ফাইল চিত্র।
গত ২ মার্চ সকাল। কিছুক্ষণ আগেই লালগড়ের জঙ্গলে বাঘের ছবি ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। ছবিটি দেখে এক রেঞ্জার
জেলার এক বনকর্তার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘স্যার, এটা কি রয়্যাল বেঙ্গলই?’’ বনকর্তার জবাব ছিল, ‘‘আর কী হবে! তবে এখন শুধু টাইগার বলতে হবে।’’
লালগড়ের নয়া হানাদার যে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার তা নিয়ে তেমন সংশয় ছিল না। তাও সব দিক খতিয়ে দেখে সে কথাই এ বার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানাল বন দফতর। বাঘটির চেহারার পূর্ণাঙ্গ বিবরণও দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে জানানো হয়েছে, জঙ্গলমহল যেহেতু জাতীয় পশুর চেনা বসত নয়, তাই তার নিরাপত্তা বজায় রেখে এবং মানুষের সঙ্গে সংঘাত এড়িয়ে বাঘটিকে বন্দি করতে নানা পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং হচ্ছে। রাজ্যের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিংহ বলেন, ‘‘এটা রুটিন বিজ্ঞপ্তি। বাঘটিকে ধরার সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
লালগড়ের মেলখেরিয়ার জঙ্গলে বাঘের ছবি লেন্সবন্দি হওয়ার অনেক আগে থেকেই অবশ্য ঝাড়গ্রামের জঙ্গল এলাকার গ্রামবাসীরা বাঘের পায়ের ছাপ দেখেছেন বলে দাবি করেছিলেন। যে জঙ্গল একসময় মাওবাদী-ঘাঁটি ছিল, যেখানে দলমার দাঁতালরা দাপিয়ে বেড়ায়, সেখানে বাঘের হদিসে হইচই পড়ে। বাঘ কোত্থেকে, কোন পথে এল তা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। সে ক্ষেত্রে সংশয় অবশ্য এখনও পুরোপুরি মেটেনি। একাধিক অনুমান থেকে গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, ওডিশার সিমলিপাল থেকে গরুমহিষানি- দুমারিয়া হয়ে সুবর্ণরেখা-কংসাবতী পেরিয়ে অথবা ঝাড়খণ্ডের পলামু থেকে পূর্ব সিংভূম-হাতিবাড়ি হয়ে কিংবা ঝাড়খণ্ডের দলমা থেকে বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোর হয়ে লালগড়ে এসেছে এই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।
যে পথেই আসুক না কেন এই বাঘবাবাজিকে ধরতে বন দফতর একেবারে নাকাল। শিয়রে পঞ্চায়েত ভোট থাকায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। পরিস্থিতি দেখে বাঘ ধরার নতুন দল গড়া হয়েছে। ভোটের কাজ থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছে বনকর্মীদের। জেলার এক বনকর্তা বলছিলেন, “বাঘটি সাবধানে ধরাই এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।”
বাঘ-বৃত্তান্ত
• নাম: রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার
• বিজ্ঞানসম্মত নাম: প্যানথেরা টাইগ্রিস টাইগ্রিস
• বয়স: ১২- ১৩ বছর
• ওজন: ২৩০- ২৪০ কেজি
• দৈর্ঘ্য: ৬-৭ ফুট
• গায়ের রং: হলুদ থেকে হালকা কমলা
• ডোরার রং: গাঢ় খয়েরি থেকে কালো
• এখন খাচ্ছে: বুনোশুয়োর
সূত্র: বন দফতর
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy