এলাকার পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতি, বিধায়ক থেকে সাংসদ— সব তাঁদের দখলে থাকার পরেও সমবায় সমিতির ভোটে হারলেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। রবিবার পুরুলিয়ার বোরো থানার শুশুনিয়া ‘লার্জসাইজ এগ্রিকালচারাল মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি’-র (ল্যাম্পস) পরিচালন সমিতির ভোট ছিল। ফলাফল বলছে, বাম সমর্থিত প্রার্থীদের কাছে ২৬-১৪ আসনে হেরেছেন শাসক দলের প্রার্থীরা! আর ১৯৭৮ থেকে টানা জয় পেয়ে উৎসাহী বাম শিবির।
সর্বত্র যখন তৃণমূলের জয়জয়কার তখন এমন ফল কেন? স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, প্রায় ৮-১০ বছর এই ল্যাম্পসে নতুন সদস্য নেওয়া হয়নি। ফলে সমবায়ে বামেদের সমর্থকই বেশি থেকে গিয়েছেন। মানবাজার-২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি হংসেশ্বর মাহাতোর আবার অভিযোগ, ‘‘আমাদের সমর্থককে মৃত দেখিয়ে, ভুয়ো ভোটার এনে ভোট করিয়ে বাম সমর্থিত প্রার্থীরা জিতেছেন!’’ অভিযোগ মানতে চাননি মানবাজার-২ ব্লকের সিপিএমের জোনাল কমিটির সম্পাদক বৈদ্যনাথ সোরেন। ল্যাম্পসের মাধ্যমে আদিবাসীদের উন্নয়ন হয়েছে বলেই ফের জয়, জানাচ্ছেন তিনি। তৃণমূল শিবির অবশ্য গত বারের শূন্য থেকে এ বার ১৪টি আসন পর্যন্ত পৌঁছনোকে ইতিবাচক হিসাবে দেখছে।
শুশুনিয়া ল্যাম্পস পুরুলিয়ার সব থেকে পুরনো সমিতি। ধান কেনা, কেন্দু পাতা সংগ্রহ, বিভিন্ন সময় বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ শিবির এবং সমিতির চত্বরে একটি ইংরাজি মাধ্যম প্রাথমিক স্কুল চালায় এই সমিতি। ল্যাম্পসের বাৎসরিক লেনদেন এক কোটি টাকার উপরে। আদিবাসীদের উন্নয়নে এই সমিতির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ল্যাম্পসের মোট সদস্য ৪০৩৪ জন। পরিচালন সমিতির আসন সংখ্যা ৪০।
এ বারের ভোটে মোট প্রার্থী ছিলেন ৯০ জন। সিপিএম ও তৃণমূল ৪০ জন করে এবং অন্যেরা ১০টি আসনে প্রার্থী দেয়। রবিবারের ৯টি বুথে কড়া পাহারায় ভোট হয়। ভোটাভুটি শেষে পাঁচ বছরের জন্যে ল্যাম্পস দখলে রাখতে পেরে খুশি বাম শিবির। গত বছর পশ্চিম মেদিনীপুরের কাঁকড়াঝোর ও বাঁকুড়ার তালড্যাংরা ব্লকে দু’টি আদিবাসী সমবায়েও জয়ী হয়েছিল বামেরা।
বোরো এলাকায় নিচু তলার তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অনেকেই হতাশ হলেও শুশুনিয়ার বাসিন্দা তথা বান্দোয়ানের তৃণমূল বিধায়ক রাজীব সোরেনের বক্তব্য, ‘‘২০১১ সালের ল্যাম্পসের ভোটে একটি আসনেও আমরা জিততে পারিনি। সেখানে এ বার ১৪টি আসন মন্দ কী?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy