Advertisement
E-Paper

স্নাতকোত্তরে ছাত্রভর্তিও রাজ্যের হাতে

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কে হবেন থেকে শুরু করে পরীক্ষা কবে হবে, তা নিয়ে সরকারের নাক গলানো নতুন নয়। এ বার বিধানসভায় রীতিমতো বিল পাশ করিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর স্তরে ছাত্রভর্তির প্রক্রিয়াও রাজ্য উচ্চশিক্ষা সংসদের বকলমে সরকারের হাতেই ন্যস্ত করা হয়েছে। কারণ, স্নাতকোত্তরে ছাত্রভর্তির জন্য অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওই সংসদকে, চেয়ারম্যান হিসেবে যার মাথায় থাকবেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৫ ০৩:৪০

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কে হবেন থেকে শুরু করে পরীক্ষা কবে হবে, তা নিয়ে সরকারের নাক গলানো নতুন নয়। এ বার বিধানসভায় রীতিমতো বিল পাশ করিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর স্তরে ছাত্রভর্তির প্রক্রিয়াও রাজ্য উচ্চশিক্ষা সংসদের বকলমে সরকারের হাতেই ন্যস্ত করা হয়েছে। কারণ, স্নাতকোত্তরে ছাত্রভর্তির জন্য অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ওই সংসদকে, চেয়ারম্যান হিসেবে যার মাথায় থাকবেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী।

সোমবার বিধানসভায় বিল নিয়ে আলোচনার সময়ই এসইউসি বিধায়ক তরুণকান্তি নস্কর প্রশ্ন তুলেছিলেন, এ ভাবে ছাত্রভর্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলির থাকার দরকার কী! বস্তুত, এ ভাবে ছাত্রভর্তি হলে তা যে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপের চরম নিদর্শন হিসেবেই থাকবে, সে ব্যাপারে অনেকেরই সংশয় নেই। আর মঙ্গলবার এই প্রক্রিয়া নিয়ে রাজ্য সরকারকে সতর্ক ভাবে এগোনোর পরামর্শ দিয়েছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা তৃণমূল সাংসদ সুগত বসু।

কী বলছেন ইতিহাসের ওই অধ্যাপক? মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘আমি বিলটি পড়িনি। তবে আমেরিকায় পড়াশোনার জন্য যেমন জিআরই (গ্র্যাজুয়েট রেকর্ড এগজামিনেশনস) দিতে হয়, তেমনই রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তির জন্য রাজ্য সরকার অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা নিতে পারে। কিন্তু সেই পরীক্ষায় কতটা গুরুত্ব দিতে হবে, তা যেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিই স্থির করতে পারে। ভর্তি প্রক্রিয়ায় অতি কেন্দ্রীকরণ যেন না হয়।’’ তিনি জানান, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন্টর গ্রুপের তৃতীয় রিপোর্টে এমন একটি সুপারিশ করাও হয়েছিল।

২০১২ সালে যখন অভিন্ন প্রবেশিকার মাধ্যমে স্নাতকোত্তরে ভর্তির কথা হয়েছিল, সেই সময় ঠিক হয়, ভর্তির ক্ষেত্রে প্রবেশিকা পরীক্ষা ও প্রার্থীদের অন্যান্য যোগ্যতার উপরে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হবে, তা সরকারের তরফেই নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। সুগতবাবুর বক্তব্য, ‘‘হার্ভার্ডে জিআরই-র নম্বর দেখে ছাত্রভর্তি করা হয়। কিন্তু সেই সঙ্গে স্নাতক স্তরের পরীক্ষার ফল, আবেদনকারীর লেখার দক্ষতা ইত্যাদিও বিচার করা হয়। আর কীসে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হবে, তা বিশ্ববিদ্যালয়ই স্থির করে।’’

আগের বার অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে আলোচনা হলেও যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রক্রিয়ায় রাজি হয়নি। কলেজ সার্ভিস কমিশনকে এই পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত আর তা হয়নি। কিন্তু এখন উচ্চশিক্ষা সংসদ ঢেলে সাজার অজুহাতে ফের সেই প্রক্রিয়া শুরু করতে চায় রাজ্য সরকার।

যদিও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সোমবারই দাবি করেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি না চাইলে অভিন্ন প্রবেশিকার মাধ্যমে ছাত্রভর্তি হবে না। কারও উপরে কিছু চাপিয়েও দেওয়া হবে না। মঙ্গলবারও তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়টি নিয়ে অযথা জলঘোলা করা হচ্ছে। বিলটিতে কি কোথাও লেখা আছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে বাধ্যতামূলক ভাবে এই প্রক্রিয়ায় ছাত্রভর্তি করতে হবে? সকলের সঙ্গে আলোচনা করে যদি দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এই প্রবেশিকার মাধ্যমে ছাত্রভর্তিতে আগ্রহী, তবেই এগোনো হবে।’’ যদিও বিলে এই সংস্থান আদৌ কেন থাকবে, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। এতে অভিন্ন প্রবেশিকায় সাফল্য পেতে আরও এক ধরনের কোচিং সেন্টারের রমরমা হবে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেক শিক্ষক।

উপাচার্যেরা অবশ্য এখনই এ নিয়ে তেমন মাথা ঘামাচ্ছেন না। যেমন, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া বলেন, ‘‘এখনও তো এ নিয়ে কেউ কিছু বলেননি, কোনও আলোচনাই হয়নি। তাই বিষয়টি নিয়ে এখন ভাবছি না।’’

mamata bandopadhyay Trinamool tmc state government student tarun kanti naskar partha chattopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy