বলতে আসিনি।’’