গৌতম দেব।
কলকাতার ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটল উত্তর ২৪ পরগনায়! সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশ কারাটদের লাইনকে তুলোধোনা করে কংগ্রেস-সহ ধর্মনিরপেক্ষ সব শক্তিকে একজোট করার পক্ষে তীব্র সওয়াল করল গৌতম দেবের
জেলা। সরাসরি নাম না উঠলেও ধারালো আক্রমণের মুখে পড়তে হল স্বয়ং কারাটকেও!
সপ্তাহ তিনেক আগে কলকাতাতেই কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভোটাভুটি করে কারাটেরা বুঝিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন, কংগ্রেসের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা অপ্রত্যক্ষ কোনও সমঝোতা চলবে না। কেন্দ্রীয় কমিটির সেই বৈঠকেই গৌতমবাবু সওয়াল করেছিলেন, দলের রাজনৈতিক লাইন চূড়ান্ত করার আগে নিচু তলার নেতা-কর্মীদের মতামত যাচাইয়ের সুযোগ দেওয়া হোক। কারাটেরা সেই আর্জি মানেননি। এ বার নিজের জেলার সম্মেলনে গৌতমবাবুরা বুঝিয়ে দিলেন, বিজেপি এবং তৃণমূলের জোড়া বিপদের সামনে ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক জোটকেই তাঁরা বাঁচার রাস্তা মনে করছেন।
বরানগরের রবীন্দ্র ভবনে (যার নাম হয়েছে জ্যোতি বসু নগর) সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্মেলনে তিন দিন ধরে চর্চা হয়েছে দলের রাজনৈতিক লাইন সংক্রান্ত বিতর্ক নিয়েই। উপস্থিত আছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসু, সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেবের মতো রাজ্য নেতৃত্ব। বিতর্কে অংশ নিয়ে জেলার এক প্রতিনিধি তীব্র কটাক্ষের সুরে বলেছেন, দলের একটা পাঁজি আছে। সেখানে লেখা আছে, ৮ জুন বর্ষা আসবে। এ বার ৭ জুন বৃষ্টি নামতে ছাতা খোলা যাচ্ছে না! কারণ, পাঁজিতে বলা নেই ৭ জুন বৃষ্টি এসে গেলে কী করতে হবে!
আরও পড়ুন:
গৌতমের বিকল্প মুখ হতে এগিয়ে বসিরহাটের মৃণাল
বিরোধীর মতে লুম্পেনরাজ, নস্যাৎ করল তৃণমূল
জেলারই আর এক প্রতিনিধির সংশয়, কেন্দ্রীয় কমিটিতে যাঁরা সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে ‘বাস্তবসম্মত’ লাইনকে খারিজ করলেন, তাঁদের হাতে দলের ভার তখন খাকলে ১৯৭৭ সালে সিপিএম কি আদৌ রাজ্যে সরকারে যেতে পারতো? তখন হয়তো বলা হতো, সরকারে যাওয়ার চেয়ে শ্রেণি সংগ্রামের বিকাশ বেশি জরুরি! উত্তর ২৪ পরগনার এক নেতার কথায়, ‘‘আমাদের জেলা গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই জোটের পক্ষে সওয়াল করে আসছে। এ বার কলকাতার সন্মেলনের পরে এখানে সওয়ালের ঝাঁজ বোধহয় একটু বেড়েছে। কলকাতাই যে বাংলার সিপিএমের একমাত্র স্বর নয়, সেটা বুঝিয়ে দেওয়ার তাগিদ ছিল হয়তো।’’
সংগঠনের দুর্বলতার কথাও খোলাখুলি মেনে নেওয়া হয়েছে জেলা সম্মেলনের প্রতিবেদনে। বিতর্ক শনিবার রাত পর্যন্ত চলার পরে আজ, রবিবার সকালে হবে নতুন জেলা কমিটি গঠন। গৌতমবাবুর জায়গায় নতুন জেলা সম্পাদক হিসাবে মৃণাল চক্রবর্তীর অধিষ্ঠান প্রায় পাকা হয়ে গেলেও এ দিন রাতের দিকে ভেসে উঠেছে নেপালদেব ভট্টাচার্যের নামও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy