Advertisement
০৪ মে ২০২৪

ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পরে আজ খুলছে ইন্ডিয়া ও অ্যাঙ্গাস

জগদ্ধাত্রী পুজো শুরুর মুখে হাসি ফুটল হুগলির দু’টি জুটমিলের শ্রমিকদের। আজ, বুধবার থেকে খুলে যাচ্ছে শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া জুটমিল এবং ভদ্রেশ্বরের অ্যাঙ্গাস জুটমিল। মঙ্গলবার ইন্ডিয়া জুটমিল নিয়ে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকেরর ঘরে এবং অ্যাঙ্গাস নিয়ে চন্দননগরের মহকুমাশাসকের ঘরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। সেখানেই মেলে রফাসূত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:১৪
Share: Save:

জগদ্ধাত্রী পুজো শুরুর মুখে হাসি ফুটল হুগলির দু’টি জুটমিলের শ্রমিকদের। আজ, বুধবার থেকে খুলে যাচ্ছে শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া জুটমিল এবং ভদ্রেশ্বরের অ্যাঙ্গাস জুটমিল।

মঙ্গলবার ইন্ডিয়া জুটমিল নিয়ে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকেরর ঘরে এবং অ্যাঙ্গাস নিয়ে চন্দননগরের মহকুমাশাসকের ঘরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। সেখানেই মেলে রফাসূত্র। আগামী দিনে দু’টি মিলে শ্রমিক-মালিক বিরোধ এড়াতে ‘তদারক কমিটি’ গড়ার উপরে জোর দিচ্ছে প্রশাসন। রাজ্য শ্রম দফতরের পরিষদীয় সচিব তপন দাশগুপ্ত বলেন, “দু’টি মিলই বুধবার থেকে খুলছে। মিলে শৃঙ্খলা যাতে ঠিক থাকে, সেটা সব পক্ষকেই নিশ্চিত করতে হবে।”

কম উৎপাদনের অভিযোগ তুলে দিন দশেক আগে ইন্ডিয়া জুটমিলের তাঁত বিভাগের কয়েক জন শ্রমিককে বসিয়ে দেওয়ার নির্দেশ জারি করেন কর্তৃপক্ষ। তাতে অন্য শ্রমিকেরা রেগে যান। মিল কর্তৃপক্ষকে ঘেরাও করা হয়। কয়েক জন ম্যাানেজারকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। এক ম্যাানেজারকে হাসপাতালেও ভর্তি করানো হয়। এই পরিস্থিতিতে মিলে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর বিজ্ঞপ্তি ঝোলান কর্তৃপক্ষ। এর পরে শ্রীরামপুরে মহকুমা শ্রম দফতরে মালিক পক্ষকে নিয়ে বৈঠক হলেও কারখানা খোলার ব্যাপারে কোনও সবুজ সঙ্কেত মেলেনি।

সোমবার শ্রমমন্ত্রী ওই মিলের শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। মঙ্গলবার ছিল ত্রিপাক্ষিক বৈঠক। সেখানে শ্রমমন্ত্রী ছাড়াও রাজ্যের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার মহম্মদ নাসিম, শ্রীরামপুরের ডেপুটি শ্রম কমিশনার অমল মজুমদারও উপস্থিত ছিলেন।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রম দফতর, মিল কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি এবং শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘তদারক কমিটি’ গড়া হয়েছে। ওই কমিটিই শ্রমিকদের সুবিধা-অসুবিধা বা কারখানার পরিকাঠামোগত সমস্যা খতিয়ে দেখবে। মিলের যাবতীয় বিষয় পর্যালোচনার জন্য আগামী ১৭ নভেম্বর ফের শ্রমমন্ত্রীর ঘরে বৈঠক হওয়ার কথা।

অ্যাঙ্গাস জুটমিলেও শ্রমিক-মালিক বিরোধ চলছিল বেশ কিছু দিন ধরে। ‘ব্যাচিং’ বিভাগে অতিরিক্ত শ্রমিক রয়েছেন জানিয়ে কর্তৃপক্ষ গত রবিবার ১৫ জনকে অন্য বিভাগে কাজ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই শ্রমিকদের সন্দেহ হয়, তাঁদের ছাঁটাইয়ের জন্যই ওই নির্দেশ। তাঁরা অন্য বিভাগে কাজ করতে চাননি। প্রতিবাদে সে দিনসব শ্রমিকই কাজ বন্ধ করে দেন। ফলে, বন্ধ থাকে উৎপাদন। সোমবার সকালেই মিল কর্তৃপক্ষ ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর বিজ্ঞপ্তি দেন।

মঙ্গলবারের বৈঠকে শ্রম দফতরের পরিষদীয় সচিব তপন দাশগুপ্ত, চন্দননগরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী, ডেপুটি শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত ছাড়াও মালিক পক্ষের তরফে পদস্থ কর্তা এবং শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে মিল কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করে দেন, যে সব শ্রমিককে অন্য বিভাগে সরানো হচ্ছে, তাতে ছাঁটাইয়ের কোনও সম্ভাবনা নেই। অভ্যন্তরীণ কারণে ওই শ্রমিকদের সরানো হচ্ছে। তার পরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

তপনবাবু জানান, মালিক-শ্রমিকদের সমস্যা মেটাতে আগামী ৮ নভেম্বর চন্দননগরের মহকুমাশাসকের দফতরে ফের বৈঠক হবে। এই মিলেও ‘তদারক কমিটি’ গড়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE