Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মমতার পরশে ভিড় টানছে এক কাপ চা

গত ২১ অগস্টের পর থেকেই দেখা যাচ্ছে এই ভিড়। ভোর থেকে রাত উৎসাহীদের আনাগোনা লেগেই রয়েছে। কারও প্রশ্ন, ‘‘আচ্ছা মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কোনখানটায় দাঁড়িয়ে চা বানাচ্ছিলেন?’’

দিঘায় সেই দোকানের সামনে পর্যটকেরা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

দিঘায় সেই দোকানের সামনে পর্যটকেরা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

কেশব মান্না
দিঘা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৫১
Share: Save:

জন্মাষ্টমী মিটে গিয়েছে। সৈকত শহর অবশ্য মজে ‘রাধারানি’তেই।

নিউ দিঘায় বিজ্ঞান কেন্দ্রের উল্টো দিকে রাধারানি স্টোর্স। টিনের দরজা, দরমার দেওয়াল আর টালির ছাউনি। পসরা বলতে চা, টোস্ট, চিপস্‌, কোল্ড ড্রিঙ্ক। সপ্তাহান্তের সৈকত শহরে যাবতীয় ভিড় টানছে আটপৌরে ওই দোকানই।

গত ২১ অগস্টের পর থেকেই দেখা যাচ্ছে এই ভিড়। ভোর থেকে রাত উৎসাহীদের আনাগোনা লেগেই রয়েছে। কারও প্রশ্ন, ‘‘আচ্ছা মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কোনখানটায় দাঁড়িয়ে চা বানাচ্ছিলেন?’’ কেউ জানতে চাইছেন, ‘‘উনি কত ক্ষণ ছিলেন?’’ আবার কারও পরামর্শ, ‘‘ওই দিনটা তো আর ফিরে আসবে না। একটা ছবি বাঁধিয়ে দোকানে টাঙিয়ে দেবেন।’’ আর সকলেই এক কাপ চা খেয়ে যাচ্ছেন।

গত ২১ অগস্ট দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠক শেষে সটান এই দোকানেই চলে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গী শিশির অধিকারী, শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতা-মন্ত্রীরা। সে দিন দোকান মালিক পরিমল জানার থেকে একটা হাতা নিয়ে নিজেই ফুটন্ত চা নাড়তে শুরু করেছিলেন মমতা। পরে ছাঁকনি দিয়ে চা ছেঁকেও নেন। সেই দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি হয়ে ছড়িয়ে পড়তে দেরি হয়নি। তার পর থেকে পরিমলের দোকানে ভিড় লেগেই রয়েছে।

শনিবার সকালে রাধারানি স্টোর্সে গিয়ে ভিড়ের দেখা মিলল। পরিমলের স্ত্রী চিন্ময়ী ঘাম মুছতে মুছতে বললেন, ‘‘ভোর পাঁচটায় দোকান খুলেছি। সেই থেকে লোকের আনাগোনা। সকলের মুখেই এক কথা, সে দিন মুখ্যমন্ত্রী আসার পর ঠিক কী কী হয়েছিল!’’

দোকানে দেখা কলকাতার পার্ক সার্কাস থেকে সপরিবার দিঘা বেড়াতে আসা আসা নন্দু চক্রবর্তীর সঙ্গে। ভ্যানো থামিয়ে মোবাইল ক্যামেরায় দোকানের ছবি তুলছিলেন তিনি। বললেন, ‘‘টিভিতে দিদির চা বানানো দেখেছি। তাই দিঘায় এসেই দোকানটায় চলে এসেছি। ছবিটা রেখে দেব।’’ দিঘার অঘোরকামিনী স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিদর্শক অলোককুমার দত্ত-ও এসেছিলেন দোকানে। তিনিও মানছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর আসার পর থেকে এখানে নিয়মিত পর্যটকেরা

ভিড় জমাচ্ছেন।’’

দিঘা লাগোয়া পাল সন্তুপুরের বাসিন্দা জানা দম্পতির দুই মেয়ে। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আর ছোট মেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। জমিজমা কিছুই নেই। সম্বল বলতে অস্থায়ী এই দোকান। মমতার পরশে সেই দোকানের বদল মানছেন পরিমল ও চিন্ময়ী। তাঁরা জানান, আগে শনি-রবি রোজ হাজার চারেক টাকা রোজগার হত। আর মুখ্যমন্ত্রী ঘুরে যাওয়ার পর থেকে রোজই সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা রোজগার হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রীর দিয়ে যাওয়া দু’হাজার টাকার নোটটা অবশ্য যত্ন করে তুলে রেখেছেন পরিমল। বলছেন, ‘‘ওটা চিরজীবনের স্মৃতি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Tea Stall Digha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE