Advertisement
১১ মে ২০২৪

কলেজে ঢুকে আগেও হাঙ্গামায় জড়ান দীপক

সম্পর্কটা দীর্ঘদিনের। ফকিরচাঁদ কলেজ এবং দীপক হালদার। ছাত্র অবস্থাতেই কী, বিধায়ক পর্বেই কী। বিধায়ক হিসেবে আবার কলেজে ঢুকে হাঙ্গামা বাধানোর অভিযোগে আগেও জড়িয়েছে তাঁর নাম।

হাসপাতাল চত্বরে পুলিশের গাড়িতে দীপক।-নিজস্ব চিত্র

হাসপাতাল চত্বরে পুলিশের গাড়িতে দীপক।-নিজস্ব চিত্র

দিলীপ নস্কর
ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৩৮
Share: Save:

সম্পর্কটা দীর্ঘদিনের। ফকিরচাঁদ কলেজ এবং দীপক হালদার। ছাত্র অবস্থাতেই কী, বিধায়ক পর্বেই কী। বিধায়ক হিসেবে আবার কলেজে ঢুকে হাঙ্গামা বাধানোর অভিযোগে আগেও জড়িয়েছে তাঁর নাম।

১৯৮৮ সালে ফকিরচাঁদ কলেজ থেকে বাণিজ্যে স্নাতক হন ডায়মন্ড হারবারের আব্দালপুরের বাসিন্দা দীপক। ছাত্রজীবন থেকেই বিরোধী রাজনীতিতে অভ্যস্ত, ছিলেন ছাত্র পরিষদে। ১৯৯৩ সালে পারুলিয়া পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য তথা বিরোধী দলনেতা। ১৯৯৮ সালে তৃণমূলের প্রায় জন্মলগ্ন থেকেই সে দলে। যোগ দিয়েই দলের ডায়মন্ড হারবার ১ ব্লকের সভাপতি। রাজনীতির পাশাপাশি জীবনবিমা ও পোস্ট অফিসের এজেন্টের কাজ করতেন। দীপকবাবুর স্ত্রী স্বপ্নারানি হালদার এখন ডায়মন্ড হারবার পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সভাপতি। একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়েছে সম্প্রতি। ডায়মন্ড হারবারের কপাটহাট মোড়ের কাছে এখন বিধায়কের তিনতলা বাড়ি তৈরির কাজ চলছে।

দল সূত্রের খবর, দীপকের ভাগ্যের চাকা ঘোরে ২০১১-র ঠিক আগে। তাঁকে ডায়মন্ড হারবার ১-এর যুব সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে সময়ে যুব তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে দীপকের ঘনিষ্ঠতা ছিল। সে সুবাদেই জোটে বিধানসভার টিকিট।


সবিস্তারে দেখতে ক্লিক করুন

বিরোধীদের ‘টিপ্পনী’, এলাকায় মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়, কিষান মান্ডি, আইটিআই কলেজ, জলপ্রকল্প, বৈদ্যুতিক চুল্লি-সহ নানা কাজের অনুমোদনের ব্যাপারে নিজের ভূমিকা ফলাও করে প্রচার করতেন বছর উনপঞ্চাশের দীপক। বিধায়ক হওয়ার পরে এলাকার একাধিক অর্থলগ্নি সংস্থার মালিকের সঙ্গে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠতা’, কারখানা, বন্দর থেকে ‘তোলাবাজি’ বা আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন জাঁকজমকের সঙ্গে মেয়ের বিয়েতে খরচ করা নিয়েও সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা।

লাভ হয়নি। কোনও অভিযোগ বা কটাক্ষকেই গায়ে মাখেননি দীপক। ‘‘বিরোধীরা বলবেনই’’, বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে বিরোধীরাও মানছেন, সংগ্রামপুরে বিষমদ-কাণ্ডের সময়ে এক নিকটাত্মীয়ের মৃত্যু সত্ত্বেও অসুস্থ এবং মৃতদের পরিজনদের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছিল দীপকবাবুকে।

২০১১-র ২৪ ডিসেম্বর অবশ্য বিধায়কের বিরুদ্ধে নেহাত উড়িয়ে দেওয়ার মতো অভিযোগ ওঠেনি। ওই দিন ছাত্র সংসদের নির্বাচন ছিল ফকিরচাঁদ কলেজে। এসএফআইয়ের অভিযোগ ছিল, সশস্ত্র বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে ঢোকেন দীপক। তাঁর মদতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) লোকেরা এসএফআইয়ের সদস্যদের মারধর করে। এক প্রার্থ়ী-সহ এসএফআইয়ের তিন জন জখম হন। পরে এসএফআইয়ের হাত থেকে ছাত্র সংসদের দখল চলে যায় টিএমসিপি-র হাতে।

অন্য বারের মতো সে অভিযোগও ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলে নস্যাৎ করে দেন বিধায়ক। তার পরেও বিভিন্ন সময়ে এলাকায় বিরোধীদের লাগানো ব্যানার-পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়া, পার্টি অফিস ভাঙচুরে জড়িয়েছে তাঁর নাম। বরাবরের মতো অস্বীকারও করেছেন।

সোমবার ফকিরচাঁদ কলেজে তা হলে কী হল?

কিছুক্ষণ চুপ স্বপ্নারানিদেবী। পরে বলেন, ‘‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ওঁকে গ্রেফতারের আদেশ দিয়েছেন। সেটা মাথা পেতে নিলাম।’’ আর দীপকবাবুর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ? এ বার জবাব এল, ‘‘সেটা প্রমাণসাপেক্ষ।’’ তবে তৃণমূল সূত্রের খবর, ঘনিষ্ঠদের কাছে বিধায়কের স্ত্রী দাবি করেছেন, ‘‘দলেরই কিছু লোকের জন্য মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে’’ তাঁর স্বামীকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE