Advertisement
১৮ মে ২০২৪

ছাড়ব না এক ইঞ্চিও, বার্তা সূর্যকান্তের

আগেই বিমান বসু হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, শাসক দল ভোট লুঠ করতে গেলে আগুন জ্বলবে! এ বার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও জানিয়ে দিলেন, পুরভোটে এক ইঞ্চি জমিও তাঁরা ছেড়ে দেবেন না! বিমানবাবু-সূর্যবাবুদের ধারাবাহিক বক্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে, সীমিত সাংগঠনিক শক্তি নিয়েও এ বার পুরভোটে প্রতিরোধের পথেই যেতে চাইছে বামেরা। পঞ্চায়েত ভোটের চেয়ে তাদের ভূমিকা এ বার বেশি আক্রমণাত্মক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১০
Share: Save:

আগেই বিমান বসু হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, শাসক দল ভোট লুঠ করতে গেলে আগুন জ্বলবে! এ বার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও জানিয়ে দিলেন, পুরভোটে এক ইঞ্চি জমিও তাঁরা ছেড়ে দেবেন না! বিমানবাবু-সূর্যবাবুদের ধারাবাহিক বক্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে, সীমিত সাংগঠনিক শক্তি নিয়েও এ বার পুরভোটে প্রতিরোধের পথেই যেতে চাইছে বামেরা। পঞ্চায়েত ভোটের চেয়ে তাদের ভূমিকা এ বার বেশি আক্রমণাত্মক।

পুরভোটের আগে শনিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে সূর্যবাবু সাফ বলেছেন, নির্বাচন কমিশন বা কেন্দ্রীয় বাহিনী কোনও কিছুর ভরসাতেই তাঁরা বসে থাকবেন না। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের বক্তব্য, ‘‘আমরা সংগঠিত মানুষের উপরে নির্ভর করছি। ভোটের দিন ভোট লুঠের চেষ্টা হলে বাম কর্মীরা কেউ এক ইঞ্চি জমিও ছা়ড়বেন না। শুধু বাম কর্মীরাই নন, বামেদের বাইরে সাধারণ মানুষের কাছেও একই আবেদন করছি।’’ শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুললেও পঞ্চায়েত ভোটের চেয়ে বেশি সাহস দেখিয়ে এ বার বাম প্রার্থীরা ময়দানে আছেন। সূর্যবাবুরও ব্যাখ্যা, মানুষ তাঁদের অভিজ্ঞতায়
যা দেখছেন, সেইমতো প্রতিবাদ করছেন। তা থেকে বাম কর্মী-সমর্থকদেরও মনোবল বাড়ছে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য পাল্টা দাবি, নির্বাচনে সুবিধা হবে না বুঝেই বামেরা বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে।

বাম সূত্রের খবর, কলকাতায় পুরভোটের দিন তৃণমূলের সম্ভাব্য আক্রমণের আশঙ্কা করে বেশ কিছু সাংগঠনিক পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা করে রেখেছে সিপিএম। কিছু জায়গায় যেমন বেশি সংখ্যায় মহিলা পোলিং এজেন্ট রাখার চেষ্টা হচ্ছে। যাতে মহিলাদের উপরে আক্রমণ হলে তুলনায় বেশি প্রতিক্রিয়া হয় মানুষের মধ্যে। আবার কিছু জায়গায় পোলিং এজেন্ট করা হচ্ছে দলের লোকাল কমিটির সদস্যদের মধ্যে থেকেই। যাতে তাঁরা এলাকার ভোটারদের সহজে চিনতে পারেন, আবার শাসানির মুখে তাড়াতাড়ি হালও না ছেড়ে দেন। সাংগঠনিক এই প্রস্তুতি চলার ফাঁকেই কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা রাখতে ক্রমাগত বার্তা দিয়ে চলেছেন সূর্যবাবুরা।

এরই মধ্যে এ দিনও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন পুর-এলাকায় অশান্তির অভিযোগ অব্যাহত। শুক্রবার রাতে কল্যাণী পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় ও তিন তৃণমূল সমর্থকের বাড়িতে আগুন লাগানোরও অভিযোগ উঠেছে বিজেপি-র বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় এ দিন ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী বিপ্লব দে-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে তৃণমূল। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। নদিয়ার জেলা পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

হুগলির যে বাঁশবেড়িয়ায় এত দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে গোলমালের অভিযোগ তুলছিলেন বিরোধীরা, এ বার সেই এলাকাতেই এক তৃণমূল প্রার্থীর বাড়িতে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধে! শুক্রবার রাতে বাঁশবেড়িয়ার বকুলতলার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অরিজিতা শীলের বাড়িতে গুলি চলে বলে অভিযোগ। একটি গুলি বাড়ির দরজায় লাগে। তবে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তৃণমূলের বিরুদ্ধেও হামলার অভিযোগ থেমে নেই। বাঁকুড়ার সোনামুখীতে চায়ের দোকান থেকে টেনে কংগ্রেসের দুই প্রার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার রাতে পুরুলিয়া শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি-র দু’টি অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস দুষ্কৃতীরা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই রাতেই যমুনাবাঁধ এলাকায় কংগ্রেসের পতাকা-ফেস্টুন, ব্যানার পুড়িয়ে পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE