Advertisement
০৭ মে ২০২৪

তৃণমূলের পাল্টা সভায় ভিড় তরজা

ভিড় নিয়ে তৃণমূলের নেতারা এক এক জন এক পরিসংখ্যান দিয়েছেন।

সভাস্থল: পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তৃতা চলাকালীন ঝাড়গ্রামের গড় শালবনিতে। শনিবার। ছবি: কিংশুক গুপ্ত

সভাস্থল: পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তৃতা চলাকালীন ঝাড়গ্রামের গড় শালবনিতে। শনিবার। ছবি: কিংশুক গুপ্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
গড় শালবনি শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:২৯
Share: Save:

দশ দিনের ব্যবধানে একই মাঠে জমায়েত। তাই ভিড়ের টক্কর ছিলই। ঝাড়গ্রামের গড় শালবনিতে বিজেপি-র পাল্টা তৃণমূলের সেই সভা শেষ হতেই শুরু হল ভিড়-তরজা।

২৩ জানুয়ারির সভায় প্রথমে আসার কথা ছিল বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের। অসুস্থতার জন্য তিনি অবশ্য আসেননি। এসেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। সেই সভায় ভালই জমায়েত হয়েছিল। পর দিনই ঝাড়গ্রামে এসে ২ ফেব্রুয়ারি পাল্টা সভার কথা ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই মতোই শনিবারের সভা। প্রধান বক্তা ছিলেন পার্থ নিজে ও মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তবে সভা শেষে এলাকায় গুঞ্জন, ভিড় তো তেমন জমল না!

ভিড় নিয়ে তৃণমূলের নেতারা এক এক জন এক পরিসংখ্যান দিয়েছেন। পার্থের নিজের দাবি, ‘‘ঝাড়গ্রামের ৮টা ব্লকের ২৫-৩০ হাজার লোক এসেছিলেন সভায়। বাইরে থেকে লোক আনতে বারণ করা হয়েছিল। প্রশাসনেরও সাহায্য নেওয়া হয়নি। এই প্রথম শুধুমাত্র নিজের শক্তিতে ঝাড়গ্রামের সব নেতাদের একসঙ্গে করে দলের সভা হয়েছে।’’ আর জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা বলছেন, ‘‘মাঠের ভিতর-বাইরে মিলিয়ে লোক হয়েছিল ৫০ হাজার।’’

যা শুনে ‘পাগলের প্রলাপ’ বলে কটাক্ষ করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, ‘‘পার্থবাবুরা পাল্টা সভার দুঃসাহস না দেখালেই ভাল হয়। এ দিনের সভা প্রমাণ করেছে জঙ্গলমহলের মানুষ তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।’’ পাল্টা সভায় মাঠ ভরাতে না পেরে এ বার পুলিশ-প্রশাসন দিয়ে বিজেপির উপর পাল্টা চাপ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা সুখময়ের।

ভিড়ের বহর নিয়ে কী বলছে পুলিশ?

সভাস্থলে দায়িত্বে থাকা কয়েকজন পুলিশ কর্মী জানালেন, শুরুর দিকে ১৫-২০ হাজারের বেশি লোক হয়নি। পরে জমায়েত কিছুটা বাড়ে। ২৩ জানুয়ারি গড় শালবনির এই মাঠেই স্মৃতির সভায় ৩০ হাজার লোকের জমায়েত হয়েছিল বলে দাবি করেছিল বিজেপি।

এ দিন সভা শুরুর সময় ছিল সকাল এগারোটা। সেই সময় ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সে হাজির হয়েছেন পার্থ। কিন্তু গড়শালবনির সভাস্থল তখন খাঁ-খাঁ করছে। পৌনে এগারোটা নাগাদ মাঠে গিয়ে দেখা গেল, জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা, জেলা আহ্বায়ক উজ্জ্বল দত্ত-রা কর্মীদের ফোন করছেন। ইতিমধ্যে পৌঁছলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি, দীনেন রায়রা। ফাঁকা মাঠ দেখে শুরু হল গুঞ্জন। এক নেতাকে বলতে শোনা গেল, ‘‘এমন অবস্থা চললে ঝাড়গ্রামে সংগঠন হাতের বাইরে চলে যাবে।’’ লোক আসছে না দেখে কয়েকজন নেতা গলা তুললেন, ‘‘পুলিশ করছে টা কী। বাসগুলো কেন এসে পৌঁছল না দেখুক।’’ এক কর্মী জবাব দিলেন, ‘‘বেলিয়াবেড়া, রোহিণীতে বাস গিয়েছে, কিন্তু আসার ল‌োক কম।’’

বেলা বারোটা নাগাদ অবশ্য লোকজন আসতে শুরু করেন। বেশ কিছু বাস ও গাড়িতে অনেকে সভাস্থলে আসেন। বেলা পৌনে একটায় মন্ত্রী সন্ধ্যা টুডু আসার পরে শুরু হয় সভা। কিছু সাংসদ মানস ভুঁইয়ার বক্তৃতা চলাকালীন দুপুর দেড়টা নাগাদ সভাস্থলে আসেন পার্থ ও চন্দ্রিমা। তবে মাঠ পুরে ভরেনি। সভায় পার্থ বলেন, ‘‘আমরা খুব তাড়াতাড়ি এই সভা করছি। বিজেপি ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, পুরুলিয়া থেকে লোক এনে স্মৃতি ইরানিকে দেখিয়েছে তাদের কত সমর্থক আছে। আর আপনারা এই জেলার মানুষ এই রোদ্দুরে বসে থেকে যে ভাবে আমাদের বক্তব্য শুনছেন, তাতে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আমাদের সম্পদ আপনারা। আপনাদের সেলাম জানাই, প্রণাম জানাই।’’ আর সুকুমার বলেছেন, ‘‘আমরা বিজেপিকে মুখের মতো জবাব দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Garh Salboni
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE