কেন্দ্রীয় বানিজ্য মন্ত্রকের টি (মার্কেটিং) কন্ট্রোল অ্যামেন্ডমেন্টে আশার আলো দেখছে জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। ওই নির্দেশ মেনে বটলিফ কারখানায় উৎপাদিত চায়ের ৭০ শতাংশ নিলাম কেন্দ্রের মাধ্যমে বিক্রি হবে, এমন প্রত্যাশা নিয়ে আগামী জুন মাস থেকে জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র চালু করতে উদ্যোগী হলেন কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার নিলাম কেন্দ্রের কর্তারা জেলা প্রশাসন, চা পর্ষদ কর্তা, চা উৎপাদক সংস্থা, ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে ওই সিদ্ধান্ত নেন। যদিও তার আগে চা পর্ষদ শিলিগুড়িতে বটলিফ কারখানা মালিক, ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিয়ে ফের সভা করবে। ওয়্যার হাউসগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে। পৃথকভাবে নিলাম কেন্দ্র পরিচালন কমিটির কর্তারা আলোচনায় বসবেন।
জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক বিশ্বনাথন বলেন, “নিলাম কেন্দ্রটি চালু করার জন্য ভাল আলোচনা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমস্ত জটিলতা কাটবে।” নিলাম কেন্দ্র পরিচালন কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান পুরজিৎ বক্সি বলেন, “জুন মাস থেকে চা নিলামের কাজ শুরু করার চেষ্টা চলছে। তার আগে চা পর্ষদ শিলিগুড়িতে বটলিফ কারখানা মালিক, ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিয়ে সভা করবে। ওয়্যার হাউসগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে। সব দিক দেখে পুরো দমে কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে।” নিলাম কেন্দ্রের সচিব নিরঞ্জনকুমার বসু জানান, গত ১৫ এপ্রিল জারি করা বানিজ্য মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী বটলিফ কারখানার ৭০ শতাংশ চা নিলাম কেন্দ্রের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। এটা হলে জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র চালাতে বেগ পেতে হবে না। এদিনের সভায় ভারতীয় চা পর্ষদের অতিরিক্ত অধিকর্তা চন্দ্রশেখর ভট্টাচার্য ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন, চারটি ব্রোকার হাউস, ক্রেতা সংস্থার প্রতিনিধিরা।
নিলাম কেন্দ্রটি সচল করতে কেন বিক্রয় কর ছাড়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না এদিনের আলোচনায় জানতে চান কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা। অতিরিক্ত জেলাশাসক তাঁদের আশ্বস্ত করে জানান, বিক্রয় কর ছাড়ের জন্য জেলা প্রশাসনের তরফে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ওই বিষয়ে ফের খোঁজ নেওয়া হবে। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী জানান, ২০০৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নিলাম কেন্দ্রটি চালু হওয়ার পর থেকে সমস্যায় ধুঁকছে। দেশের প্রতিটি নিলামকেন্দ্র সচল করার জন্য প্রথম কয়েক বছর বিক্রয় কর ছাড়ের সুযোগ দেওয়া হয়। জলপাইগুড়ি ওই সুযোগ থেকে বঞ্চিত থেকেছে। যে কারণে এখানে চায়ের যোগান কমেছে। নিলাম কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, শুরুতে ৩৫ দিন নিলাম হলেও ২০০৮-২০০৯ সালে সেটা নেমে দাঁড়ায় ৮ টিতে। চায়ের যোগান কমে যাওয়ায় ২০০৮-২০০৯ সালে নিলাম কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। ২০১২ সালে ফের নিলাম চালু হলেও দুর্যোগ কাটেনি। ২০১৪-২০১৫ সালে মাত্র ১৫ দিন নিলাম হয়েছে। ওই পরিস্থিতিতে গত বছর ৫ নভেম্বর নিলাম বন্ধ হয়ে যায়। সংস্থা পরিচালন কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, “সমস্ত সমস্যার কথা মাথায় রেখে এদিনের সভায় ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। শুধু বিক্রয় কর নয়। সেস ছাড়ের কথাও উঠেছে। আমরা আশাবাদী কেন্দ্রীয় বানিজ্য মন্ত্রকের নির্দেশ কার্যকরী হবে। তা হলে আর ফিরে তাকাতে হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy