Advertisement
E-Paper

এমডি, এমএস পরীক্ষক কারা, ফাঁস হয়ে গিয়েছে সব তথ্য!

এ বার ডাক্তারির স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রশ্ন নয়, বহিরাগত পরীক্ষকের তথ্য সরাসরি ফাঁস করে দেওয়া হয়েছে বেসরকারি সংস্থার কাছে!

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:০৯
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক থেকে শুরু করে দিল্লি বোর্ড, মায় স্নাতক স্তরে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ নিয়ে রাজ্য তো বটেই, দেশ জুড়ে শোরগোল চলছে কিছু দিন ধরে। এ বার ডাক্তারির স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রশ্ন নয়, বহিরাগত পরীক্ষকের তথ্য সরাসরি ফাঁস করে দেওয়া হয়েছে বেসরকারি সংস্থার কাছে!

নিয়ম অনুযায়ী মেডিক্যালের স্নাতকোত্তর (এমডি, এমএস) ডিগ্রি ও ডিপ্লোমা পরীক্ষার জন্য প্রতি বছরেই ভিন্‌ রাজ্য থেকে বহিরাগত পরীক্ষকেরা আসেন। পরীক্ষা পদ্ধতি স্বচ্ছ রাখতে তাঁদের নাম-পরিচয় গোপন রাখার উপরে বিশেষ জোর দেয় সব মেডিক্যাল কলেজ। তাঁদের দেখভালের দায়িত্বে থাকেন কলেজের বিভিন্ন বিষয়ের এক জন চিকিৎসক। কোনও গোলমাল হলে তাঁকেই জবাবদিহি করতে হয়।

এ বার স্নাতকোত্তর পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ৮ মে। আসছেন প্রায় ৭০০ জন পরীক্ষক। আর এ বারেই হঠাৎ স্বাস্থ্য দফতর ও নবান্নকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে, বিনা দরপত্রে, বিনা সরকারি নির্দেশিকায়, নির্ভরযোগ্যতা যাচাই না-করে একটি বেসরকারি সংস্থাকে ওই পরীক্ষকদের আসা-যাওয়া-থাকা-খাওয়ার যাবতীয় দায়িত্ব দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়! সর্বোপরি ওই সংস্থার এক প্রতিনিধির হাতে গত শনিবার সব বহিরাগত পরীক্ষকের নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর তুলে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা। অর্থাৎ যা যথাসম্ভব গোপন রাখার কথা, সেই তথ্য ফাঁস করা হয়েছে বেসরকারি সংস্থার কাছে।

এর মধ্যে ব্যাপক দুর্নীতির আভাস পাচ্ছে চিকিৎসক শিবির। এই নিয়ে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকদের মধ্যে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর থেকে দফায় দফায় স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্তা ফোন করে বলতে শুরু করেন, ‘‘না-বুঝে ভুল হয়ে গিয়েছে। আমরা ওই সংস্থাকে বাতিল করে দেব। এটা নিয়ে (সংবাদপত্রে) লিখবেন না।’’ কোন কর্তার মাথায় এই পরিকল্পনা এসেছিল? এই নিয়েও শুরু হয়ে গিয়েছে চাপান-উতোর। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাজেন্দ্র পাণ্ডে প্রথমে বলেন, ‘‘যা করার কন্ট্রোলার করেছেন।’’ আর কন্ট্রোলার কান্তাপ্রসাদ সিংহের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘আমি কিচ্ছু জানি না। উপাচার্যই সব বলতে পারবেন।’’

এসএসকেএম হাসপাতালে কুকুরের ডায়ালিসিস কাণ্ডে নাম জড়িয়েছিল পাণ্ডের। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পাওয়ার পরেও তাঁকে নিয়ে সমালোচনা বন্ধ হয়নি। কারণ, উপাচার্যের পদটি ‘নন-প্র্যাক্টিসিং’ হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনও তিন-চারটি বেসরকারি হাসপাতালে চুটিয়ে প্রাইভেট প্র্যাক্টিস করছেন। এবং সেটা জোর গলায় জানাতেও কসুর করছেন না! বলছেন, ‘‘হ্যাঁ, প্র্যাক্টিস করি। কেন করি, সেটা নবান্নের কাছে জানতে চান।’’ এখন বহিরাগত পরীক্ষকদের তথ্য বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়ার ঘটনায় নতুন করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন পাণ্ডে। তাঁর কথায়, ‘‘সময় কম ছিল, তাই অ্যাড-হক ভিত্তিতে একটি সংস্থাকে ওই পরীক্ষকদের আসা-যাওয়া-থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করার ভার দিয়েছি। পরের বার দরপত্র ডাকব।’’

কিন্তু পরীক্ষকদের গোপন তথ্য যে ফাঁস হয়ে গেল, তার কী হবে? ‘‘ফাঁস হওয়ার থাকলে সেটা এখানকার ডাক্তারদের কাছ থেকেও হতে পারে,’’ জবাব উপাচার্য পাণ্ডের।

MD MS Doctor ডাক্তার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy