জেসপ কাণ্ডে সংস্থার চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার অশোক অগ্রবালকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে সিআইডির সদর দফতর ভবানী ভবন থেকে তাঁকে ধরে দমদম থানার পুলিশ। অশোকের বিরুদ্ধে জেসপের কর্মীদের দায়ের করা একটি প্রতারণার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ছিল বলে জানিয়েছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ। সেই মামলাতেই এ দিন জেসপের সিইও-কে ধরা হয় বলে জানান ডেপুটি কমিশনার (জোন-২) ধ্রুবজ্যোতি দে।
পুলিশ জানায়, প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা তছরুপের অভিযোগে জেসপ কারখানার সিইও-র বিরুদ্ধে এই মামলাটি হয় ২০১৩ সালে। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরেও অশোকবাবু কোনও দিন আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে হুলিয়াও জারি হয়েছিল। সিআইডি সূত্রের খবর, ওই অভিযোগে কর্মীরা জানিয়েছিলেন, টাকা নয়ছয় হওয়ায় তাঁদের পিএফের চেক বাউন্স হয়েছে। জেসপের সিইও-র বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেছে স্টেস ব্যাঙ্কও।
সিআইডি সূত্রের খবর, জেসপে চুরির ঘটনায় জেরার জন্য মঙ্গলবার সমন পাঠিয়ে ভবানী ভবনে ডাকা হয় সংস্থার তিন উচ্চপদস্থ কর্তাকে। সিইও ছাড়া বাকি দু’জন— জেনারেল ম্যানেজার (ফিন্যান্স) অশোক অগ্রবাল, প্রাক্তন ফিন্যান্স অফিসার মহেশ গুপ্ত। বেলা ১টার পরে তিন জন ভবানী ভবনে আসেন। তাঁর আগেই এ দিন কর্মীদের একাংশের পাঠানো কিছু নথি সিআইডি-র হাতে আসে। দেখা যায়, সিইও-র বিরুদ্ধে প্রায় ২৪টির মতো প্রতারণার মামলা রয়েছে। ছ’টিতে জারি আছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। এর পরেই দমদম থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে সিআইডি। সিআইডি সূত্রে খবর, জেরায় সিইও ছাড়া বাকি দুই কর্তার উত্তরেও সন্তুষ্ট না হওয়ায় তাঁদের ফের ডাকা হবে।
সিআইডির দাবি, এই তিন কর্তাই দমদমের ওই কারখানার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কার্যত তাঁরাই ওই কারখানার দেখভাল করতেন। গোয়েন্দারা জানান, পবন রুইয়ার মতো ওই তিন কর্তা দাবি করেছেন তাঁরা জেসপের কেউ নন এখন। তবে তদন্তকারীরা জানান, সিইও অশোক অগ্রবাল ২০০৭ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টানা রুইয়ার সংস্থায় ছিলেন। ২০১৩ সালে তিনি জেসপ ছেড়ে দিলেও কিছু দিনের মধ্যেই ফিরে আসেন। তাঁকে জেসপের পাশাপাশি জিল ইনফোটেক নামে রুইয়ারই আর একটি সংস্থার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই সংস্থার মূল দায়িত্ব ছিল জেসপ-ডানলপের মতো সংস্থায় কর্মী নিয়োগ।
গ্রেফতারি পরোয়ানা সত্ত্বেও এত দিনে সিইও-কে গ্রেফতার করা যায়নি কেন? ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি ধ্রুবজ্যোতিবাবু বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তির খোঁজে গিয়ে দমদম থানার পুলিশকে বারবার ফিরতে হয়েছে। পুলিশ তা একাধিক বার আদালতেও জানিয়েছে। তিনি এত দিন কোথায় ছিলেন, তা তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হবে।’’ বিষয়টি সিআইডি-ও খতিয়ে দেখছে বলে ভবানী ভবন সূত্রে খবর।
অন্য দিকে, জেসপে চুরির ঘটনায় সোমবার রাতে আরও দু’জন গ্রেফতার হয়েছে। গোয়েন্দারা জানান, ধৃত প্রদীপ নন্দী এবং বিশ্বজিৎ কর্মকার জেসপের লোহা চুরি করে বাইরে বিক্রি করত। রবিবার রাতে ধৃতদের থেকে তাদের নাম জানা যায়। সিআইডি জানিয়েছে, এই নিয়ে মোট ন’জনকে গ্রেফতার করা হল।
গোয়েন্দারা জানান, আজ বুধবার দুপুরে ভবানীভবনে ডেকে পাঠানো হয়েছে জেসপের মালিক পবন রুইয়াকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy