Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঠাঁই বদলের আগেও খেল দেখিয়ে গেল নিম্নচাপ

বিদায় বেলায় কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গকে ভিজিয়ে গেল নিম্নচাপ! শুক্রবার রাত থেকে কোনও কোনও জেলায় স্বল্পস্থায়ী ঝ়ড়ও হয়েছে।

—নিজস্ব চিত্র।

—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:০৬
Share: Save:

বিদায় বেলায় কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গকে ভিজিয়ে গেল নিম্নচাপ! শুক্রবার রাত থেকে কোনও কোনও জেলায় স্বল্পস্থায়ী ঝ়ড়ও হয়েছে। কোনও হতাহতের খবর না মিললেও বাঁকুড়ার জয়পুর এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে নন্দীগ্রামে কিছু বা়ড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে।

শনিবার চতুর্থীর দিনভর বৃষ্টি হলেও আজ, পঞ্চমী থেকেই পরিষ্কার আকাশের পূর্বাভাস দিচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, ঘূর্ণিঝ়ড় ‘তিতলি’ আগেই শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপের চেহারা নিয়েছিল। এ দিন সকালে আরও দুর্বল হয়ে সে সাধারণ নিম্নচাপে পরিণত হয়। বিকেলে সেটি বাংলাদেশ এবং লাগোয়া গাঙ্গেয় বঙ্গের উপরে রয়েছে। উপগ্রহ-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদদের দাবি, নিম্নচাপটি বাংলাদেশের দিকে আরও সরে যাচ্ছে। তাই এ রাজ্যের আবহাওয়ার দ্রুত উন্নতির সম্ভাবনা ষোলো আনা।

বৃহস্পতিবার অন্ধ্রপ্রদেশের পালাসা দিয়ে স্থলভূমিতে ঢোকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’। তার পর ওড়িশার উপরে থাকার সময়েই দ্রুত দুর্বল হতে থাকে সে। তবে যেটুকু শক্তি অবশিষ্ট ছিল তাতেই পশ্চিমাঞ্চলে বিভিন্ন এলাকায় ঝ়ড় হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের খোদামবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ঝড়ে অন্তত ১০টি মাটির এবং পাকা বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। বেশ কয়েকটি বাড়ির চালের টিন এবং টালি উড়ে গিয়েছে। উপড়েছে রাস্তার পাশে থাকা বহু বড় গাছ। কয়েকটি জায়গায় বড় গাছ ভেঙে আমন ধানের জমিতে পড়েছে। প্রবল বাতাসে ধান গাছ শুয়ে গিয়েছে। নন্দীগ্রামের পাশাপাশি পাঁশকুড়ার মাইশোরাতেও ঝড় হয়েছে বলে খবর।

শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ স্বল্পস্থায়ী ঝড়ে বাঁকু়ড়ার জয়পুরেও বাড়িঘরের চালা উড়ে গিয়ে ধানের খেতে পড়েছে, বড় বড় গাছ উপরে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা কাদের বক্স শা বলেন, ‘‘সবে আলো নিভিয়ে শুয়েছি। ঝড়ের দাপটে চোখ বন্ধ হয়ে যায়। চোখ খুলতেই দেখি মাথার উপরে ছাউনি নেই। ঝরঝর করে বৃষ্টি পড়ছে গায়ে!’’ ঘরের চাল হারিয়ে বাকি রাত প়়ড়শির ঘরে কাটাতে হয়েছে বৃদ্ধা ডলেনা বিবিকে। শনিবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে সাহায্যের আশ্বাস দেন স্থানীয় বিধায়ক তথা পঞ্চায়েত ও গ্রামোদ্যোগ প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা। তিনি বলেন, ‘‘ভয়ঙ্কর ঝড় বয়ে গিয়েছে। আমরা বাসিন্দাদের পাশে রয়েছি।’’ এই নিম্নচাপের প্রভাবেই এ দিন কলকাতা এবং লাগোয়া দক্ষিণবঙ্গে আকাশ দিনভর মেঘলা ছিল। কয়েক পশলা বৃষ্টিও হয়েছে। আকাশ মেঘলা থাকায় বেশ ঠান্ডা-ঠান্ডা মালুম হয়েছে।

আবহবিদদের একাংশের দাবি, স্থলভূমির উপরে থাকলে জলীয় বাষ্পের জোগানের অভাবে ঘূর্ণিঝড় বা নিম্নচাপের শক্তি কমে। কিন্তু গাঙ্গেয় বঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার ফলে সে কিছুটা হলেও জলীয় বাষ্প পেয়েছিল। তার পরে সাময়িক শক্তি বৃদ্ধি হয় তার। সেই কারণেই কিছু কিছু এলাকায় ঝ়ড়বৃষ্টি হয়েছে। আবহবিজ্ঞানীরা জানান, নিম্নচাপের শেষ প্রভাবটুকু কাটলেই কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গে আকাশ পরিষ্কার হবে। মিলবে শুকনো আবহাওয়াও। দিনের বেলা ঝকঝকে রোদ মিললেও রাতে একটু ঠান্ডা ঠান্ডা মালুম হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Titli Weather Cyclone তিতলি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE