Advertisement
E-Paper

টিএমসিপির চাপে ইস্তফা টিচার ইনচার্জের, নালিশ

শিক্ষায়তনে রাজনীতির ‘অনুপ্রবেশ’ নিয়ন্ত্রণে নিজেই সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি’কে অবশ্য সে নিষেধাজ্ঞায় ঠেকিয়ে রাখা যায়নি। ‘ছাত্র স্বার্থে’ আন্দোলনের নামে বিভিন্ন কলেজে তাণ্ডব চালিয়ে কিংবা অধ্যক্ষ ঘেরাওয়ের নিয়মিত কর্মসূচি নিয়ে ক্রমান্বয়ে দলের অস্বস্তিই বাড়িয়ে চলেছে তারা। সেই তালিকায় শেষ সংযোজন ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া বিবেকানন্দ শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়। টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের চাপে কলেজের টিচার ইন-চার্জ মঞ্জুষা সিংহ মহাপাত্র ইস্তফা দিয়েছেন গত বুধবার। কলেজ পরিচালন সমিতির বৈঠকে তাঁর ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৪১

শিক্ষায়তনে রাজনীতির ‘অনুপ্রবেশ’ নিয়ন্ত্রণে নিজেই সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি’কে অবশ্য সে নিষেধাজ্ঞায় ঠেকিয়ে রাখা যায়নি।

‘ছাত্র স্বার্থে’ আন্দোলনের নামে বিভিন্ন কলেজে তাণ্ডব চালিয়ে কিংবা অধ্যক্ষ ঘেরাওয়ের নিয়মিত কর্মসূচি নিয়ে ক্রমান্বয়ে দলের অস্বস্তিই বাড়িয়ে চলেছে তারা। সেই তালিকায় শেষ সংযোজন ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া বিবেকানন্দ শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয়। টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের চাপে কলেজের টিচার ইন-চার্জ মঞ্জুষা সিংহ মহাপাত্র ইস্তফা দিয়েছেন গত বুধবার। কলেজ পরিচালন সমিতির বৈঠকে তাঁর ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়েছে।

টিএমসিপি-র ছাত্র আন্দোলনে রাশ টানতে দিন কয়েক আগে বাধ্য হয়েই দলের শীর্ষ নেতারা তলব করেছিলেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক শঙ্কুদেব পণ্ডাকে। ছাত্র আন্দোলনের নামে তাঁদের ‘অযাচিত’ তাণ্ডবকে যে দল অনুমোদন করছে না, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল ওই ছাত্র নেতাকে। বিরোধীরা মনে করছেন, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের সেই অনুশাসনেও যে ‘কাজ’ হয়নি ঝাড়গ্রামের ওই টিচার ইন-চার্জের পদত্যাগেই তা স্পষ্ট।

মঞ্জুষাদেবী নিজে তৃণমূল প্রভাবিত কলেজ শিক্ষক সংগঠন ‘ওয়েবকুপা’র সদস্য। টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সঙ্গে সংঘাতের প্রশ্নে তাঁর বক্তব্য, “পরিস্থিতির চাপ সামলাতে পারলাম না। সব কথা বলা সম্ভব নয়। মানসিক অশান্তি আর বাড়াতে চাই না বলেই ব্যক্তিগত অপারগতার কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছি।” এ প্রসঙ্গে কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি হরিপদ বেরা বলেন, “মঞ্জুষাদেবী ব্যক্তিগত কারণে অব্যাহতি চেয়ে পদত্যাগ করেছেন। এর প্রেক্ষাপট নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।”

রবিবার সংবাদমাধ্যমের থেকে মানিকপাড়া কলেজের ঘটনাটি জানার পরে পার্থবাবুর প্রতিক্রিয়া, “মঞ্জুষাদেবী যদি ছাত্র সংগঠনের চাপে ইস্তফা দিয়ে থাকেন, তা হলে বলব ভুল করেছেন। আমি বার বার বলছি, অন্যায়ের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। তা সে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ হোক বা অন্য কোনও সংগঠন।”

মানিকপাড়া কলেজ সূত্রে খবর, দর্শনের অধ্যাপিকা মঞ্জুষাদেবী প্রায় তিন বছর ওই কলেজের টিচার ইন-চার্জের দায়িত্বে ছিলেন। কিছু দিন ধরেই তাঁর সঙ্গে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সংঘাত চলছিল। চলতি বছরে স্নাতকে ছাত্র ভর্তির সময় ফর্ম ছাপানো থেকে ভর্তি প্রক্রিয়া সব ব্যাপারেই দু’পক্ষের বিরোধ বাধে। এর পর ভূগোল অনার্স-সহ কয়েকটি বিষয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ‘কোটা’ দাবি করে টিএমসিপি। মঞ্জুষাদেবী তা মানেননি।

সম্প্রতি কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের কমিটি গড়াকে কেন্দ্র করে সেই বিরোধ চরমে পৌঁছয়। ছাত্র সংসদকে অনুষ্ঠানের যাবতীয় দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানায় টিএমসিপি। অভিযোগ, মঞ্জুষাদেবী তাতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে ইস্তফা দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া শুরু হয়॥

স্থানীয় বাসিন্দা তথা এসএফআইয়ের রাজ্য কমিটির সদস্য কৌশিক মাণ্ডিরও অভিযোগ, “ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠান, সবেতেই খবরদারি করছিল টিএমসিপি। অপমানিত হয়েই পদত্যাগ করতে বাধ্য হন টিচার ইন-চার্জ।” বিরোধের কথা মেনে নিয়েছেন কলেজের ছাত্র সংসদও। সংসদের সাধারণ সম্পাদক সন্তু মেহরা বলেন, “কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির জন্য যা যা করণীয় তা করতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষা রাজি হননি। ছাত্র সংসদকে গুরুত্ব না দিয়ে উনি নিজের মতো কাজ করছিলেন।” তবে ইস্তফার জন্য মঞ্জুষাদেবীকে চাপ দেওয়ার কথা মানতে নারাজ টিএমসিপি। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক শঙ্কুদেব পণ্ডা বলেন, ‘‘মঞ্জুষাদেবী স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন। সংগঠনের কেউ তাঁকে কোনও চাপ দেয়নি।”

tmcp teacher in charge manikpara bibekananda satabarsiki mahabidyalaya manjusha singha mahapatra resigned college state online news pressure
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy