Advertisement
০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
State News

চন্দ্রকেতুগড়ের রক্ষী দিলীপ প্রয়াত

রবিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার বেড়াচাঁপায় নিজের বাড়িতে মারা যাওয়ার আগেও সেই খেদ যায়নি দিলীপচন্দ্র মৈতে-র (৮৩)। দিনের পর দিন কিছুটা তাঁরই চিঠিচাপাটির জেরে চন্দ্রকেতুগড় আর খনা মিহিরের ঢিপি নিজেদের অধীনে নেয় ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ।

দিলীপচন্দ্র মৈতে

দিলীপচন্দ্র মৈতে

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৮ ০৩:৪৮
Share: Save:

দুই সহস্রাব্দেরও বেশি সময়ের প্রত্ন নিদর্শন আগলে রেখেছিলেন অর্ধ শতক ধরে। শেষের দিকে বলতেন, ‘‘আমি একা আর কতটা পারব?’’

রবিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার বেড়াচাঁপায় নিজের বাড়িতে মারা যাওয়ার আগেও সেই খেদ যায়নি দিলীপচন্দ্র মৈতে-র (৮৩)। দিনের পর দিন কিছুটা তাঁরই চিঠিচাপাটির জেরে চন্দ্রকেতুগড় আর খনা মিহিরের ঢিপি নিজেদের অধীনে নেয় ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ।

রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম এই অঞ্চলটির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পঞ্চাশ-ষাটের দশকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ও সেখানে খনন করেছে। বছর পঞ্চাশ আগে পুকুর খুঁড়তে গিয়েও পাওয়া গিয়েছিল বিভিন্ন প্রত্নসামগ্রী, মুদ্রা। কারও উঠোনে কিংবা পথেঘাটে পড়ে ছিল সে সব। তখন নিজের উদ্যোগে সে সব আগলে রাখা শুরু করেছিলেন দিলীপবাবু। জয় করেছেন প্রলোভন আর ভয়। সরকার তাঁর সংগ্রহশালায় পুলিশ মোতায়েন করেছে। প্রাক মৌর্য, শুঙ্গ, কুষাণ, গুপ্ত, পাল যুগের নির্দশন সেখানে রয়েছে। ২০১২ সালে অমর্ত্য সেন চন্দ্রকেতুগড়ে গিয়ে জানান, ‘‘এর ঐতিহাসিক মূল্য অপরিসীম। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে, একমাত্র বাঁচিয়ে রেখেছেন দিলীপবাবু।’’

প্রথম জীবনে শিক্ষকতা, পরে স্বাস্থ্য দফতর থেকে অবসর। তারপর থেকেই কাজ বেড়ে যায় দিলীপবাবুর। ঘুরে ঘুরে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহ করতে থাকেন। এই সবের এ বার কী হবে, প্রশ্ন তুলেছেন স্ত্রী শিবানী মৈতে। সোমবার সকালে দিলীপবাবুকে শ্রদ্ধা জানান বারাসতের মহকুমাশাসক, পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তারা। তাঁরা জানিয়েছেন, সংগ্রহশালা তৈরি না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ পাহারা থাকবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE