Advertisement
E-Paper

তেমন বুঝলে সরে যাবেন সুরঞ্জন

তাঁর সর্বাত্মক চেষ্টা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বয় রক্ষার কাজে কোনও খামতি থেকে গেলে তিনি নিজেই সরে দাঁড়াবেন। শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬১তম সমাবর্তন উৎসবে এ কথা বলেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। মঞ্চে তখন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী ছাড়াও ছিলেন বহু বিশিষ্ট জন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১৪
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস ও আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। শনিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস ও আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। শনিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

তাঁর সর্বাত্মক চেষ্টা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বয় রক্ষার কাজে কোনও খামতি থেকে গেলে তিনি নিজেই সরে দাঁড়াবেন। শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬১তম সমাবর্তন উৎসবে এ কথা বলেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। মঞ্চে তখন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী ছাড়াও ছিলেন বহু বিশিষ্ট জন।

উপাচার্য কেন এই মন্তব্য করলেন, তা নিয়ে শিক্ষক মহলে দিনভর জল্পনা চলে। একাংশের মতে, বছর দুয়েক আগে এক মধ্য রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে পুলিশ ডেকে ছাত্র পেটানোর অভিযোগ ঘিরে প্রবল বিতর্ক এবং ছাত্রবিক্ষোভের মুখেও তৎকালীন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী পদত্যাগ করতে রাজি হননি। পরে সরকারের নির্দেশে তাঁকে সরে যেতে হয়। তার কয়েক মাস পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাল ধরার সময়ে তিনি যে চাপে ছিলেন, সেটাই এ দিন বলতে চেয়েছেন উপাচার্য।

শিক্ষকদের অন্য অংশের মতে, সুরঞ্জনবাবু উপাচার্য হওয়ার পরে অন্তত পাঁচটি বিষয়ে বিতর্ক বা সমস্যা তৈরি হয়েছে। যেমন, গত এপ্রিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের এক মিছিল থেকে দেশবিরোধী স্লোগান শোনা যায়। স্লোগান ক্যাম্পাসের ভিতরে না বাইরে থেকে দেওয়া হয়েছে— তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই নিয়ে রাজ্যপাল তথা আচার্যের কাছে উপাচার্য যে রিপোর্ট দেন, তা নিয়েও কথা ওঠে। আবার, রাজ্য সরকারের নির্দেশে ছাত্র সংসদের নির্বাচন স্থগিত হয়ে যাওয়ায় উপাচার্যকে ঘেরাও করেন পড়ুয়ারা। এই নিয়ে উপাচার্য রাজ্যপালের দ্বারস্থ হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করে রাজ্য।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য সরকার যে খসড়া বিধি পাঠায়, তার উপর কেন এখনও সংশোধনী পাঠানো হল না— তা নিয়েও বিতর্ক দেখা দেয়। এর মধ্যেই আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ডিন মনোনয়ন নিয়ে বাছাই প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ ওঠে। এর প্রেক্ষিতে সার্চ কমিটিতে থাকা উপাচার্যের মনোনীত প্রার্থী পদত্যাগ করলে নতুন কমিটি তৈরি হয়। তার পর ছ’মাস কেটে গেলেও এখনও নতুন ডিন মনোনীত হননি।

তবে বেশির ভাগ শিক্ষকই মনে করেন, পুনর্নিয়োগ স্থগিত করতে সরকারের সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞাই উপাচার্যের ওই মন্তব্যের মূল কারণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন জন অধ্যাপকের মেয়াদ ফুরনোর পরেও কর্মসমিতির বৈঠকে তাঁদের রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু রাজ্যের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে পিছু হটতে হয়। শিক্ষক সংগঠন জুটার সহ-সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় মনে করেন, ‘‘রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ করছে। হয়তো সেই চাপের কথাই বলতে চেয়েছেন উপাচার্য।’’

সুরঞ্জনবাবু নিজে অবশ্য স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পুনর্নিয়োগ বা অন্য কোনও নির্দিষ্ট প্রসঙ্গে চাপের কথা বলতে চাননি তিনি। পরে এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি যখন এসেছিলাম, তখন চাপের মুখে কাজ করেছি। এক জন উপাচার্য যখন চাপ নিতে পারবেন না, তখন তো তাঁর সরে যাওয়াই উচিত। আমি শুধু সেটুকুই বলতে চেয়েছি।’’ সমাবর্তনে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির অর্থাভাবের কথা জানান তিনি। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে রাজ্যের সমন্বয় বাড়ানোর উপর জোর দেন। কেন্দ্রের নতুন শিক্ষানীতিতে প্রযুক্তির ওপরে জোর দেওয়ার ব্যাপারে তাঁর অভিমত, ‘‘প্রযুক্তি অবশ্যই প্রয়োজন, কিন্তু তা কখনওই সরাসরি পঠনপাঠনের বিকল্প হতে পারে না।’’

রাজ্যের আনা শিক্ষাবিলের খসড়ার বিরোধিতায় এবং ইউজিসি-র নির্দেশিকা অনুযায়ী শিক্ষকদের অবসর নেওয়ার বয়স ৬৫ বছর করার দাবিতে এ দিন প্রেক্ষাগৃহের বাইরে যৌথ ভাবে লিফলেট বিলি করে শিক্ষক সংগঠন জুটা, আবুটা। রাজ্যের প্রতীকী শিক্ষাবিল পুড়িয়ে প্রতিবাদ জানায় তিনটি ছাত্র সংগঠন।

Suranjan Das VC JU
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy