Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জালে আরও ২ ভুয়ো চিকিৎসক

কাইজার আলম, কুশীনাথ হালদার, স্নেহাশিস চক্রবর্তী নামে তিন ভুয়ো চিকিৎসক ওই তিন জেলার সরকারি হাসপাতালে মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৭ ০৩:১০
Share: Save:

ভুয়ো চিকিৎসক নিয়োগ কী ভাবে হল, খতিয়ে দেখতে আগামী সপ্তাহে উত্তরবঙ্গে যাবে সিআইডি-র তদন্তকারী দল। উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে এ ব্যাপারে নোটিসও পাঠানো হয়েছে।

কাইজার আলম, কুশীনাথ হালদার, স্নেহাশিস চক্রবর্তী নামে তিন ভুয়ো চিকিৎসক ওই তিন জেলার সরকারি হাসপাতালে মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন। ১২ থেকে ১৫ জুন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দফতরে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। সিআইডি তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পঞ্চসায়র এবং বারুইপুর থেকে ফের দু’জন ভুয়ো চিকিৎসককে পুলিশ গ্রেফতার করে। তদন্তকারীদের দাবি, বারুইপুর থেকে ধৃত ইজাজ আহমেদ উচ্চমাধ্যমিক পাশ। কিন্তু তিনি ভুয়ো ডিগ্রি দেখিয়ে তিন বছর ধরে বারুইপুরের নার্সিংহোমে কাজ করতেন। পঞ্চসায়র থেকে ধৃত মহম্মদ আকবর আলিও ভুয়ো ডিগ্রি ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করছিলেন। বৌবাজার এলাকার বো স্ট্রিট, কলেজ স্ট্রিট ও চৌরঙ্গি রোডে অল্টারনেটিভ মেডিক্যাল কাউন্সিলের তিনটি অফিসও সিল করে সিআইডি।

সিআইডি সূত্রের খবর, আরও প্রায় ৬০ জন চিকিৎসকের উপরে নজর রাখা হচ্ছে। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের তরফ থেকেও ডাক্তারদের জীবনপঞ্জি যাচাইয়ের কাজ চলছে। কাউন্সিল সভাপতি নির্মল মাজি বলেন, ‘‘যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ চলছে। সিআইডি কর্তারা সহযোগিতা করছেন।’’

ডাক্তারির ছাড়পত্র

চিকিৎসকের পেশায় নামার ছাড়পত্র হল রেজিস্ট্রেশন নম্বর। সেই রেজিস্ট্রেশন কী ভাবে হয়?

• এমবিবিএস পাশের পরে এক বছরের ইন্টার্নশিপের সময়ে প্রভিশনাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেয় মেডিক্যাল কাউন্সিল। ইন্টার্নশিপ শেষ হলে সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজের শংসাপত্র-সহ রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে আবেদন করতে হয়। রাজ্য কাউন্সিল নাম নথিভুক্ত করে একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেয়। তারাই দিল্লিতে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (এমসিআই)-র কাছে সেই নাম ও নম্বর পাঠায়। এমসিআইয়ের মাধ্যমে ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল রেজিস্ট্রি’-তে সেই নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

এ রাজ্যে চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন নম্বরের সঙ্গে কি ছবিও থাকে?

• গত কয়েক বছর ধরে ছবি থাকছে। তবে যাঁদের রেজিস্ট্রেশন অনেক পুরনো, তাঁদের অনেকেই ছবি দিয়ে আপডেট করেননি। সাধারণত পাঁচ বছর অন্তর তথ্য আপডেট করার কথা। কিন্তু অনেকেই তা সময়মতো করেন না। তাই অনেক মৃত ডাক্তারের নামও মেডিক্যাল কাউন্সিলের তালিকায় থেকে গিয়েছে।

এক রাজ্যের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে অন্য রাজ্যে প্র্যাক্টিস করা যায় কি?

• এক রাজ্যের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে অন্য রাজ্যে প্র্যাক্টিস করতে গেলে সেই রাজ্যের মেডিক্যাল কাউন্সিলেরও রেজিস্ট্রেশন থাকা জরুরি। তবে অনেকেই তা মানেন না। ত্রিপুরা, দিল্লি, কর্নাটকের মতো কিছু রাজ্যে এটা বাধ্যতামূলক। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ এখনও এটা বাধ্যতামূলক করেনি। সেই সুযোগে ভিন্‌ রাজ্যের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে অনেক ডাক্তার এখানে প্র্যাক্টিস করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ উঠলে এই রাজ্যের কাউন্সিল তার বিচার করতে পারে না।

কোনও ডাক্তারের পরিচয় নিয়ে রোগীর মনে সংশয় জাগলে তিনি কী ভাবে সেটা যাচাই করবেন?

• রাজ্য কাউন্সিলে সেই চিকিৎসকের নাম ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর-সহ খোঁজ করলে তথ্য পাওয়া যাবে। ওয়েবসাইটেও তথ্য মেলার কথা। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা মেলে না।

সূত্র: রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fake Doctor Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE