মাসের ১০ তারিখ হয়ে গেলেও মুর্শিদাবাদ জেলার প্রাথমিক স্কুলের অন্তত অর্ধেক শিক্ষক বেতন পাননি। তা নিয়ে শিক্ষক মহলে শুরু হয়েছে নানান জল্পনা ও আতঙ্ক। কেউ বলছেন, ‘‘জেলাটা তো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চিরশত্রু’ প্রদেশে কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর ‘খাসতালুক’! তাই বলেই বুঝি এ ভাবে শিক্ষা পেতে হচ্ছে শিক্ষকদের।’’ বেতন না পাওয়া শিক্ষকদের অন্য অংশের বক্তব্য ‘‘ক্লাব গুলিকে খয়রাতি দিতে সরকারের আর্থিক হাল খারাপ। তাই বেতনে টান পড়েছে।’’ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি দেবাশিস বৈশ্য অবশ্য বলেন, ‘‘গত ২-৩ মাস থেকে অনলাইনে বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। সেই সিস্টেমে সমস্যা হয়েছে। তা মেরামতি চলছে। এর জন্য একটু মাইনে পেতে দেরি হচ্ছে। তবে আগামী বুধবারের মধ্যে শিক্ষকরা বেতন পাবেন। যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে অন্য ক্ষেত্রের সরকারি কর্মিদের অনেকেই এপ্রিল মাসের বেতন এখনও পাননি।’’
জেলায় ৪১টি সার্কেলে ৩৩২৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও পার্শ্ব-শিক্ষক রয়েছেন প্রায় ১২ হাজার। সিপিএম পরিচলিত প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির অন্যতম সম্পাদক সুশোভন খান বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষকরা মাসের শেষ সপ্তাহের আগে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেন। সেই রিপোর্ট থেকে বিল তৈরি করে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ থেকে সেই বিল যায় রাজ্য অর্থ দফতরে। সেখানের অনুমোদনের পর জেলা ট্রেজারি অফিসে বিল আসে।’’ দেবাশিসবাবু জানান, প্রচলিত আগের সব ধাপ অতিক্রমের পর ট্রেজারি অফিস বিল পাঠাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকে। আরবিআই-এর নির্দেশে শিক্ষকদের অ্যাকাউন্টে বেতন ঢুকবে। নয়া এই পদ্ধতি মেনে হাজার পাঁচেক শিক্ষক বেতন পেয়েছেন। তারপর যান্ত্রিক সমস্যায় বাকিদের বেতন পেতে দেরি হচ্ছে।
কংগ্রেস পরিচালিত পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অতীশ সিংহ বলেন, ‘‘হাজার সাতেক শিক্ষকশিক্ষিকা বেতন না পেয়ে ফাঁপরে পড়েছেন। আমিও তাঁদের মধ্যে একজন।’’ এপ্রিলের বেতন না পাওয়া শিক্ষক কৃষ্ণেন্দু ঘোষ বলেন, ‘‘মাসের ১০ দিন হয়ে গেল। বেতন না পাওয়ায় অনেকেই আর্থিক অনটনে ভুগছেন। তা ছাড়াও কী কারণে বেতন পেতে দেরি হচ্ছে, তা সরকারি ভাবে জানানো না হওয়ায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের রক্তচাপ দ্রুত বাড়ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy