দলীয় পুর কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে। নিজস্ব চিত্র
দলত্যাগীদের আর ঘরে ফেরাবে না তৃণমূল।
তৃণমূল ছেড়ে অন্য দলে যেতে ‘ইচ্ছুক’দের দ্রুত চলে যাওয়ার ছাড়পত্র আগেই দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একের পর এক বিধায়ক, কাউন্সিলরের জোড়াফুল ছেড়ে পদ্মে যাওয়ার হিড়িকে দলের কোনও ক্ষতি হবে না বলেও দাবি করেছেন তিনি। অন্য দলে যেতে ইচ্ছুকদের দ্রুত তৃণমূল ছাড়ার পরামর্শ ফের দিয়ে মঙ্গলবার তৃণমূলের কাউন্সিলরদের সভায় মমতা বললেন, ‘‘যাঁরা যেতে চান, তাড়াতাড়ি যান। তৃণমূলকে দুর্বল ভাববেন না। এক জন গেলে আমি ৫০০ জন কর্মী তৈরি করব। নতুন কর্মী তৈরি করব।’’
প্রয়োজনে রাস্তার ধারে আড্ডা দেওয়া বখাটে ছেলেদের নিয়েও তিনি তৃণমূল চালাতে পারবেন বলে দিন কয়েক আগেই জানিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু কোন ভাবেই আর দলছাড়াদের ক্ষমা করবেন না বলে সাফ বুঝিয়ে দিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী এবং পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের উদ্দেশে তিনি নির্দেশ দেন, ‘‘আজ চলে যাব। দু’দিন বাদে আবার পায়ে ধরে দলে ফেরত আসতে চাইবে। এ সব বন্ধ করুন।’’ তবে পুরনো যে কর্মীরা অভিমানে দল ছেড়েছেন, তাঁদের কারণ খতিয়ে দেখে দলে ফেরাতে পরামর্শ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া মুকুল রায়, তাঁর পুত্র শুভ্রাংশুর প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, ‘‘আমাদের ভুল হয়েছিল। এক বাবা দল করত। তার ছেলেকে টিকিট দেওয়া হয়েছিল। বিকাশ বসুর স্ত্রী মঞ্জু বসুকে টিকিট দেওয়া উচিত ছিল। তাঁকে না দিয়ে এক জনের আত্মীয়কে টিকিট দিয়েছিলাম। এ সব সত্যিই আমাদের বড় ভুল হয়েছিল। এ সব থেকে দলকে বার করতে হবে। দলের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ বাবা-ছেলেকে আমরা টিকিট দেব।’’ পরে মুকুল অবশ্য বলেন, ‘‘আমার ছেলে নিজের যোগ্যতায় টিকিট পেয়েছিল। আমার জন্য নয়।’’
আরও পড়ুন: তোলাবাজির টাকা ফেরত দিতে দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিলেন তৃণমূল নেত্রী
তৃণমূলের টিকিটে জেতা যে কাউন্সিলর বা বিধায়ক দলের হয়ে কাজ না করে এখন অন্য দলে চলে যাচ্ছেন, তাঁরা কেন এবং কত টাকার ‘লোভে’ গিয়েছেন, তাও তাঁর অজানা নয় বলে দাবি মমতার। সে জন্য বাকিদের আগাম সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘‘আজ তৃণমূল, কাল কংগ্রেস, পরশু বিজেপি। দলটা যেন রামধনু দল হয়ে গিয়েছে! মানুষের সেবা করার আদর্শ, রাজনৈতিক সত্তা আছে নাকি কারও?’’ তাঁর দলের ‘ক্ষয়’ রোখার ডাক দিয়ে এ দিন সভায় উপস্থিত কাউন্সিলরদের মমতা বোঝান, ‘‘যে লোক নিজের এলাকায় কাজ করেন, তিনি কোনও দিন হারেন না। মানুষের পাশে থাকুন। এলাকায় যান। কার কী প্রয়োজন, দেখুন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy