Advertisement
E-Paper

মতিহারির জন্য নয়, সলমনের জন্য গর্জে উঠি আমরা!

এর পরও আর কী কী অপেক্ষা করে রয়েছে আমাদের জন্য? বিহারের মতিহারি শীতল শিহরণ বইয়ে দিল জাতির মেরুদণ্ডে আরও এক বার। কিন্তু জাতি শিহরিত হল না।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ০৬:১০

এর পরও আর কী কী অপেক্ষা করে রয়েছে আমাদের জন্য? বিহারের মতিহারি শীতল শিহরণ বইয়ে দিল জাতির মেরুদণ্ডে আরও এক বার। কিন্তু জাতি শিহরিত হল না।

সলমন খান চূড়ান্ত অসংবেদনশীল মন্তব্য করলেন ধর্ষণ নিয়ে, ধর্ষিতা নারীকে নিয়ে। বলিউড চুপ। যে কোনও সামাজিক, রাজনৈতিক বা বৃহত্তর তাৎপর্যের ইস্যুতে যে বলিউড তীক্ষ্ণ প্রতিক্রিয়া দিতে অভ্যস্ত, সেই বলিউড যেন তেমন কিছু শুনতেই পায়নি! অনুপম খের, ঋষি কপূররা বছরভর টুইটারে নানা পর্যবেক্ষণের বান ডাকিয়ে দেন। তাঁরা এখন হঠাৎ সোশ্যাল মিডিয়া ভুলে রয়েছেন যেন। সোনা মহাপাত্র বা কঙ্গনা রানাউতের মতো যে দু’এক জন দ্ব্যর্থহীন নিন্দা করার সাহস দেখিয়েছেন, তীব্র গালিগালাজে তাঁদের নাস্তানাবুদ করার মতো মানুষের অবশ্য অভাব হয়নি একেবারেই।

এ কি কোনও বিচ্ছিন্ন পরিস্থিতি? নাকি জাতির সামগ্রিক মানসিকতার প্রতিফলন? নির্ভয়া কাণ্ডের মতো মর্মন্তুদ ঘটনা ঝড় বইয়ে দিল গোটা দেশে। নৃশংসতা, আমানবিক হিংস্রতায় শিউরে উঠল গোটা দেশ। উত্তাল আন্দোলনের ঢেউ নাড়িয়ে দিল ভারতীয় সংসদকেও। নারীর উপর এই বর্বরোচিত হিংসা রুখতে আইন বদলে গেল। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে একটুও এগোইনি। সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছি। মানসিকতায় বিন্দুমাত্র পরিবর্তন নেই।

যে দেশ নির্ভয়া কাণ্ড দেখেছে, সেই দেশেও ধর্ষণের পরম্পরায় ছেদ পড়ে না! সেই দেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মহাতারকা ধর্ষণকে আর পাঁচটা স্বাভাবিক ঘটনার মতো করে জীবনের উপমা হিসেবে তুলে ধরতে পারেন! সেই চরম অসংবেদনশীলতা দেখেও আমাদের গরিষ্ঠ ভাগ নিশ্চুপ আড়াল খুঁজতে পারে! আর আড়াল যাঁরা খোঁজেননি, সমস্ত দাঁত-নখ তাঁদের বিরুদ্ধেই প্রযুক্ত হয়!

আমরা কি এখনও বুঝতে পারছি না, কোথায় নামছি আমরা? যদি না পারি, তা হলে মতিহারিতে যাই। দেখে আসি কী অসীম বর্বরতার শিকার এ দেশের নারী। জেনে নিই প্রহার, গণধর্ষণের পর কী ভাবে কাঠের টুকরো, পিস্তল, আরও কত কিছু ঢুকিয়ে দেওয়া হয় নারীর শরীরে।

কোন এক দুষ্টচক্রের আবর্তে ঘুরে মরছি যেন। ধর্ষণ হয়। তার প্রতিবাদ হয়। কিন্তু দুষ্কৃতী তাতে দমে না। সম্ভবত এই প্রতিবাদ-আন্দোলনের মধ্যে ধর্ষণের চর্চা খুঁজে পায় সে। মান্য নাগরিকের মনেও জমে থাকে সমান অন্ধকার। হঠাৎ পিছলে বেরিয়ে আসে কোনও এক কুক্ষণে। তার মধ্যেই মতিহারি দেখিয়ে দেয়, এখনও নির্ভয়ার মতোই বিপন্ন নারী। তাও আমাদের মুখ খোলা হয়ে ওঠে না। কেউ স্পষ্ট উচ্চারণের সাহস দেখালে বলে উঠি— কী এমন হয়েছে?

সহস্র, লক্ষ ধিক্কার এই ‘মানবতা’কে। ছিঃ।

anjan bandyopadhyay salman khan rape
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy