Advertisement
০২ মে ২০২৪

উদ্দেশ্য ভিন্ন, দিদির দেখা চায় তিন দলই

জিটিএ চুক্তি হওয়ার পরে বেশ কয়েক বছর কেটে গেলেও সেই মতো সব দফতর হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। পূর্ত দফতর, তথ্য ও সংস্কৃতি, দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা, বনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি দফতর এখনও জিটিএকে হস্তান্তর করা হয়নি বলে দাবি।

অভ্যর্থনা। মুখ্যমন্ত্রী তখন পাহাড়ের পথে।  ছবি :বিশ্বরূপ বসাক।

অভ্যর্থনা। মুখ্যমন্ত্রী তখন পাহাড়ের পথে। ছবি :বিশ্বরূপ বসাক।

রেজা প্রধান
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৬ ০২:২৬
Share: Save:

মোর্চা চায়

জিটিএ চুক্তি হওয়ার পরে বেশ কয়েক বছর কেটে গেলেও সেই মতো সব দফতর হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। পূর্ত দফতর, তথ্য ও সংস্কৃতি, দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা, বনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি দফতর এখনও জিটিএকে হস্তান্তর করা হয়নি বলে দাবি। ওই দফতরগুলি না হাতে পেলে পাহাড়ের বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজে সমস্যা হচ্ছে বলে মোর্চা নেতাদের বক্তব্য। বিশেষ করে পূর্ত দফতর হাতে থাকলে পাহাড়ি জনপদ, গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে ‘চোখে পড়ার মতো’ উন্নয়নের কাজ করা সম্ভব, বলছেন মোর্চা নেতারা। চলতি বছরের শেষেই পাহাড়ে পুরভোট হওয়ার কথা। তার আগে উন্নয়নের কাজ করতে না পারলে আশঙ্কার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলে মনে করেন শীর্ষ নেতারা।

তাই তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্কের ‘সাম্প্রতিক অতীতের তিক্ততা’ ভুলে সুসম্পর্ক গড়তে চায় মোর্চা। রাজনৈতিক ভাবে বিরোধিতা থাকলেও আবার যেন তিক্ততা তৈরি না হয়, সে জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দেখা পেতে উঠে পড়ে লেগেছেন মোর্চা নেতাদের কয়েক জন। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সব সময়েই পাহাড়ে স্বাগত। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করব। তবে সাক্ষাতের সময়সূচি এখনও স্থির হয়নি।’’

হরকার দলের আর্জি

কালিম্পঙকে পৃথক জেলা ঘোষণার জন্য ধন্যবাদ এবং বেশ কিছু প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়েছে জন আন্দোলন পার্টি। গত বছর মোর্চা ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নবান্নে গিয়ে দেখা করে কালিম্পঙকে পৃথক জেলা ঘোষণারা দাবি জানিয়েছিলেন কালিম্পঙের প্রাক্তন বিধায়ক হরকাবাহাদুর ছেত্রী। গত বছরই রাজ্য মন্ত্রিসভা সেই দাবিতে সবুজ সঙ্কেত দেয়। মুখ্যমন্ত্রী নিজে কালিম্পঙকে পৃথক জেলা করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। এ বার এই সিদ্ধান্তের দ্রুত বাস্তবায়ন চায় জন আন্দোলন পার্টি। কালিম্পঙকে পৃথক জেলা এবং মিরিককে মহকুমার স্বীকৃতি দ্রুত দেওয়ার দাবি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হলে জানাবেন হরকা।

সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের সমর্থন নিয়েই কালিম্পং থেকে ভোটে লড়েছিলেন হরকা। মোর্চার প্রার্থীর কাছে হারলেও ব্যবধান ছিল সামান্যই। কালিম্পং পুরসভার সিংহভাগ ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিলেন হরকা। পাহাড়ের পুরসভা ভোটের আগে পৃথক জেলা হিসেবে কালিম্পঙের প্রশাসনিক কাজকর্ম শুরু হলে রাজনৈতিক লাভের অঙ্কও দেখছে হরকার জন আন্দোলন পার্টির নেতারা। দলের সাধারণ সম্পাদক নয়ন প্রধান বলেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে সময় চেয়েছি। নতুন জেলার প্রশাসনিক কাজ দ্রুত শুরু হোক, এই আর্জি জানাব।’’

এবং জিএনএলএফ

সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জিএনএলএফের এক প্রতিনিধি দল দেখা করে। তাদের দাবি ছিল পাহাড়ে ষষ্ঠ তফসিল চালু করা হোক। দলের নেতাদের দাবি, ওই স্মারকলিপির মাধ্যমেই নতুন করে ষষ্ঠ তফশিল নিয়ে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ বারে সেই আলোচনার গতি বাড়াতে চান তাঁরা। সে বিষয়ে কথা বলতেই মুখ্যমন্ত্রীর সময় চেয়েছেন তাঁরা। নেতাদের দাবি, ষষ্ঠ তফশিল নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়ে গেলেই সংগঠন চাঙ্গা হবে। চাপে পড়বে মোর্চাও।

পাহাড়ের রাজনৈতিক নেতাদের একাংশের দাবি, এ দিনের পাহাড় সফরে মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে জিএনএলএফের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। শিলিগুড়ি লাগোয়া রোহিণী গেট থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার পথ মানববন্ধন করেন দলের নেতারা। পাহাড়ের পথে ছেয়ে গিয়েছিল দলের সবুজ পতাকা।

দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা এন বি ছেত্রীর কথায়, ‘‘এ বারের সফরে মুখ্যমন্ত্রী বড্ড ব্যস্ত। দেখা করার সময় পাব কি না জানি না। তবে চেষ্টা চালাচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CM mamata bandopadhyay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE