নরেন্দ্র মোদী সরকারের ‘উদয়’ প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গের যোগ দেওয়া নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধ আরও তীব্র হল।
কেন্দ্রের চাপ সত্ত্বেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের নীতি হল— ‘উদয়’ প্রকল্পে যোগ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার বিদ্যুৎ মাসুল বাড়াবে না। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সঙ্গে আজ বৈঠক করেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে বিদ্যুৎ মন্ত্রকের উপদেষ্টা মণীশ গুপ্ত, মুখ্যসচিব ও বিদ্যুৎসচিবও ছিলেন। পীযূষ ‘উদয়’-এর উপকারিতা বোঝানোর চেষ্টা করলেও, শোভনদেব জানান— কেন্দ্রের এই চুক্তিতে সই করতে রাজ্য বিদ্যুতের দাম বাড়াবে না।
ওই বৈঠক সেরে শোভনদেব মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করেন। মুখ্যমন্ত্রীরও মত হল, রাজ্যের অধিকারে কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করতে পারে না। পীযূষ এর আগে বলেছিলেন, ‘উদয়’-এ যোগ না-দিলে পশ্চিমবঙ্গ সস্তায় কোল ইন্ডিয়ার কয়লা পাবে না। কোল ইন্ডিয়া-ও রাজ্যের বিদ্যুৎ পর্ষদকে বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। এই হুমকির সামনে মাথা নোয়াতে রাজি নয় রাজ্য। তাদের যুক্তি, কয়লা পাওয়া রাজ্যের যুক্তরাষ্ট্রীয় অধিকার। পীযূষ জানিয়েছেন, রাজ্য ‘উদয়’-এ যোগ দিলে গ্রামীণ বৈদ্যুতিকরণ, বিদ্যুৎ ক্ষেত্র উন্নয়নে রাজ্য বাড়তি অর্থ পাবে। রাজ্যের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সাহায্য রাজ্যের এমনিতেই পাওয়ার কথা। তাতে কেন শর্ত চাপানো হবে?
রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের কর্তাদের যুক্তি, ‘উদয়’ প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার যে ঋণ আছে, তার ৭৫% রাজ্য নিজেদের হিসেবের খাতায় নিয়ে নেবে। তবে তা রাজ্যের রাজকোষ ঘাটতি হিসেব করার সময় ধরা হবে না। এই ৭৫% ঋণ বাজারে বন্ড ছেড়ে শোধ করবে রাজ্য সরকার। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সমস্যা হল, এমনিতেই ঋণগ্রস্ত রাজ্যের ঘাড়ে নতুন ঋণ যোগ হবে। ঋণগ্রস্ত রাজ্য বলে পশ্চিমবঙ্গের বন্ড বাডারে দাম পায় না। ন্যায্য মূল্যের তুলনায় কম দাম পেলে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে তা পূরণ করতে হবে রাজ্যকে। তাতেই রাজ্যের আপত্তি। গুজরাত, হরিয়ানা-র মতো রাজ্যগুলি ঋণগ্রস্ত নয় বলে তাদের বন্ডের ক্ষেত্রে এই সমস্যা নেই।
প্রশ্ন হল, মোদী সরকার কেন এই উদয়-প্রকল্পে সব রাজ্যকে রাজি করাতে উঠে পড়ে লেগেছে? বিদ্যুৎ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, সব রাজ্যের বিদ্যুৎ পর্ষদকে ঋণমুক্ত করা সম্ভব হলে মোদী সরকার বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে সংস্কারের সাফল্য দাবি করতে পারবে। আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সিগুলির কাছে ভারতের কদর বাড়বে। কেন্দ্রের বন্ডের ক্ষেত্রেও ভাল দর মিলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy